কলকাতা: না তিনি বঙ্গ বিজেপি-র সভাপতি নয়। কিন্তু তারপরও বিজেপির প্রধান মুখ বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। গেরুয়া শিবিরের অন্দর সূত্রে খবর, এইবারের ভোটে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব কার্যত ‘ফ্রি হ্যান্ড’ দিয়েছেন শুভেন্দুকে। প্রার্থী বাছাই থেকে প্রচার কৌশল, কিংবা ভোটের দিন কৌশল অথবা কেন্দ্রীয় বাহিনী বা কমিশনকে ব্যবহার করা-সব ক্ষেত্রেই কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব আস্থা রেখেছেন কাঁথির শন্তিকুঞ্জের মেজ ছেলের উপর। তবে সাজানো ‘রণকৌশল’ আদৌ কাজে আসবে কি না সেই উত্তর তো ৪ জুন মিলবে।
কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের আস্থা পূরণে কম চেষ্টা করেননি বিরোধী দলনেতা। দিন রাত এক করেছেন তিনি। গাড়ি ছুটছে লক্ষাধিক কিলোমিটার। রাজ্যের উত্তর থেকে দক্ষিণ সর্বত্র। কর্মসূচির সংখ্যায় সারা রাজ্যে কোনও রাজনীতিকই শুভেন্দু অধিকারীর ধারে পাশে নেই। এমনকি, ভূ-ভারতেও কেউ আছেন কি না তা নিয়ে মনে করতে পারছেন না কেউই।
লোকসভা ভোট পর্বে (মার্চ থেকে এই পর্যন্ত) ১৭৪ টি কর্মসূচি করেছেন শুভেন্দু অধিকারী। সেই তালিকায় জনসভা, মিছিল,জনসংযোগ,রোড-শো, চা চক্র, মন্দির দর্শন-সবই রয়েছে। আর সব জায়গাতে উপচে পড়া ভিড় হয়েছে। ভিড়ের নিরিখে একমাত্র তাঁকে টেক্কা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তা ছাড়া বিজেপি কেন্দ্রীয় বা রাজ্য নেতা কারও কর্মসূচিতে কর্মী-সমর্থকদের উপস্থিতি শুভেন্দু অধিকারীর কর্মসূচি তুলনায় ম্লান বললে ভুল হবে। অন্তত তেমনই বলছেন রাজনীতির কারবারিরা।
রাজ্যের একটি লোকসভা কেন্দ্রে নূন্যতম চারটি করে কর্মসূচি করেছেন রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা। আবার কোথাও সেই সংখ্যাটা সাত-আটেও গিয়ে দাঁড়িয়েছে। কেউ কেউ তো বলছেন লোকসভা ভোট ভাল হলে এ রাজ্যে বিজেপির ‘হিমন্ত বিশ্ব শর্মা’ হয়ে উঠবেন শুভেন্দু অধিকারী। আর খারাপ ফল হলে শাসক তৃণমূলের বিদ্রুপ,কটাক্ষ,আক্রমণ তো সামলাতেই হবে শুভেন্দু বাবুকে। তা যদিও তিনি বিলক্ষণ জানেন। পড়তে হতে পারে দলের অন্দরের খোঁচা-আক্রমণের মুখেও। তাই পরিশ্রমে কোনও ঘাটতি রাখতে চাননি তিনি। সে কারণেই এত বেশি কর্মসূচি? মনে তো এমনটাই করা হচ্ছে। কারণ, সংখ্যাই তাঁর দৌড়ে বেড়ানোর পরিমাপ করবে। ১৭৪ টি কর্মসূচির সুফল এল কি না, তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে আরও দিন কয়েক। বিজেপিতে ‘শুভেন্দু-মঙ্গল’ লেখা হল কিনা তার উত্তর মিলবে আগামী মঙ্গলে (ফল ঘোষণার দিন)।