কলকাতা: উৎসশ্রী (Utshasree) পোর্টালের মাধ্যমে বদলির ‘রেকমেন্ডেশন’ নিয়েও স্কুলে যোগ দিতে পারছেন না অনেকে। এ নিয়ে একাধিক অভিযোগও উঠেছে। এবার এই সমস্যার সমাধানে ডিআইদের ক্ষমতা বৃদ্ধি করল বিকাশ ভবন।
উৎসশ্রীর (Bikash Bhawan) সুপারিশ থাকার পরেও যদি কোনও শিক্ষক স্কুলে যোগ দিতে না পারেন, তাহলে সেই স্কুলের প্রধান শিক্ষককে কারণ দেখিয়ে প্রার্থীকে চিঠি দিতে হবে। এরপর প্রার্থী অন্য স্কুলের জন্য আবেদন করতে পারবেন। যদিও শিক্ষক সংগঠনের বক্তব্য, ডিআইদের ক্ষমতা বৃদ্ধি করলে দুর্নীতি আরও বাড়বে।
দূরের স্কুলে বদলি হলে অনেক ক্ষেত্রেই নানা রকম সমস্যায় পড়তে হয় শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। তাঁদের কথা চিন্তা করেই ‘উৎসশ্রী’ চালু করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু এই পোর্টাল চালুর মাস ঘুরতে না ঘুরতেই যে হারে বদলির আবেদন আসতে শুরু করে, তাতে রীতিমত কালঘাম ছোটার অবস্থা হয় শিক্ষা দফতরের। এ অবধি তাও সামলানো যাচ্ছিল।
কিন্তু এরপর একের পর এক বদলি নিয়ে অভিযোগ উঠতে শুরু করে। কলকাতার একাধিক শিক্ষক সংগঠন এই উৎসশ্রীতে আবেদনের মাধ্যমে বদলির স্বচ্ছতা নিয়ে একাধিক বার সরব হয়েছে। সংগঠনের সদস্যদের অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উৎসশ্রী পোর্টাল চালু করার উদ্দেশ্য, শিক্ষকরা যাতে বাড়ির কাছে বদলির সুযোগ পান। কিন্তু তার বদলে উৎসশ্রীর মাধ্যমে দুর্নীতি হচ্ছে বলে অভিযোগ ওঠে। সম্প্রতি এ নিয়ে সরব হয়ে পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি পদত্যাগের কথাও ঘোষণা করেন।
একই সঙ্গে এই পোর্টালের নিয়ম কানুন নিয়েও একাধিক গলদের অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে শিক্ষা দফতরে গিয়ে ডেপুটেশনও দিয়েছেন একাধিক স্কুলের শিক্ষক। এ ক্ষেত্রে বেশ কিছু নিয়ম বদলের আর্জিও জানান তাঁরা। তাঁদের দাবি, এই প্রকল্পে পাঁচ বছরের যে ‘লকিং পিরিয়ড’-এর কথা বলা হয়েছে, তা তুলে নিতে হবে।
একই সঙ্গে শিক্ষকদের একাংশ দাবি করেন, প্রধান শিক্ষক হতে গেলে অন্তত ১০ বছরের অভিজ্ঞতার প্রয়োজন হয়। অথচ এই প্রকল্পে প্রধান শিক্ষক বা শিক্ষিকার অভিজ্ঞতা কোনও দাম পাচ্ছে না। তাঁদের কোনও সুবিধা দেওয়া হচ্ছে না। প্রধান শিক্ষকদের ক্ষেত্রে লকিং পিরিয়ড রাখা যাবে না বলেও দাবি ওঠে। এই বদলগুলি না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের পথে হাঁটার কথাও বলেন অভিযোগকারীরা।
এসবের মধ্যেই স্কুল শিক্ষা দফতরের তরফে বিজ্ঞপ্তি জারি করে বলা হল, উৎসশ্রীর সুপারিশ সত্ত্বেও কারও কাজে যোগ দিতে সমস্যা হলে তা সমাধানে এবার বিশেষ ভূমিকা নেবেন ডিআইরা।
উৎসশ্রীতে আবেদন পদ্ধতি…
‘উৎসশ্রী’র পোর্টালে গিয়ে আবেদন করতে হবে।নিজের এমপ্লয়ি আইডি ও প্যান কার্ড নম্বর জমা দিতে হবে পোর্টালে। তারপর মোবাইল নম্বরে ও ই-মেলে চলে আসবে একটি ওটিপি। এই ওটিপি নিৰ্দিষ্ট জায়গায় বসিয়ে লগ ইন করতে হবে। এরপর ক্লিক করতে হবে self initiated transfer অপশনে। কোন জেলার স্কুলে আবেদন করতে চান, তা জানাতে হবে। অর্থাৎ নিজে যে জেলার বাসিন্দা সেখানে, নাকি অন্য জেলায় তা জানাতে হবে। সবথেকে বেশি তিনটি স্কুল পছন্দ করতে পারবেন তাঁরা। যে সব স্কুলে শূন্যপদ আছে কেবলমাত্র সেখানেই আবেদন করা যাবে।