কলকাতা: মাত্র ছয় মাসেই বগটুই মামলার নিষ্পত্তি। প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের এজলাসে রাজ্যের বড়সড় স্বস্তি। সোমবার এই মামলার শুনানি ছিল। এদিন রাজ্যের তরফে আদালতে রিপোর্ট পেশ করা হয়। রাজ্যের রিপোর্ট দেখে সন্তুষ্ট হয় প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। রাজ্যের তরফে রিপোর্টে জানানো হয়, কোনও নতুন অভিযোগ নেই। ঘর ছাড়ারা ফিরে এসেছেন। ভাঙা ঘর তৈরি হয়েছে। গ্রামে এখনও পুলিশ পিকেটিং রয়েছে। সোমবার রাজ্যের তরফে এই রিপোর্ট জমা পড়ে আদালতে। এর পরেই নিষ্পত্তি হয়ে যায় মামলা। বগটুই সংক্রান্ত আর কোনও মামলাই বিচারাধীন থাকল না।
বগটুই কাণ্ডে তদন্তের জাল অনেকটাই গুটিয়ে এনেছে সিবিআই। গত মাসেই এই ঘটনায় আরও সাত জনকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। ঘটনার সঙ্গে ধৃতদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যোগ থাকার সূত্র খুঁজে পেয়েছেন তদন্তকারীরা।
বগটুইকাণ্ডের প্রেক্ষাপট
২১ মার্চ মধ্যরাত। রামপুরহাটের একটা প্রত্যন্ত গ্রাম বগটুই রাজ্য রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠে। মধ্যরাতের নৃশংস গণহত্যা রীতিমতো আলোড়ন ফেলে দেয়। ২১ মার্চ সন্ধ্যা বড়শাল গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ভাদু শেখকে বোমা মেরে খুনের অভিযোগ ওঠে। তারপর মাঝরাতে ঘটে সেই ঘটনা।
অভিযোগ, সেই খুনের বদলা নিতে বগটুই গ্রামে ১০ টি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। পরদিন সকালে আটজনের পোড়া দেহ উদ্ধার করা হয়। দিন কয়েক পর রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আরও এক মহিলার মৃত্যু হয়। ঘটনার মূল চক্রী হিসাবে উঠে আসে আনারুল শেখের নাম উঠে আসে। পুলিশ বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করলেও অধরা ছিলেন আনারুল। ঘটনাস্থলে স্বজনহারাদের সঙ্গে দেখা করতে যান খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেদিন তাঁর পাশে ছিলেন অনুব্রত মণ্ডলও। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই গ্রেফতার করা হয় আনারুলকে।
এরপর এই মামলা ওঠে আদালতে। পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ প্রথম থেকে তুলছিলেন স্বজনহারারা। এরপর আদালতের নির্দেশে এই ঘটনার তদন্তভার যায় সিবিআই-এর হাতে। তদন্তকারীরা আসানসোলে অস্থায়ী ক্যাম্প তৈরি করে তদন্ত শুরু করে। চলে ধরপাকড়। রাজ্যের তরফে এই মামলায় সোমবার একটি রিপোর্ট জমা করা হয়। তাতে বগটুইয়ের বর্তমান পরিস্থিতি ও রাজ্যের তরফে কী কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, তা রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়। তাতে সন্তুষ্ট আদালত।