প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ: রাজ্যসভায় বাংলার প্রতিনিধি হতে মরিয়া পাটনার শ্যামনন্দন প্রসাদ। ভোটে তিনি লড়েই ছাড়বেন। বৃহস্পতিবার মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিনেও তাঁকে হাজির থাকতে দেখা গেল বিধানসভা ভবনে। সমস্ত কাগজপত্র নিয়ে হাজির। এদিকে এ ভাবে যে মনোনয়ন জমা দেওয়া যায় না, তা তাঁকে কে বোঝায়! মনোনয়ন পত্র ফিরিয়ে দেওয়ায় তাই খানিক উষ্মাও শোনা গেল শ্যামনন্দনের গলায়। প্রশ্নও তুললেন, ঢাক ঢোল পিটিয়ে, টাকা খরচ করে আসতে পারেননি বলেই কি তাঁকে মনোনয়ন জমা দিতে দেওয়া হল না?
কে এই শ্যামনন্দন প্রসাদ? গত শুক্রবার হঠাৎই বিধানসভা ভবনের সামনে এক ব্যক্তিকে ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়। কথা বলে জানা যায়, তিনি বাংলা থেকে রাজ্যসভার প্রার্থী হতে চান। তারই বিস্তারিত জানতে বিধানসভায় এসেছেন। এর পর গর গর করে বলে যান, কী তাঁর ‘রাজনৈতিক অতীত’। বিহারের লোক তিনি। কর্মজীবনে বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাঙ্কে চাকরি করেছেন তিনি। সঙ্গে সমাজসেবা মূলক কাজও করেন। সেই আবহেই ২০১৪ সালে লোকসভার নির্বাচনে পাটনা থেকে ভোটে দাঁড়ান শ্যামনন্দন। হেরে যান সে লড়াইয়ে।
তবে হার মানতে নারাজ তিনি। পরের বছর বিহারে ছিল বিধানসভার ভোট। সেখানেও প্রার্থী হন তিনি। সেই ভোটেও হেরে যান শ্যামনন্দন। এরপর ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে আর লড়ার জন্য মনোনয়ন পত্র জমা দেননি। তবে পরবর্তীকালে বিহারের রাজ্যসভার ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন সেই রাজ্যেরই শ্যামনন্দন। নির্দল হয়ে ভোটে লড়েছিলেন। তবে ভোট পাননি একটিও। এবার তিনি চান বাংলা থেকে রাজনীতির নয়া ইনিংস শুরু করতে। রাজ্যসভার প্রার্থী হতে চান তিনি।
সেইমতোই বৃহস্পতিবার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে বিধানসভা ভবনে হাজির হন শ্যামনন্দন প্রসাদ। কিন্তু তাঁর সঙ্গে প্রয়োজনীয় দশজন বিধায়ক ছিলেন না। যাঁদের স্বাক্ষর দরকার রাজ্যসভার নির্বাচন লড়তে গেলে। ফলে এদিন তাঁকে শূন্য হাতেই ফিরতে হয়। ফেরত পাঠিয়ে দেন রাজ্যসভা নির্বাচনের রির্টানিং অফিসার সুপ্রতিম ভট্টাচার্য। যিনি আবার বিধানসভার সচিবও। যদিও এ ঘটনাতে মোটেই ভাল ভাবে নিচ্ছেন না শ্যামনন্দন। তাঁর কথায়, অনেক লোক নিয়ে, ঢাকঢোল পিটিয়ে, টাকা খরচ করে আসতে পারেননি বলেই কি তাঁকে মনোনয়ন জমা দিতে দেওয়া হল না?
যদিও বিধানসভা কর্তৃপক্ষ-এর বক্তব্য, মনোনয়ন জমা দেওয়ার একটা নিয়ম রয়েছে। তা মানতেই হবে। শ্যামনন্দন যদি সেই নিয়ম মানেন, অবশ্যই মনোনয়ন জমা নেওয়া হবে। কিন্তু মনোনয়ন জমা দেওয়ার নির্ধারিত সময়ও যে পার হয়ে গেল। এবার কি তবে আদালতে যাবেন শ্যামনন্দন প্রসাদ? প্রশ্ন শুনেই পাল্টা বললেন, “নির্বাচনে লড়াই করার অধিকার তো সবার আছে। সেখানে কেন এত কিছু নিয়ম থাকবে বলুন তো?”
প্রসঙ্গত, রাজ্যসভায় তৃণমূলের সাংসদ ছিলেন দীনেশ ত্রিবেদী। তিনি দল ও পদ দুই-ই ছেড়েছেন। তাঁর খালি করে যাওয়া শূন্য সাংসদ পদেই আগামী ৯ অগস্ট ভোটগ্রহণ হবে। ২৯ জুলাই বৃহস্পতিবার ছিল তারই মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার দিন। আরও পড়ুন: তিনবারের নোটিসেও সিবিআই দফতরে গরহাজির বিনয় মিশ্রের মা-বাবা, জারি হতে পারে গ্রেফতারি পরোয়ানা