কলকাতা: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। রাজ্যের প্রথম সারির উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে একটি। ছেলেমেয়েরা স্কুল জীবন থেকে সেখানে ভর্তি হওয়ার স্বপ্ন দেখে। এবার সেই বিশ্ববিদ্যালয়েও ভর্তি প্রক্রিয়ায় দুর্নীতি? ভয়ঙ্কর অভিযোগ তুললেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের দায়িত্ব থেকে সদ্য অপসারিত বুদ্ধদেব সাউ। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচি-তে ভর্তি প্রক্রিয়ায় বিস্তর দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ তাঁর। আচার্য তথা রাজ্যপালকে বিষয়টি ইউজিসি কিংবা সিবিআইকে দিয়ে তদন্ত করিয়ে দেখার সওয়ালও করেছেন বুদ্ধদেব সাউ।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘ ২১ বছর ধরে অধ্যাপনার সঙ্গে যুক্ত গণিতের অধ্যাপক বুদ্ধদেব সাউ। রাজ্যপাল তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য সি ভি আনন্দ বোস তাঁকে যাদবপুরের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ করেছিলেন। সম্প্রতি যাদবপুরের সমাবর্তন বিতর্কের মাঝেই সেই দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বুদ্ধদেববাবুকে। সমাবর্তনের ঠিক এক দিন আগে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের পদ থেকে অপসারিত হয়েছেন তিনি। আর এরপরই কার্যত বিস্ফোরক বুদ্ধদেববাবু।
টিভি নাইন বাংলার ক্যামেরায় বুদ্ধদেব সাউ বললেন, “পিএইচডিতে সুপার নিউমেরারি পোস্ট নিয়ে ইউজিসির গাইডলাইন ভাঙা হয়েছিল। আমার আগে থেকে (দায়িত্ব নেওয়ার আগে থেকে) বহু কাল ধরে সুপার নিউমেরারি নিয়ে দুর্নীতি চলছিল। ২০১৭ সালে কোনও একটা কারণ বশত এটি হয়েছিল। তারপর থেকে কোনও ফর্মাল পারমিশন ছাড়া এই সুপার নিউমেরারি পোস্ট চলেছে। আমি এই নিয়ে ইউজিসি চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথাও বলেছিলাম। কিন্তু সেটি একটি আলোচনার জায়গায় যাওয়ার আগেই, এরকম একটি ঘটনা ঘটে গেল।”
তিনি যখন দুর্নীতির অভিযোগগুলি ঘিরে নড়েচড়ে বসেছিলেন, ঠিক তখনই ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের দায়িত্ব থেকে সরে যেতে হল। এই নিয়েও আক্ষেপের শেষ নেই বুদ্ধদেব সাউয়ের। বললেন, “আমি বুঝতে পারছি না। আমি এই ধরনের স্টেপগুলি নেওয়ার পরও, এরকম একটা বিষয় শুনে খুব শকড হয়েছিলাম। আমি যখন দুর্নীতিগুলি সরাতে চেয়েছিলাম, তখন এইরকম একটা স্টেপ কেন নেওয়া হল? আমি জানি না ওনার (আচার্যের) কাছে কী বার্তা পৌঁছেছে। আমি তো বলছি, উনি চাইলে ইউজিসিকে দিয়ে বা সিবিআই তদন্ত করে দেখুন, এখানকার পিএইচডি অ্যাডমিশন নিয়ে কী চলছে।” যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সংগঠন জুটার সাধারণ সম্পাদক পার্থ প্রতিম রায় অবশ্য এই অভিযোগ মানতে নারাজ। তাঁর দাবি, এখনও সুপারভাইজার অ্যালোকেশন শুরু হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ে এই উপায়েই ভর্তি হত। বুদ্ধদেব সাউ নিয়ম জানতেন না। অধ্যাপক নন্দিনী মুখোপাধ্যায়ের মতে, বুদ্ধদেব সাউ শক পেয়েছেন। তাই তাঁর মানসিক স্থিরতা এখন নেই।