কলকাতা: বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে (Narendra Modi) সেভাবে আক্রমণের পথে হাঁটেননি বাবুল সুপ্রিয় (Babul Supriyo)। তাই মনে করা হয়েছিল, শিবির বদল করলেও হয়তো নমোর বিরুদ্ধে খুব একটা সরব হবেন না তিনি। কিন্তু দিল্লি থেকে ফিরেই সোজা প্রধানমন্ত্রীকে নিশানায় নিলেন তিনি। বাংলা থেকে ১৮ টি আসন পাওয়ার পরও কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় এ রাজ্যের কোনও পূর্ণ মন্ত্রী না থাকায় প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশেই তোপ দেগেছেন তিনি। বাবুলের দাবি, প্রধানমন্ত্রী বাঙালিদের (Bengali) ভরসা করেন না। প্রাক্তন সতীর্থর এই আক্রমণের পাল্টা দিয়েছে বিজেপিও। আসানসোলের সাংসদকে ‘বেইমান’ বলে কটাক্ষ করেছেন বারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং।
২০১৪ সালে ২, ২০১৯-এ ১৮। শেষ লোকসভা নির্বাচনেই পশ্চিমবঙ্গে বিরাট সাফল্য পেয়েছিল বিজেপি। তারপর কেন্দ্রে প্রতিমন্ত্রী হয়েছিলেন বাবুল সুপ্রিয় ও দেবশ্রী চৌধুরী। বছর দুয়েক কাটার পর মাস দুয়েক আগেই মন্ত্রিসভায় রদবদল করেন মোদী। ২-এর জায়গায় ৪ জন মন্ত্রী জায়গা পান কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায়। কিন্তু এ বারও কোনও বাঙালিকে পূর্ণ মন্ত্রীর সম্মান দেওয়া হয়নি। অন্যদিকে, বাবুল ও দেবশ্রীকে অপসারণ করা হয় মন্ত্রিসভা থেকে। বিষয়টা যে বাবুল সুপ্রিয় খুব একটা ভালভাবে নেননি, সেটা তাঁর এ দিনের বক্তব্যেই দিনের আলোর মতো পরিষ্কার।
সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে আলাপচারিতা চলাকালীন বাবুল বলেন, “৭-৮ বছরের দিল্লি যাত্রায় কোথাও গিয়ে আমার মনে হয়েছে প্রধানমন্ত্রী বাঙালিদের উপর ভরসা করছেন না। ৭ বছরে কোনও সাংসদকে পূর্ণ মন্ত্রী তো ছেড়েই দিন, কোনও মন্ত্রকের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রীও করা হয়নি। শুধু আমার কথা বলছি না। আলুওয়ালিয়াজি অনেক বর্ষীয়ান মানুষ, কংগ্রেস থেকে এসেছেন। তাঁকেও কোনও স্বাধীন দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। কোথাও মনে হচ্ছে যে বাংলা থেকে যাঁরা নির্বাচিত হচ্ছেন, তাঁদের জন্য কোথাও একটা অসামঞ্জস্য আছে।”
বাবুল এ ক্ষেত্রে নিজের পূর্ণ মন্ত্রিত্ব না পাওয়া, বা মন্ত্রিত্ব থেকে বাদ পড়া নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি। তবে ওয়াকিবহাল মহলের মতে, ঘুরপথে নিজের চাপা ক্ষোভই এ দিন এই বক্তব্যের মাধ্যমে প্রকাশ্যে এনেছেন বাবুল সুপ্রিয়। যা নিয়ে পাল্টা দু-কথা শোনাতে ছাড়েনি বিজেপিও। অর্জুন সিং জবাবে বলেন, “যাঁরা বেইমান, তাঁরা বেইমানি করার জন্য নানা ধরনের অজুহাত খুঁজে বেড়ায়। তাঁদের মধ্যে একজন বাবুল সুপ্রিয়। ওঁর লজ্জাও নেই। যেদিন থেকে উনি রাজনীতিতে এসেছেন, পরের দিন থেকেই উনি মন্ত্রী ছিলেন। ৭ বছর মন্ত্রী থাকার পর প্রধানমন্ত্রীর মতো বিশ্ববিখ্যাত মানুষকে এরকম কথা বলছেন। এটা একজন বেইমান-ই বলতে পারে। ভদ্র মানুষ বলতে পারে না।”