কলকাতা: মিসড কল দিয়ে যাঁরা বিজেপির (Bengal BJP) সদস্য হয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে এখন কতজন দলের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত, বঙ্গ নেতাদের থেকে এবার সেই হিসেব জানতে চাইছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। যাঁরা অতীতে মিসড কলে সদস্য হয়েছিলেন, লোকসভা ভোটের আগে তাঁদের মাঠে নামাতে চাইছে বিজেপির দিল্লি নেতৃত্ব। আর এতেই ফ্যাসাদে পড়ছে বঙ্গ বিজেপি। কেন? সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, মুরলিধর সেন লেনের কাছে সেই মিসড কল দেওয়া সদস্যদের সঠিক হিসেবই নাকি নেই। একুশের বিধানসভা ভোটের আগে বঙ্গ বিজেপির তরফে দাবি করা হয়েছিল, এ রাজ্যে মিসড কল দেওয়া সদস্যের সংখ্যা প্রায় ১ কোটি ছুঁই ছুঁই। কিন্তু বিজেপি সূত্রে খবর, এদের অধিকাংশকেই আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
প্রথমত, সদস্য হওয়ার পর অনেকেই দলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার প্রয়োজন বোধ করেননি। দ্বিতীয়ত, মিসড কল দেওয়া বহু সদস্যের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখেননি রাজ্যের নেতারাও। তৃতীয়ত, অনেকেই আবার শাসক দলে যোগ দিয়েছেন। চতুর্থত, বহু সদস্য আবার নিষ্ক্রিয় হয়ে রয়েছেন। পঞ্চমত, কেউ কেউ আবার বদলে ফেলেছেন নিজেদের মোবাইল নম্বরই। আর এই পরিস্থিতিতে পঞ্চায়েত ভোটের আগে ফের মিসড কল দিয়ে সদস্য করার কাজে মাঠে নেমে পড়েছে বঙ্গ বিজেপি। নতুন করে দলের ফেসবুক পেজে সদস্য হওয়ার আহ্বান জানিয়ে দশ অঙ্কের মিসড কল নম্বর প্রকাশ করা হয়েছে।
পঞ্চায়েত ভোটের আগে বঙ্গ বিজেপির অবস্থা নিয়ে বেশ কিছু প্রশ্ন চিহ্ন ইতিমধ্যেই রয়েছে। সম্প্রতি এক বৈঠকে বিজেপি নেতৃত্বের মুখে শোনা গিয়েছে, সভায় লোকজন আসছে। কিন্তু সেই সভায় আসা কর্মীরা যখন বুথে ফিরে যাচ্ছেন, তখন তাঁরা সেভাবে সক্রিয় থাকছেন না। এর কারণ হিসেবে অতীতে ভোট পরবর্তী হিংসার দগদগে ক্ষতর কথাই তুলে ধরছে বিজেপি নেতৃত্বের একাংশ। এমন অবস্থায় দলের অন্দরেই একাংশ প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে যে দলে লোকবলের এই দুর্দশার হাল ফেরাতেই কি ফের নতুন করে মিসড কল দিয়ে সদস্য হওয়ার আহ্বান জানানো হচ্ছে রাজ্য বিজেপির তরফে।
দলের একটি সূত্র বলছে, মোবাইল ফোনে মিসড কল দিয়ে গোটা দেশেই সদস্য হওয়ার ডাক যখন দেওয়া হয়েছিল কেন্দ্রীয় বিজেপির তরফে, তখন বঙ্গ নেতারাও ঘটা করে সদস্য করার কাজ শুরু করেছিলেন। রাজ্য নেতারা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে দাবি করেছিলেন, বাংলায় মিসড কল দেওয়া সদস্য সংখ্যা প্রায় ১ কোটির কাছাকাছি। কিন্তু তাদের বড় অংশেরই হদিশ পেতে এখন হিমিশিম খেতে হচ্ছে মুরলি ধর সেন লেনের কর্তাদের। ওই মিসড কল দেওয়া সদস্যদের মধ্যে কতজন সক্রিয়ভাবে দলের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন সেই তথ্যটাও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে দিতে হবে।
যদিও সেই সদস্যদের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না এমন কিছু মানতে নারাজ বিজেপির রাজ্য মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, “খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না, এটি ভুল। বিজেপি তার সমস্ত সাপোর্ট বেসকে এক জায়গায় আনার জন্য ফোনে মিসড কল দিয়ে সদস্য করেছিল। সবাই তো মিটিং মিছিলে যান না। কিন্তু তাও তাঁরা নিজেদের চেনা পরিচিতদের কাছে, কর্মক্ষেত্রে, ব্যবসা ক্ষেত্রে পার্টির কথাই প্রচার করেন। বিজেপির ভোট বাড়ছে। বিজেপি এগিয়ে চলেছে।”