ব্যারাকপুর ও কলকাতা : পদ্ম ছেড়ে ঘাসফুলে কি ফিরছেন তিনি? জল্পনাটা বাড়ছিল অনেকদিন ধরেই। আজ সাংবাদিক বৈঠকেও তৃণমূলে ফেরা নিয়ে সরাসরি জবাব দিলেন না বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং (Ajrun Singh)। কিন্তু, যা বললেন তাতে তাঁর তৃণমূলে ফেরার জল্পনা আরও বেড়েছে। দুপুরে কলকাতায় পৌঁছেছেন তিনি। সূত্রে জানা গিয়েছে, সাড়ে চারটে নাগাদ তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্যামাক স্ট্রিটের অফিসে যাবেন ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ। সেখানে অভিষেকের সঙ্গে বৈঠক করবেন। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আজই অর্জুন সিং ফুলবদল করতে পারেন বলে সূত্রের খবর।
২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের আগে ঘাসফুল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে জিতে সাংসদ হন। সবকিছুই ঠিকঠাক চলছিল। কিন্তু, কিছুদিন আগে থেকে একাধিক ইস্যুতে সরব হন তিনি। পাটশিল্প নিয়ে কেন্দ্রীয় নীতির সমালোচনা করেন। এমনকী, এই নিয়ে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ চার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠিও লেখেন। তারপরই তাঁকে দিল্লিতে ডেকে পাঠান বস্ত্রমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল। বৈঠকও হয়। অর্জুনের দাবি মেনে কাঁচা পাটের দামের ঊর্ধ্বসীমা তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্র। এমনকী, বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডার সঙ্গেও বৈঠক করেন অর্জুন।
তারপরও ‘বরফ’ গলেনি। একের পর এক টুইট করে অর্জুন অন্য ইঙ্গিত দিতে থাকেন। আর আজ সকালে সাংবাদিক বৈঠক করে তাঁর দলবদলের প্রশ্নে অর্জুন স্পষ্ট করে দিলেন, রাজনীতিতে সব কিছু সম্ভব। ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ জানান, আজ তিনি কলকাতা যাবেন। কী জন্য কলকাতায় তিনি যাবেন, তা বলেননি। সাংবাদিক বৈঠকের কিছুক্ষণ পর কলকাতার উদ্দেশে রওনা দেন তিনি। সূত্রের খবর, অভিষেকের সঙ্গে বৈঠক করতেই কলকাতায় এসেছেন বিজেপির অর্জুন।
তৃণমূলের বিরুদ্ধে তিনি লাগাতার আক্রমণ শানিয়েছেন এতদিন। তৃণমূলের একাধিক নেতা তাঁর বিরুদ্ধে সরব। তৃণমূলে ফিরে গেলে তাঁকে কি মেনে নেবেন ওই নেতারা? এই প্রশ্নের উত্তরে অর্জুন যা বললেন, তা রীতিমতো ইঙ্গিতবহ। ব্যারাকপুরে সাংসদ বলেন, “তৃণমূলে কে কী বলবেন, কে কী করবেন, সেটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঠিক করেন। ঘরওয়াপসি হবে কি না, সময় বলবে।” তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকে তিনি ঘাসফুলে ছিলেন, সেই কথাও স্মরণ করিয়ে দিলেন। ব্যারাকপুরে তিনি যে অবিসংবাদিত নেতা, সেকথা বুঝিয়ে দিয়ে বিজেপি সাংসদ বলেন, “আমি মানুষকে নিয়ে রাজনীতি করি। ব্যারাকপুরের মানুষ আমার সঙ্গে আছেন। আমি তাঁদের সুখে দুঃখে পাশে থাকি। যা করব ব্যারাকপুরের মানুষ জানতে পারবে।”
অর্জুনের টুইটারের বায়ো বলছে, তিনি রাজ্য বিজেপির সহ সভাপতি। এখন টুইটারের বায়োতে কোনও পরিবর্তন হয়নি। তবে রাজনীতির কারবারিরা বলছেন, বিজেপির সঙ্গে অর্জুনের গাঁটছড়া যে ছিন্ন হতে চলছে, তা একপ্রকার স্পষ্ট। অভিষেকের সঙ্গে বৈঠকের পরই হয়তে ঘাসফুলে প্রত্যাবর্তন হবে তাঁর। যে দলের জন্মলগ্ন থেকে সঙ্গী ছিলেন তিনি।