কলকাতা: চলতি বছরের বইমেলায় ঠাঁই পায়নি বাংলাদেশ। সেদেশের অন্দরে তৈরি হওয়া অচলাবস্থার কথা মাথায় রেখেই বাংলাদেশকে চলতি বছরের বইমেলায় জায়গা দেয়নি বুক সেলার্স গিল্ড। গিল্ডের সভাপতি ত্রিদিবকুমার চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, বইমেলায় অন্য স্টলগুলির নিরাপত্তার কথা ভেবেই বাদ দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশকে।
এপার বাংলার এমন সিদ্ধান্তে রীতিমতো চটে গিয়েছে ওপার বাংলা। শুধু চটেননি একজনই। তসলিমা নাসরিন। তাঁর দাবি, ‘এমন বন্ধু কিন্তু থাকার চেয়ে না থাকাই ভাল।’ এদিন নিজের সমাজমাধ্যমে একটি পোস্ট করে তিনি লেখেন, ‘এবারের কলকাতা বইমেলায় ‘বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন’ নেই। বাংলাদেশের বইমেলায় কোনওদিন কি ‘পশ্চিমবঙ্গ প্যাভিলিয়ন’ থাকে? থাকে না, কারণ থাকাটা নিষিদ্ধ। পশ্চিমবঙ্গ থেকে প্রকাশিত কোনও বইও বাংলাদেশের বইমেলায় থাকে না।’
তাঁর আরও দাবি, ‘পশ্চিমবঙ্গ বাংলাদেশের মেলায় ঠাঁই না পেলেও, তারা কিন্তু বাংলাদেশের প্রতি সর্বক্ষণ উদারতা দেখিয়েছে। কিন্তু এত উদারতা সত্ত্বেও, বাংলাদেশ কিছুই শেখেনি। তাই এমন থাকার চেয়ে না থাকা ভাল।’
উল্লেখ্য, ১৯৯৬ সাল থেকে কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলায় স্টল তৈরির জায়গা পেয়েছে বাংলাদেশ। এককালে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও খোদ ঘুরে গিয়েছিলেন এই বইমেলা থেকে। কিন্তু সেই ২৮ বছরের সম্পর্কে ছেদ পড়ল চলতি বছর।
আগস্টের গণঅভ্যুত্থান ও তারপর পালাবদল। আর সেই সূত্র ধরেই বদলে গেল ভারত-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সমীকরণ। ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর থেকেই অস্থিরতা তৈরি হয়েছে সে দেশে। প্রভাব পড়েছে এ দেশের সীমান্তেও। বেড়েছে জঙ্গি উপদ্রব। বেড়েছে অনুপ্রবেশ। বাংলাকেই ট্রানজিট রুট করে ভারতজুড়ে জাল বিস্তার করতে মরিয়া হয়েছে মৌলবাদী জঙ্গি সংগঠনগুলি। আর এমন সময় বইমেলায় বাংলাদেশকে স্টল তৈরির অনুমোদন দেওয়া কোনও মতেই সুরক্ষিত মনে করছে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার।