হাওড়া : টেট (TET) থেকে এসএসসি (SSC), নিয়োগ কেলেঙ্কারি মামলায় বিগত কয়েক মাসে ক্রমেই অস্বস্তি বেড়েছে রাজ্য সরকারের। কারাবন্দি হয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee)। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার ব়্যাডারে রয়েছেন সরকারের একাধিক প্রাক্তন আমলা। এমতাবস্থায় এবার গ্রুপ-ডি চাকরিপ্রার্থীদের নবান্ন অভিযান ঘিরে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয়ে গেল হওড়ার শিবপুরে। এদিন কয়েক দফা দাবিতে রাজ্য সরকারের চতুর্থ শ্রেণির পদের কর্মপ্রার্থীরা বুধবার নবান্নে এক ডেপুটেশন কর্মসূচির ডাক দেন। শিবপুরের কাজিপাড়ায় শুরু হয় জমায়েত। চাকরিপ্রার্থীদের মিছিল শুরুর আগে থেকেই গোটা এলাকা পুলিশে পুলিশে ছয়লাপ হয়ে যায়। ব্যারিকেড করে দেওয়া হয় এলাকার একাধিক রাস্তায়। চাকরিপ্রার্থীরা ডেপুটেশন দিতে গেলেই তাঁদের পথ আটকায় পুলিশ। শুরু হয়ে যায় ধস্তাধস্তি।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালে ওয়েস্ট বেঙ্গল গ্রুপ ডি রিক্রুটমেন্ট বোর্ড গঠিত হয়। নিয়োগের জন্য হয় লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা। ওই সময় ছিল মোট ৬ হাজার শূন্যপদ। এই পদে নিয়োগের জন্য পরীক্ষা দেন কয়েক লক্ষ পরীক্ষার্থী। তার মধ্যে পাশ করেন ৫ হাজার ৪২২ জন। চাকরিপ্রার্থীদের একটা বড় অংশের অভিযোগ, পরীক্ষায় পাশ করলেও তাঁদের কোথায়, কীভাবে নিয়োগ করা হবে তা অনেকেই জানেন না। অনেককেই বিভিন্ন দফতরে নিয়োগ করা হচ্ছে। কিন্তু, অনেকেই পাশ করেও হাতে নিয়োগপত্র পাচ্ছেন না। তাই সঠিকভাবে নিয়োগের দাবিতেই এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দফতরে ডেপুটেশন জমা দিতে জমায়েতের ডাক দেন চাকরিপ্রার্থীরা। কিন্তু, ডেপুটেশন দিতে গেলেই তাঁরা পড়েন পুলিশি বাধার মুখে। মুহূর্কে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। বহু চাকরিপ্রার্থীকেই কাজিপাড়া থেকে আটক করে পুলিশ। গ্রুপ-ডি কর্মপ্রার্থীরা ছাড়াও এদিনের কর্মসূচিতে অংশ নেন এসএসসি গ্রুপ-সি, গ্রুপ-ডি অধিকার মঞ্চ, শারীরশিক্ষা-কর্মশিক্ষা, মাদ্রাসা, এসএসসি যুব-ছাত্র অধিকার মঞ্চ সহ মোট ৯টি সংগঠনের চাকরিপ্রার্থীরা।
আন্দোলনকারীদের তরফে চাকরিপ্রার্থী আশিস বলেন, “আমরা আগেও বারবার নিয়োগের দাবি তুলেছি। মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপেরও দাবি তুলেছি। কিন্তু, এখনও সরকারের তরফ থেকে আমরা কোনও সদর্থক উত্তর পাইনি। আলোচনার কোনও বাতাবরণ তৈরি হয়নি। সে কারণেই বাধ্য হয়ে ৯টি বঞ্চিত কর্মপ্রার্থী সংগঠনের তরফে আমরা একত্রিত হয়েছি। আজ নবান্ন গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আমাদের সমস্যার কথা জানাতে চাইছিলাম। আমরা ইতিমধ্য়েই নবান্নে ই-মেলও করেছি। ওনাদের তরফ থেকে জানানো হয়েছে নবান্নের আধিকারিকরা আমাদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন। আমাদের কথা শুনবেন। তবে আমরা চাইছি অন্য কোনও সরকারি আধিকারিক নয়, সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চাইছি।”