কলকাতা: কৃষ্ণনগরের জনসভা থেকে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন, ২০১৯ নিয়ে ফের একবার কেন্দ্রকে বিঁধেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষদের আশ্বস্ত করে বলেছেন, “আপনারা এখানকার নাগরিক। পুরোপুরি নাগরিক… আপনাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নিতে দেব না। আমি জীবন দিতে তৈরি। নাগরিকত্ব কাড়তে দেব না।” আর এই নিয়েই এবার মমতাকে পাল্টা দিলেন বঙ্গ বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar)। বললেন, ” মুখ্যমন্ত্রীর সেই অধিকার নেই। উনি আইন জানেন না। কিন্তু ভারতীয় সংবিধানের অধিকার কী… একটু জানতে হবে তো। নাগরিকত্ব রাজ্যের অধিকারের মধ্যে পড়ে না। নাগরিকত্ব পড়ে কেন্দ্রীয় সরকারের এক্তিয়ারের মধ্যে। উনি কীভাবে বলছেন করতে দেব না? উনি কি জমিদার নাকি রাজ্যের?”
উল্লেখ্য, রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে ফের জোরালো চর্চা শুরু হয়েছে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন, ২০১৯ নিয়ে। বিশেষ করে সম্প্রতি পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান থেকে গুজরাটে আসা অমুসলিমদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়ার যে সিদ্ধান্ত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক নিয়েছে, তারপর সেই জল্পনায় আরও ঘৃতাহুতি পড়েছে। হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ, জৈন, পারসি ও খ্রিস্টানদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যদিও এই নাগরিকত্ব ২০২১ সালের সংশোধনী আইন অনুযায়ী নয়, বরং ১৯৫৫ সালের ভারতীয় নাগরিকত্ব আইন অনুযায়ী এই প্রক্রিয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। কিন্তু কেন্দ্রের এই ঘোষণার পর থেকেই জোর চর্চা শুরু হয়েছে এই রাজ্যেও।
রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছিলেন, “এটা তো সিএএ-র পার্ট। সিএএ তো প্রণয়ন শুরু হয়ে গেল। ভারতের অঙ্গ পশ্চিমবঙ্গও। পশ্চিমবঙ্গেও হয়ে যাবে। সিএএ আইন তো দুটি সদনেই পাশ হয়ে গিয়েছে। এটা আমরা অপেক্ষা করছিলাম।” মতুয়া সমাজের অন্যতম প্রতিনিধি তথা নরেন্দ্র মোদীর ক্যাবিনেটের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য শান্তনু ঠাকুরেরও বক্তব্য ছিল বলেছিলেন, “আমি মতুয়াদের কাছে যে প্রতিশ্রুতি করেছিলাম, সেটি যদি সম্পূর্ণভাবে গুজরাটে শুরু হয়… আমি মনে করি তার প্রথম ধাপ শুরু হল।” সঙ্গে তিনি এও বলেছিলেন, “যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো যদি রাজ্য সরকার সমর্থন না করে, তাহলে সেটা করা সম্ভব হয় না। যেটা পশ্চিমবঙ্গের জন্য নেগেটিভ। কারণ, পশ্চিমবঙ্গ সরকার ও মুখ্যমন্ত্রী এটিকে সমর্থন করেননি বলে রাজ্যে এটি লাঘু করা সম্ভব হচ্ছে না।”