কলকাতা : একটানা লকডাউন আর কোভিড বিধির জেরে পড়াশোনায় যে ব্যাঘাত ঘটেছে, সে অনুমান আগেই করেছিলেন বিশেষজ্ঞরা। অনলাইনে পড়াশোনার সুযোগ কতজনের কাছে পৌঁছেছে, তা নিয়েও প্রশ্ন ছিল। আর স্কুল খোলার পরই ধরা পড়ল আসল ছবিটা। সাধারণ অঙ্কও করতে পারছে না অনেক পড়ুয়া। শুধু তাই নয়, অপেক্ষাকৃত নীচুক্লাসের পাঠ্যবই-এর অনুচ্ছেন পাঠ করতে (রিডিং পড়তে) পারছে অনেকে। সম্প্রতি ASER রিপোর্টে উঠে এসেছে এমন তথ্য। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এখনও যদি সঠিক পরিকল্পনা নেওয়া যায়, তাহলে শিক্ষা ব্যবস্থাকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব। প্রশাসনের তরফে কতটা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন।
শিক্ষাবিদরা বলছেন করোনা পরিস্থিতির জেরে ২-৩ বছর নয়। কার্যত এক দশক পিছিয়ে গিয়েছে শিক্ষা ব্যবস্থা। তাহলে অনলাইনে ক্লাসের যে পদ্ধতি চালু ছিল, তা কি যথেষ্ট নয়?
এই প্রসঙ্গে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে প্রথমে কী হবে জানতাম না। পরে বোঝা গিয়েছে। আশা করি একটু একটু করে সব এগোবে। তিনি মনে করেন, এমন অনেক কৌশল আছে, যা গ্রহণ করলে খুব তাড়াতাড়ি শিক্ষা ব্যবস্থা পুনরায় এগিয়ে যেতে পারবে। প্রত্যেকটা পড়ুয়ার দিকে নজর দিতে হবে বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
অধ্যাপক পার্থ প্রতিম রায় এই প্রসঙ্গে বলেন, পড়াশোনার ক্ষেত্রে আরও বেশি প্র্যাকটিস ফিরিয়ে আনতে হবে। শুধু পড়ুয়ারা নয়, সরকার, শিক্ষক, স্কুল সবাইকে আরও বেশি পরিশ্রম করতে হবে। পড়াশোনার প্রতি যাতে ভাল লাগা তৈরি হয়, সে দিকেও নজর দেওয়ার কথা বলছেন তিনি। প্রয়োজনের স্কুলের বাইরেও পড়াশোনার প্রতি আগ্রহত তৈরি করতে উদ্যোগ নিতে হবে বলে উল্লেখ করেছেন অধ্যাপক।
সর্বশেষ অ্যানুয়াল স্ট্যাটাস অব এডুকেশন রিপোর্টে (ASER 2022) দেখা যাচ্ছে, ২০১৮-র তুলনায় ২০২২ সালের ছাত্রছাত্রীদের পড়া এবং অঙ্ক করার ক্ষমতা কমেছে উল্লেখযোগ্যভাবে। রিডিং পড়ার ক্ষমতা কমেছে ৬.৭ শতাংশ, গণনার ক্ষমতা কমেছে ২.২ শতাংশ। দ্বিতীয় শ্রেণির পাঠ পড়তে পারে এমন তৃতীয় শ্রেণির শিশুদের সংখ্যা ২৩.৬ শতাংশ থেকে ২৭.২ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছিল। কিন্তু ২০২২ সালে তা নেমে এসেছে ২০.৫ শতাংশে।