কলকাতা: “এক বাপের ব্যাটা হলে মুখোমুখি বসুন। শুভেন্দু আগে ঘর সামলাও পরে ভাববে বাংলা।” শুক্রবারই নন্দীগ্রামের সভা থেকে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে (Suvendu Adhikari) কার্যত সিনেম্যাটিক ভঙ্গিমায় চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। যা নিয়েই রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে বিস্তর চাপানউতর। সরগরম জেলার রাজনৈতিক মহলও। এদিকে শুধু কুণাল নয়, রাজনীতির কারবারিরা একে অপরকে আক্রমণ করতে গিয়ে প্রায়শই ‘বাপের ব্যাটার’ রেশ টেনে হুঁশিয়ারি দিয়ে থাকেন। কিন্তু, এ মন্তব্য কী বাঁধ ভাঙছে শালীনতার? প্রশ্নের মুখে পড়েছে সমাজে মায়েদের স্থান? প্রশ্ন উঠছে নারী চরিত্র নিয়ে? এ প্রসঙ্গে টিভি-৯ বাংলা সমাজের একাধিক বিশিষ্ট মানুষের সঙ্গে কথা বলে। উঠে আসে নানা মতামত।
আমাদের প্রশ্নের উত্তরে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রাজেশ্বর সিনহা বলেন, “এক ব্যাপের ব্যাটা বলার মধ্য দিয়ে অবশ্যই মায়ের উদ্দেশে করুচিকর ইঙ্গিত করা হচ্ছে। বাবা তো একজনই হবে। এটা তো বিজ্ঞান বলে। কিন্তু, এক বাপের ব্যাটা বলার মধ্যে আদপে পৌরষত্ব জাহির করার একটা ব্যাপার থেকে যাচ্ছে।” অন্যদিকে মহিলা কমিশনের প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুনন্দা মুখোপাধ্যায়ের মতও খানিক এক। তাঁর কথায়, “এ কথা নিঃসন্দেহে কুরুচিকর। এ কথা বলার মধ্যে মায়ের চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। এই শতাব্দীতে দাঁড়িয়ে এ শব্দবন্ধ অর্থহীন। তবে অনেকেই আবার কথা প্রসঙ্গে বলেন আমার যদি সতী হয়। আসলে সব সময়ই মায়ের চরিত্র প্রশ্নের মুখে পড়ে। এটা যে কারওই অশালীন বলে মনে হতে পারে।”
শিল্পী শুভাপ্রসন্ন বলেন, “সাধারণভাবে এক বাপের ব্যাটা কথাটা কুরুচিকর। তবে সাধারণভাবে কোনও তর্কাতর্কিতে, বা আলোচনায় উচ্চগ্রামে কথা বলতে গিয়ে অনেক সময়ই এক বাপের ব্যাটা কথাটা বেরিয়ে যায়। তবে এটা সভ্য সংস্কৃতি নয়। এ কথা না বলাই ভাল।” বিশিষ্টদের আপত্তি থাকলেও রাজনীতির কারবারিরা কী সেসবে পাত্তা দেবেন? প্রশ্ন রয়েই যাচ্ছে।