কলকাতা : সাগর মেলায় (Gangasagar Mela) পুণ্যস্নানে লক্ষ লক্ষ ভক্তের সমাগম। মেলা প্রাঙ্গনে প্রতি বছরই পড়ে থাকে প্রচুর আবর্জনা। যার জেরে পরিবেশ দূষণের (Environmental Pollution) মাত্রাও বাড়ে। এবার দূষণ রোধে অভিনব উদ্য়োগ জেলা প্রশাসনের। মেলা প্রাঙ্গনে পড়ে থাকা আবর্জনা নতুন করে কাজ লাগানোর চেষ্টা চলছে। মাঠে নেমে পড়েছে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। প্লাস্টিকের বোতল থেকে শুরু করে শালপাতা, জামাকাপড় থেকে জুতো, পড়ে থাকা এই সময় জিনিস দিয়ে তৈরি হয়ে যাচ্ছে জৈব সার। সূত্রের খবর, গত বছর মেলা প্রাঙ্গন থেকে পাওয়া আবর্জনা থেকে ৮ মেট্রিক টন সার তৈরি হয়েছে। এবার সেই মাত্রা আরও বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।
সাগর মেলাকে স্বচ্ছ ও গ্রিন মেলা করার লক্ষ্যে ইতিমধ্যেই প্রশাসনের তরফে একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। মেলার আবর্জনা থেকে জৈব সার তৈরির জন্য অভিনব উদ্যোগ নিয়েছে জেলা প্রশাসন। মাঠে নামানো হয়েছে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে। মেলার সমস্ত আবর্জনা সংগ্রহ করে, সেগুলিকে আলাদা আলাদা ভাবে পচনশীল ও কঠিন আবর্জনা হিসেবে সংগ্রহ করা হচ্ছে। তারপর হচ্ছে বাছাই পর্ব। প্লাস্টিক ও পচনশীল পদার্থকে আলাদা করে ভাগ করা হচ্ছে। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মীদের দ্বারা গুঁড়ো হয়ে যাচ্ছে মেশিনে। হাইব্রিড ব্যাকটেরিয়ার সাহায্যে প্রস্তুত করা হচ্ছে জৈব সার। যা যে কোনও গাছেই দেওয়া সম্ভব। এছাড়াও যে সমস্ত ফেলে যাওয়া কাপড় , সেগুলি থেকে পাপোশ, কাচের বোতল আলাদা করে শো পিস তৈরি করা হচ্ছে। সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট ও ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইবুনালের নিয়ম মেনেই করা হচ্ছে সব কাজ।
দায়িত্বপ্রাপ্ত স্বেচ্চাসেবী সংগঠনের তরফে প্রসূনকান্তি দাস বলেন, “দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সমগ্র মেলাকে স্বচ্ছ, সুন্দর ও পরিষ্কার রাখার জন্য সাতটি অস্থায়ী সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট ইউনিট করা হয়েছে। এখানে ১১০০ কর্মী প্রতি মুহূর্তে সাগর তটকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখছে। এছাড়াও প্রায় ৩০০ কর্মী রয়েছেন যাঁরা বাড়তি নজরদারির জন্য থাকছেন। ময়লা জমলেই তা তুলে ফেলছেন। আবর্জনা আসার পরে তা বাছাই কাজ চলছে। এর জন্য প্রায় ১১৪ জন কর্মী রয়েছেন। পাশাপাশি সুভার ভাইজার রয়েছেন ২১ জন। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে এই কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বেশিরভাগ আবর্জনাই এখানেই সেগুলিকে গুড়ো করে ফেলা হচ্ছে। বাকি যেগুলি থাকছে সেগুলি আরও বড় মেশিনে গুড়ো করার জন্য বাইরে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে।” প্রসূনবাবুর দাবি এবারে মেলায় ভিড় বেশি হচ্ছে সে কারণেই আর্জনার পরিমাণও বাড়বে। প্রায় সাতশো-আটশো মেট্রিক টন আবর্জনা এবারের মেলা থেকে পাওয়া যেতে পারে বলে তাঁর মত।