কলকাতা: সম্প্রতি প্রাথমিক শিক্ষা কাউন্সিলে (Primary Education Council) বড়সড় রদবদলের কথা ঘোষণা করেছে রাজ্য। একসঙ্গে ২১টি জেলার প্রাথমিক স্কুল কাউন্সিলের চেয়ারপার্সন (Chair Person) পদে রদবদল করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবারই এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ্যে এসেছে। এরপরই এই রদবদলে স্বজনপোষণের অভিযোগ তুলে সরব হলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
টুইটারে নতুন চেয়ারপার্সনদের তালিকা তুলে ধরে শুভেন্দু লেখেন, ‘প্রত্যেক জেলার প্রাইমারি স্কুল কাউন্সিলের চেয়ারপার্সন পদে কোনও না কোনও তৃণমূল নেতা, বিধায়ক, সাংসদ বসেছেন।’ শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, যে তৃণমূল এতদিন ধরে শিক্ষাক্ষেত্রে বাম-রাজনীতিকরণের অভিযোগ তুলে এসেছে, সেই তৃণমূলই এখন নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে জেলা প্রাথমিক স্কুল কাউন্সিলে নিজেদের লোক বসিয়ে দিচ্ছে। এখানে কি শিক্ষাক্ষেত্রে রাজনীতি ঢুকে পড়ছে না? প্রশ্ন তুলে টুইটবাণ ছোড়েন বিরোধী দলনেতা।
গত বৃহস্পতিবার স্কুল শিক্ষা দফতর যে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে, সেখানে কলকাতা-সহ মোট ২১ জেলার কাউন্সিলের চেয়ারপার্সন বদল করা হয়েছে। অন্যান্য জেলার মধ্যে রয়েছে আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, শিলিগুড়ি, উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর, মালদা, মুর্শিদাবাদ, পশ্চিম মেদিনীপুর, পূর্ব মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম বর্ধমান, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, নদিয়া, হাওড়া, হুগলি, বীরভূম।
প্রাথমিকে নিয়োগ নিয়ে সম্প্রতি একাধিক বার আদালতে মুখ পুড়েছে রাজ্যের। কিছুদিন আগেই কলকাতা হাইকোর্টে প্রাথমিকে নিয়োগের একটি মামলায় তীব্র অস্বস্তির মধ্যে পড়তে হয় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে (West Bengal Board Of Primary Education)। প্রাথমিকের ভুল প্রশ্ন মামলায় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যকে সশরীরে আদালতে হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়।
কেন আদালতের নির্দেশ মতো উত্তরদাতাদের নম্বর দেওয়া হয়নি, সেই মর্মে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের হয়েছিল হাইকোর্টে। সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতেই সভাপতিকে ডেকেও পাঠিয়ে ছিল আদালত। যোগ্য প্রার্থীরা যাতে কোনও ভাবেই কাজের সুযোগ থেকে বঞ্চিত না হন সেদিকে নজর রাখার নির্দেশ দেওয়া হয় মানিক ভট্টাচার্যকে।
একটি মামলাই যদি বছরের পর বছর চলতে থাকে, আদালতের নির্দেশের পরও নিয়োগপত্র হাতে পেতে যদি এতটা সময় লাগে, সেক্ষেত্রে এরকম মামলাগুলির ভবিষ্যৎই বা কী? এজলাসে এ প্রশ্নও ওঠে। পর্ষদ সভাপতি নিজেও এ বিষয়টি মেনে নেন। পর্ষদ সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য বলেন, “এটা আমার দুর্ভাগ্য, যে আমাকে আদালতের সামনে হাজিরা দিতে হচ্ছে। মামলাকারীরা আমার সন্তান সম।” সেদিনই আদালতকে জানানো হয়, আদালতের নির্দেশমতো এক মামলাকারী নিয়োগের কাগজপত্রও পেয়েও গিয়েছেন।
Those who accused the Left Front Govt of politicizing the education sector & opposed political interference, have appointed TMC MLAs, elected members & party officials as Chairperson of District Primary School Council; violating the rules.
Ever heard; “Practice what you preach.” pic.twitter.com/ZouScAb5CQ— Suvendu Adhikari • শুভেন্দু অধিকারী (@SuvenduWB) September 18, 2021
এরপরই একসঙ্গে ২১টি জেলার প্রাথমিক স্কুল কাউন্সিলের চেয়ারপার্সন বদলের সিদ্ধান্তে মনে করা হয়েছিল ভাবমূর্তি ধরে রাখতেই এই সিদ্ধান্ত। তবে এমন অভিযোগও উঠেছিল, যাঁদের নাম চেয়ারম্যান হিসেবে এই তালিকায় রয়ে গিয়েছে, তাঁদের অনেকেরই ভাবমূর্তি ঠিক নেই। শিক্ষক সংগঠনের নেতা স্বপ্ন মণ্ডল সরাসরি অভিযোগ জানিয়েছিলেন, “এদের মধ্যে অনেকের বিরুদ্ধেই বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ আছে।” তা নিয়ে বিতর্কও শুরু হয়। এরই মধ্যে বিতর্ক আরও খানিকটা উষ্কে দিল বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীর এই টুইট।
আরও পড়ুন: Good News: বকেয়া DA নিয়ে বিদ্যুৎ কর্মীদের জন্য সুখবর! বড় রায় কলকাতা হাইকোর্টের