কলকাতা: ‘এখানে বসেও পিছন থেকে কান্নার আওয়াজ শুনতে পাচ্ছি। এত কর্মীর মৃত্যু, এত মায়ের কোল ফাঁকা হয়ে যাওয়া কোনও সাধরণ বিষয় নয়।’ বিজেপি (BJP) দফতর থেকে ভোট পরবর্তী হিংসা (Post Poll Violence) ইস্যুতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন বিজেপির সর্বভারতীয় মুখপাত্র সম্বিত পাত্র (Sambit Patra)। ভবানীপুরের (Bhabanipur) বিজেপি প্রার্থী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়ালের প্রচারে রাজ্যে এসেছেন এই বিজেপি নেতা। আজ শুক্রবার মৃত বিজেপি কর্মী অভিজিৎ সরকারের (Abhijit Sarkar) মা ও সদ্য মৃত্যু হয় আর এক বিজেপি কর্মী মানস সাহার (Manas Saha) স্ত্রী’কে পাশে রেখেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তিনি। বারবার উল্লেখ করেন, আজ কোনও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে নয়, মানবিকতার খাতিরেই প্রশ্ন তুলছেন তিনি। এ সব মা-স্ত্রী’দের কান্নার হিসেব তৃণমূল সরকারকে দিতে হবে বলে বার্তা দেন সম্বিত পাত্র।
এ দিন ভোট পরবর্তী হিংসার অভিযোগ তুলে সম্বিত পাত্র বলেন, ‘এত কর্মীর মৃত্যু। মায়ের কোল ফাঁকা হয়ে যাওয়া কোনও সাধারণ বিষয় নয়। এটা গণতন্ত্রের হত্যা।’ তৃণমূল সরকারকে বার্তা দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমার পিছনে যে যে মা বসে আছেন, যে মা কাঁদছেন, তাঁর চোখের জলের কি কোনও মূল্য নেই? চোখের জলের হিসেব দিতেই হবে। আজ না হোক কাল, একদিন না একদিন হিসেব দিতেই হবে। এ ভাবে চোখেল জল নিয়ে সরকার চালানো কি খুব পুন্যের কাজ?’
ভোট গণনার পরের দিনই মৃত্যু হয় বেলেঘাটার বাসিন্দা বিজেপি কর্মী অভিজিৎ সরকারের। তদন্তের স্বার্থে তাঁর দেহ সৎকার করা হয়নি। ১৩৬ দিন পর সৎকারের অনুমতি পায় পরিবার। সে কথা উল্লেখ করে সম্বিত পাত্র বলেন, ‘অভিজিতের ভাইয়ের কাছে ছবিতে দেখলাম অভিজিৎ নরকঙ্কালে পরিণত হয়েছিল। ১৩৬ দিন পর এ ভাবে নরকঙ্কাল মায়ের হাতে তুলে দেওয়া কি ঠিক?’ মৃত বিজেপি কর্মী মানস সাহার স্ত্রী প্রীতি সাহাও এ দিন উপস্থিত ছিলেন বিজেপি দফতরে। তাঁকে দেখিয়ে সম্বিত পাত্র বলেন, ‘মানস সাহার স্ত্রী’র মুখের দিকে তাকাতে পারছি না। আমিও তো একজন মানুষ, একজন সন্তান। আমাদেরও তো মা, বোন, স্ত্রী আছে। উনি কাঁদছেন না। পাথর হয়ে গিয়েছেন, এখনও সিঁদুর মোছেনি।’ তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘কী ভুল ছিল মানস সাহার? শুধু বিজেপি থেকে লড়েছিল বলে মেরে ফেলতে হবে?’ নিজের স্বার্থে কোনও মায়ের কোল ফাঁকা করে দেওয়া গণতন্ত্র নয়।
উল্লেখয়্য, গতকালই মানস সাহার দেহ নিয়ে ভবানীপুরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির সামনে যায় রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। ছিলেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, ভবানীপুরের প্রার্থী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল, অর্জুন সিং সহ একাধিক নেতা। পুলিশের সঙ্গে দেখা ধস্তাধস্তিও হয়।