BJP-TMC: সভার ভিড় নয়, সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘ভিউ’ নিয়েই তরজায় বিজেপি-তৃণমূল
BJP-TMC: গত ১৮ জুলাই দুর্গাপুরে সভা করে যান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর এদিন ধর্মতলায় তৃণমূলের শহিদ দিবসের সমাবেশ ছিল। দুই দলেরই সভা সোশ্যাল মিডিয়ায় লাইভ হয়েছিল। এদিন প্রথমে এক্স হ্যান্ডলে একটি পোস্ট করে রাজ্য বিজেপি।

কলকাতা: বামেদের ব্রিগেড। তৃণমূলের শহিদ দিবসের সমাবেশ। কিংবা বিজেপির সভা। এতদিন রাজনৈতিক দলগুলির সভা-সমাবেশে কত লোক হয়েছে, তা নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোর হত। সভা-সমাবেশের পর রাজনৈতিক দলগুলি জানাত, তাদের সভায় কত সমর্থক এসেছেন। বেশিরভাগ সময় বিরোধীরা সেই দাবিকে উড়িয়ে দিত। সভা-সমাবেশে ভিড় দিয়ে কি এবার রাজনৈতিক দলের ‘জনপ্রিয়তা’ মাপার দিন শেষ? এবার কি সোশ্যাল মিডিয়ায় ওই সভার লাইভ কতজন দেখেছেন, তা দেখে রাজনৈতিক দলগুলির ‘জনপ্রিয়তা’ বিচার করা হবে? ভোট ময়দানে কে এগিয়ে থাকবে, সেটাও কি সোশ্যাল মিডিয়ায় সভার লাইভের ‘ভিউ’ দেখে বোঝা যাবে? প্রশ্নগুলো উঠছে। কারণ, তিনদিন আগে দুর্গাপুরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সভা ও সোমবার তৃণমূলের শহিদ দিবসের সমাবেশের সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘ভিউ’ নিয়ে যুযুধান দুই পক্ষ তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে বাকযুদ্ধ শুরু হয়েছে।
গত ১৮ জুলাই দুর্গাপুরে সভা করে যান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর এদিন ধর্মতলায় তৃণমূলের শহিদ দিবসের সমাবেশ ছিল। দুই দলেরই সভা সোশ্যাল মিডিয়ায় লাইভ হয়েছিল। এদিন প্রথমে এক্স হ্যান্ডলে একটি পোস্ট করে রাজ্য বিজেপি। সেখানে তারা বলে, যখন মোদী বলেন, বাংলা শোনে। আর যখন মমতা বলেন, তখন দর্শক স্ক্রিন ছাড়লেন।

বিজেপির পোস্ট
‘খেলা শেষ’ বলে পোস্ট করে বিজেপি জানায়, পরিবর্তন সভায় যখন প্রধানমন্ত্রী বলছিলেন, তখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিউ পৌঁছে গিয়েছিল ৪০ হাজার ১৯০-এ। কিন্তু, যখন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, তখন লাইভ ভিউয়ার ছিল মাত্র ৬ হাজার ২১৪। বিজেপির বক্তব্য, “বাংলার নতুন রায়, বাংলা কেবল মোদীকেই চায়।”
বিজেপির এই পোস্টের জবাব দিতে দেরি করেনি তৃণমূল। রাজ্যের শাসকদলের নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য অন্য একটি হিসেব দিয়ে কটাক্ষ করেন বিজেপিকে। গেরুয়া শিবিরকে কটাক্ষ করে তিনি লেখেন, “যদি একটু কে.সি নাগের অঙ্ক করতেন ছোটবেলায়! যাদের ২০০ পার ৭০-এ আটকে যায়,৩৫ এর গল্প বলে ১২ তে হেঁচকি ওঠে, ৪০০ পার ২৪০-এর পর এগোয় না, তারা M আর K-র তফাৎ বুঝবে না, সেটাই স্বাভাবিক!”

দেবাংশুর পোস্ট
তারপরই একটি স্ক্রিনশট দিয়ে দেবাংশু লেখেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় দুর্গাপুরে মোদীর সভার ভিউ ৩ দিনে ১ লক্ষ ৭ হাজার। সেখানে সোশ্যাল মিডিয়ায় তৃণমূলের অফিসিয়াল পেজ থেকে শহিদ দিবসের সমাবেশের ভিউ ৬ ঘণ্টায় ২৮ লক্ষ। কোন পার্টির ঘণ্টায় কত ভিউ? তারপরই বিজেপিকে কটাক্ষ করে তিনি লেখেন, ২.৮ মিলিয়ন ১০৭ হাজারের চেয়ে ২৬ গুণ বেশি। ২০২৬ সালের নির্বাচনের প্রথম টিজার চলে এসেছে বলেও পোস্টে লেখেন তিনি। একইসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, “বাংলা ও বাঙালির মনে জোড়া ফুল গেঁথে গিয়েছে। একে উপড়ে ফেলা খুব কঠিন।”
এর আগে চলতি বছরে ফেব্রুয়ারিতে বিধানসভায় বাজেট অধিবেশনের সময় দেখা গিয়েছিল, বিধানসভার ভিতরে বক্তব্য রাখছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর বাইরে বক্তব্য রাখছেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। দুটি বক্তব্যের লাইভ স্ট্রিমিং হয়েছিল। বাজেট অধিবেশনের সময় শুভেন্দু-সহ ৪ বিজেপি বিধায়ককে একমাসের জন্য সাসপেন্ড করেছিলেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই, বিধানসভার ভেতরে যে বক্তব্য রাখার কথা ছিল, তা বাইরে রাখেন শুভেন্দু। আর তা লাইভ স্ট্রিমিং করা হয়েছিল। সেইসময় শুভেন্দু বলেছিলেন, “বিধানসভায় রাজ্যপালের ভাষণের উপর বক্তব্য রাখবেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর বক্তব্য লাইভ স্ট্রিমিং হবে। আর বিধানসভায় আমার যে বক্তব্য রাখার কথা ছিল, আমি বিধানসভার বাইরে বক্তব্য রাখব।” সেই বক্তব্যের লাইভ সম্প্রচার হবে জানিয়ে তিনি বলেছিলেন, “বাংলার জনগণ যত সংখ্যায় মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য শুনবেন, তার চেয়ে দশগুণ মানুষ দয়া করে আপনাদের বিরোধী দলনেতার কথা শুনবেন।”
রাজনীতির কারবারিরা বলছেন, তাহলে কি এবার সভার ভিড় নয়, সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিড় দেখেই দলগুলি নিজেদের রাজনৈতিক শক্তির হিসেব কষবে?

