কলকাতা: কোনও বার ফোন নয়, একটা আস্ত ৬ ইঞ্চির অ্যানড্রয়েড মোবাইল। সেটা কীভাবে ঢোকানো গেল পায়ুদ্বার দিয়ে! পায়ুদ্বারের ভিতর থেকে যখন মোবাইলকে বার করলেন চিকিৎসকরা, গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠল তাঁদেরই। চক্ষু চড়কগাছ কারা আধিকারিকদেরই। বারুইপুর সংশোধনাগারে মোবাইল নিয়ে প্রবেশ করেছিলেন বছর তিরিশের আসলাম শেখ। সকলের নজর এড়াতে তিনি মোবাইল পায়ুদ্বার দিয়ে ঢুকিয়ে দেন। কিন্তু তারপর যা হওয়ায় তাই! যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকেন শেখ আসলাম। সংশোধনগারের মধ্যেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। প্রথমে বিষয়টা স্বীকার করছিলেন না তিনি। যখন করলেন, কারা আধিকারিকরা দ্রুত তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করান। হাসপাতালের তাঁর অস্ত্রোপচার হয়। অপারেশন করে বার করা হয় মোবাইল ফোনটি। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, কোমরের কাছে থাকা দুই বড় হাড়ের কাছে আটকে ছিল এই মোবাইলটি।একটি বড় মাপের স্মার্ট অ্যানড্রয়েড ফোন। অপারেশনের পর মঙ্গলবারই ফের সংশোধনগারে ফেরেন আসলাম। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তাঁর অবস্থা বর্তমানে স্থিতিশীল। এই ঘটনায় আসলাম শেখের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। এবং ফোনটি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
বারুইপুর আদালত থেকে রবিবার দুপুরে বারুইপুর সংশোধনাগারে যান বছর তিরিশের আসলাম শেখ। জেলে প্রবেশের সময়ে মোবাইল লুকিয়ে রেখেছিলেন পায়ুদ্বার বা মলদ্বারে। জেলের ভিতরে প্রবেশের আগে একাধিক জায়গায় পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয় সব বন্দিকেই। সেই পরীক্ষাতেই আটকে যান আসলাম।
জেলে গেটে মোবাইল-সহ অন্য সামগ্রী পরীক্ষা হতেই ভয় পেয়ে যান আসলাম। মোবাইল লোকাতে আরও নড়েচড়ে বসেন আসলাম। এরপরে মোবাইল পরীক্ষার যন্ত্র-এ ধরা পড়ে পেটের কাছাকাছির কোনও অংশে কিছু একটা আটকে রয়েছে। যন্ত্রটি আওয়াজ করতে থাকে। তারপরে আসলামকে জেরা করতেই স্বীকার করে নেন, পায়ুদ্বারে মোবাইল লুকিয়ে রাখার কথা।
একাধিক কলা খাইয়ে বের করা চেষ্টা করা হয়। কিন্তু সে প্রয়াস ব্যর্থ হয়। এরপরে বারুইপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতাল নিয়ে যাওয়া হয় আসলামকে। কিন্তু সেখানেও চিকিৎসকরা চেষ্টা করেও মোবাইল বের করতে পারেননি।
তারপরেই মোবাইল লুকিয়ে রাখা ওই বন্দিকে স্থানান্তর করা হয়। নিয়ে আসা হয় এসএসকেএম হাসপাতালে। অস্ত্রোপচার করা হয়। কোমরের দুটো বড় হাড়ের মাঝে দিয়ে আটকে ছিল মোবাইলটি। কিন্তু চিকিৎসকরা ঠিক একটা জায়গাতেই আটকে যাচ্ছেন। পায়ুদ্বারের ওতো স্বল্প পরিমাণ জায়গা দিয়ে কীভাবে মোবাইল ঢুকিয়েছিলেন ওই যুবক। আপাতত তিনি স্বীকার করেছেন, টয়লেট সিটে বসার মতন করে বসে পিছন থেকে সজোরে চেপে উলম্বভাবে মোবাইল ঢুকিয়েছিলেন আসলাম। ব্যথা লেগেছিল তখনই, কিন্তু তিনি ভেবেছিলেন পরেরদিন পায়খানার সঙ্গে মোবাইল বেরিয়ে যাবে, আর তিনি সেটা সংশোধনাগারে বসে ব্যবহারও করতে পারবেন! আসলামের কথায় রীতিমতো চক্ষু ছানাবড়া অবস্থা কারা আধিকারিকদেরও। বর্তমানে আসলামের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল। তাঁকে হাসপাতাল থেকে ফের বারুইপুর সংশোধনাগারে পাঠানো হয়েছে।