কলকাতা: ভোট প্রচারের শেষ দিন ভবানীপুরে কেন গন্ডগোল, সে সংক্রান্ত বিস্তারিত রিপোর্ট দিল কলকাতা পুলিশ। নির্বাচন কমিশনকে দেওয়া সেই রিপোর্টে কলকাতা পুলিশের তরফে দাবি করা হয়েছে, ‘ডোর টু ডোর’ প্রচারের কোনও অনুমতি নেয়নি বিজেপি। তাই বাধা দেওয়া হয়। তা থেকেই পরিস্থিতি ঘোরাল হয়ে ওঠে। আপাতত এই রিপোর্ট পাঠানো হচ্ছে দিল্লিতে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের দফতরে।
ভোটের প্রচার ঘিরে সোমবার উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ভবানীপুর বিধানসভা এলাকা। অর্জুন সিং, দিলীপ ঘোষদের বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়। এই ঘটনা মুহূর্তে তুলকালাম চেহারা নেয় যদুবাবুর বাজার চত্বর এলাকায়। সেখানে বিজেপির একটি পথসভা ছিল। প্রার্থী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়ালের হয়ে সেখানে প্রচারে আসছিলেন দিলীপ ঘোষ। তাঁর পথ আটকানো হয় বলে অভিযোগ ওঠে। পরিস্থিতি একটাই জটিল হয় যে, দিলীপ ঘোষের নিরাপত্তারক্ষীকে পিস্তল উঁচিয়ে বিজেপি সাংসদকে ভিড় থেকে বের করে আনতে হয়।
এ নিয়ে নির্বাচন কমিশনে যায় বিজেপি। যদিও তার অনেক আগেই এই ঘটনার সময় কেন্দ্রীয় বাহিনী কোথায় ছিল, পুলিশের ভূমিকাই বা কী ছিল, কেন এই ঝামেলা হল তার বিস্তারিত জানতে চেয়ে রাজ্যের কাছে রিপোর্ট তলব করে কমিশন। বিকেল চারটের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়। সেই মতোই রিপোর্ট তৈরি করে কলকাতা পুলিশও।
সূত্রের খবর, কলকাতা পুলিশের তরফে রিপোর্টে জানানো হয়, বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিজেপি প্রচার করছিল। অথচ সেই প্রচারের কোনও অনুমতি নেওয়া হয়নি বিজেপির তরফ থেকে। ফলে অনুমতি সংক্রান্ত বিষয়ে যখন বিজেপি নেতৃত্বের কাছে জানতে চাওয়া হয়, সেখান থেকেই গন্ডগোলের সূত্রপাত। এরপর যেহেতু সাধারণ মানুষ বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন, তার জেরেই এই ঘটনা ঘটে বলে দাবি করে পুলিশ। আপাতত এই রিপোর্ট দিল্লি যাচ্ছে। পরবর্তী কালে এ নিয়ে যদি কোনও পদক্ষেপ করার হয়, কেন্দ্রীয় স্তর থেকে রাজ্য নির্বাচন কমিশনে তা জানানো হবে।
বিজেপির দাবি, আজ ভবানীপুরে যে সময় দিলীপ-অর্জুনরা আক্রান্ত হন, সেই সময় আশেপাশে কোনও পুলিশ ছিল না। তৃণমূলের যে কর্মীরা এই হামলার নেপথ্যে ছিল, তাঁরা সকলেই মদন মিত্রর অনুগামী বলেই অভিযোগ তোলেন বিজেপি নেতা স্বপন দাশগুপ্ত। বিকি, ফর্সা লাল্লু, লাডলা আহমেদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে বলে জানান অপর নেতা শিশির বাজোরিয়া।
এদিন কমিশনের দফতরে গিয়ে বিজেপির তরফে দাবি করা হয়, গোটা ভবানীপুরে ১৪৪ ধারা জারি করে ভোট করানো হোক। কেন্দ্রীয় বাহিনীকে বুথের ভিতরে ও বাইরেও রাখতে হবে বলে দাবি জানানো হয়। সব বুথে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগিয়ে তার সরাসরি সম্প্রচার করার কথাও কমিশনকে বলা হয়। একই সঙ্গে কলকাতা পুলিশকে কটাক্ষ করে স্বপন বলেন, “নির্বাচন কমিশন যেন পুলিশের জন্য দর্শকদের বসার মতো একটা ব্যবস্থা করে দেয়। তারা দর্শক হিসেবেই থাকবে।”