কলকাতা: ফের বাংলার প্রতি ‘বঞ্চনার’ অভিযোগ তুলে সরব রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু (Bratya Basu)। সম্প্রতি জাতীয় শিক্ষানীতি বাস্তবায়ন করতে কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (UGC)। কিন্তু ইউজিসির তৈরি করা ইস্টার্ন জোনের কমিটিতে কোনও বাংলার উপাচার্য নেই বলেই অভিযোগ তুলেছেন ব্রাত্য বসু। কমিটি থেকে কেন ব্রাত্য বাংলার উপাচার্যরা? সেই নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী। প্রসঙ্গত অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়ান ইউনিভার্সিটিসের সভাপতি পদে রয়েছেন সুরঞ্জন ভট্টাচার্য। তারপরও কেন বাংলার ৪০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে একটিরও উপাচার্য ইস্টার্ন জোনের কমিটিতে নেই, তা নিয়েও টুইটারে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন ব্রাত্য বসু।
টুইটারে ব্রাত্য বসু লিখেছেন, “ইউজিসির তরফে বিভিন্ন কেন্দ্রীয়, রাজ্য পরিচালিত ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপাচার্যদের পাঁচটি জোনাল কমিটি গঠন করা হয়েছে। এর মধ্যে উত্তর পূর্ব ও পূর্ব জোনের কমিটিতে সাতজন সদস্যকে রাখা হয়েছে। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে সেখানে বাংলার ৪০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে একজন উপচার্যও নেই। তাও আবার যখন অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়ান ইউনিভার্সিটিসের সভাপতির পদে রয়েছেন বাংলার এক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য।”
— Bratya Basu (@basu_bratya) December 28, 2022
বিষয়টি নিয়ে অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়ান ইউনিভার্সিটিসের সভাপতি সুরঞ্জন দাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “আমি ইউজিসি চেয়ারম্যানের দৃষ্টি আকর্ষণ করব যাতে বাংলা থেকে জোনাল কমিটিগুলিতে অন্তত একটি প্রতিনিধিত্ব থাকে।”
প্রসঙ্গত, উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড় যখন অতীতে বাংলার রাজ্যপাল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন, তখন বার বার রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাতের বাতাবরণ তৈরি হয়েছিল। সেই সংঘাত পৌঁছেছিল শিক্ষাক্ষেত্র নিয়েও। রাজ্যের আওতাধীন বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য পদ থেকে রাজ্যপালকে সরানোর জন্য বিধানসভায় বিল এনেছিল রাজ্য সরকার। ধনখড়ের আমলে উপাচার্য নিয়োগকে কেন্দ্র করেও শিক্ষা দফতর ও রাজ্যপালের মধ্যে দ্বন্দ্বের বাতাবরণ তৈরি হয়েছিল। এবার ইউজিসির বিরুদ্ধে বাংলাকে বঞ্চনার ইস্যুতে সরব হলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। যদিও বিষয়টি নিয়ে ইউজিসির তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া এখনও পাওয়া যায়নি।
বিষয়টি নিয়ে অবশ্য রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “চিরকাল তো এরা লড়াই করছেন। সাম্প্রতিককালে ইউজিসির সমস্ত গাইডলাইন ভেঙে উপাচার্য নিয়োগ করা হয়েছে। এমনকী তৎকালীন রাজ্যপালকে সম্পূর্ণ অন্ধকারে রেখে উপাচার্য নিয়োগ করা হয়েছে। রাজ্যপাল হিসেবে জগদীপ ধনখড় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন গিয়েছিলেন, তৎকালীন উপাচার্য বলেছিলেন, রাজ্য সরকার চায় না তিনি রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করুক।”
সঙ্গে শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “এটি বাঙালির জন্য একটি দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। তারজন্য তৃণমূল সরকারই দায়ী। তাও আমরা দেখব, কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রকের সঙ্গে কথা বলব। পশ্চিমবঙ্গেরও যাতে প্রতিনিধিত্ব থাকে, সেই বিষয়ে দল তার অবস্থান জানাবে। তবে যে অবস্থা তৈরি হয়েছে, তা সম্পূর্ণ তৃণমূল সরকারের কৃতিত্ব।”