কলকাতা: হাওড়ার উদয়নারায়ণপুরের বন্যা পরিস্থিতি ক্রমেই খারাপ হচ্ছে। জলমগ্ন বিস্তীর্ণ এলাকায়। ভেঙে পড়েছে বিদ্যুতের খুঁটি। সর্বশেষ পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ১০ টি বাঁধ ভেঙে গিয়েছে সেখানে। টানা বৃষ্টির জেরে উদয়নারায়ণপুরের বেশ কিছু এলাকা আগে থেকেই জলের তলায় ছিল। তার উপর নতুন করে জল এসে যাওয়ায় সমস্যা বেড়েছে।
এছাড়া দক্ষিণের আরও একাধিক জেলার অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। ঝাড়খণ্ড ব্যারেজ থেকে ৮০ হাজার কিউসেক জল ছাড়ার জন্য অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে। অজয় নদীতে জলস্তর বেড়ে গিয়েছে। জল ঢুকে গিয়েছে বীরভূমের নানুরে বিস্তীর্ণ এলাকায়। এছাড়া আসানসোল, বারাবনির অবস্থাও শোচনীয়। জলের তলায় ডুবে গিয়েছে গোটা এলাকা। বন্যাদুর্গতদের সাহায্যের জন্য সেনা নামানো হচ্ছে। পানাগড় থেকে জওয়ানদের মোতায়েন করা হচ্ছে আসানসোলের বন্যা পীড়িত এলাকায়।
সরকারি হিসেব অনুযায়ী, রাজ্যের প্রায় ২২ লাখেরও বেশি মানুষ বন্যায় প্রভাবিত হয়েছেন। দামোদর, দ্বারকেশ্বর, রূপনারায়ণ নদের জল বিপদসীমার উপর দিয়ে যাচ্ছে। নদী ফুঁসছে। আগামী দিনে আরও নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট জেলার জেলাশাসক ও অন্যান্য আধিকারিকদের সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতির উপর অবিরাম নজর রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জেলাশাসকদের। সরকারি হিসেব অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত ৪ লাখের বেশি মানুষকে বন্যা দুর্গত এলাকা থেকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। বিভিন্ন জেলা মিলিয়ে রাজ্যে প্রায় দেড় হাজার ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে।
এই মুহূর্তের রাজ্যের বন্য়া দুর্গত এলাকাগুলিতে আট কলাম সেনা কাজ করছে। রাজ্যের পরিস্থিতির উপর নজর রেখে সেনাবাহিনীকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। যখন যেখানে প্রয়োজন হবে, তখন সেখানে দুর্গতদের সাহায্য়ের জন্য সেনা নামানো হবে বলে জানানো হয়েছে। এছাড়া রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ২৪ টি দল বিভিন্ন জেলায় কাজ করছে। ২০০ টিরও বেশি স্পিড বোট নামানো হয়েছে দুর্গতদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য। এছাড়া জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ২৫ টি দলকে বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হচ্ছে। অন্যান্য রাজ্যগুলি থেকে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর আরও ৮ টি দলকে বাংলায় পাঠানো হচ্ছে।
এছাড়া বিভিন্ন জেলায় পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য মন্ত্রিসভার বিশেষ দল পাঠানো হচ্ছে। হাওড়ায় থাকছেন পুলক রায়, হুগলিতে বেচারাম মান্না, ফিরহাদ হাকিম ও কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, পশ্চিম বর্ধমানে থাকছেন মলয় ঘটন ও জাভেদ খান, পুরুলিয়ার দায়িত্বও দেওয়া হয়েছে মলয় ঘটকের উপর। একইরকমভাবে পূর্ব মেদিনীপুর ও পশ্চিম মেদিনীপুরের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে যথাক্রমে সৌমেন মহাপাত্র ও রাজেশ পাণ্ডেকে । ঝাড়গ্রামের বন্যা পরিস্থিতির তদারকি করবেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন : Duare Ration: ‘পুজোর সময় কাঁধে করে মাল বইবে কে?’ দুয়ারে রেশন প্রকল্পে ‘না’ রেশন ডিলার সংগঠনের