কলকাতা: বেশ কিছু দিন ধরেই একটা পচা গন্ধ নাকে আসছিল বাসিন্দাদের। কিন্তু বিষয়টা সেভাবে গ্রাহ্য করেননি স্থানীয় বাসিন্দারা। গত দু’দিনে গন্ধটা আরও বেশি করে প্রকট হয়ে ওঠে। গন্ধের উৎস সন্ধানে লেগে পড়েন তাঁরা। কিছুটা আঁচ করতে পেরেই মহিলার ঘরের কাছে গিয়েছিলেন তাঁরা। পচা গন্ধে রীতিমতো অসুস্থ হয়ে পড়েন তাঁরা। আবাসনের দোতলার ঘর থেকে তখন চামড়া পচার ভয়ানক গন্ধ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। তখনই ভয়ঙ্কর ঘটনা সামনে আসে। বেহালা রাজা রামমোহন রায় রোডে মারলিন গ্রোভ আবাসনের দোতলার বন্ধ ঘর থেকে উদ্ধার হল এক মহিলার পচা গলা দেহ। মৃতের নাম কমলিকা দাশগুপ্ত (৪৮)।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কমলিকা ওই আবাসনে গত দশ-বারো বছর ধরে তাঁর বাবার সঙ্গে থাকতেন। তাঁর বাবা সুজিত কুমার দাশগুপ্ত ইন্ডিয়ান অয়েলে কর্মরত ছিলেন। বছর চারেক আগে কমলিকার বাবার মৃত্যু হয়। তারপর থেকে তিনি একাই থাকতেন এই আবাসনে। আবাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, তিনি ঘর থেকে বেশি বের হতেন না। আবাসনের অন্যান্য বাসিন্দাদের সঙ্গেও খুব একটা মেলামেশা করতেন না। ফলে তাঁকে গত কয়েকদিন ধরে ঘরের বাইরে দেখতে না পেয়ে সন্দেহ হয়নি বাকি আবাসিকদের। কিন্তু ঘর থেকে যখন পচা গন্ধ বের হয়, ডাকাডাকি করেও যখন কোনও সাড়া পাওয়া যায় না, তখনই তাঁরা বিপদ আঁচ করতে পেরেছিলেন।
পুলিশ রবিবার ঘরের দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকে দেখে, খাটের ওপর পড়ে রয়েছে কমলিকার শরীরটা। দেহে পচন ধরেছিল। দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। কমলিকার শারীরিক কোনও অসুস্থতা ছিল কিনা, তা জানা যায়নি। প্রাথমিকভাবে পুলিশ মনে করছে, অসুস্থতার কারণেই মৃত্যু হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলেই মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট জানা যাবে।
আবাসনের এক বাসিন্দা বলেন, “আমরা বুঝতে পারলাম গন্ধটা ওঁর ঘর থেকেই বের হচ্ছিল। তখন পিছন থেকে এসে দেখি বিছানার ওপর পড়ে রয়েছে দেহটা। তারপরই পুলিশকে খবর দিই।”