কলকাতা
: জ্বালানি তেলের দাম উর্ধমুখী। অন্যদিকে করোনা পরিস্থিতির পর থেকে কয়েকটি রুটে বাস-ও কমেছে। এই পরিস্থিতিতে বাসে গাদাগাদি ভিড় এবং মর্জি মাফিক ভাড়া নেওয়া নিয়ে যাত্রী অসন্তোষ চলছি ল। এই প্রেক্ষিতে বুধবার বাস মালিক সংগঠনদের নিয়ে বৈঠকে পরিবহণমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম জানিয়ে দিলেন বাস ভাড়া বাড়বে না। করোনা পরিস্থিতিতে মানুষের রোজগাগে কোপ পড়েছে। এই অবস্থায় কোনওভাবেই বাস ভা ড়া বাড়ানো যাবে না বলে বাস মালিক সংগঠনদের জানান তিনি। বৈঠকে তাঁরাও মন্ত্রীর কথা মেনে নিয়েছেন বলে দাবি।
জানা গিয়েছে, বাস মালিকদের এদিন রাজ্য সরকার জানিয়েছে সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনে বিকল্প জ্বালানি বা ব্যাটারি চালিত বাস কত তাড়াতাড়ি এবং কীভাবে রাস্তায় নামানো যায় তা নিয়ে আলোচনা চালাবে রাজ্য। আগামী ১৭ নভেম্বর ফের বৈঠক হবে সব পক্ষকে নিয়ে। তবে এর মধ্যে বাসভাড়া বাড়ানো যাবে না। এখনই ভাড়া বাড়ালে মানুষের ওপর আরও চাপ বাড়বে বলে জানান মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।
ফিরহাদ হাকিমের বক্তব্য, কেন্দ্র তেলের দাম বাড়িয়েই চলবে আর রাজ্য বাসের ভাড়া বাড়িয়েই যাবে, এটা কোনও সমাধান হতে পারে না। এর ফলে সাধারণ মানুষ অসুবিধায় পড়ছেন। এর মধ্যে পুনে থেকে এক বিশেষজ্ঞকে আনা হচ্ছে। তিনি পুরনো ডিজেল বাসকে ব্যাটারি বাসে রুপান্তরিত করানোর ব্যাপারে সহায়তা করছেন বলে সরকারি সূত্রে খবর। রাজ্য আশাবাদী যে, এর ফলে সরকারি ও বেসরকারি বাসের সুরাহা হবে। সিএনজি কোম্পানির সঙ্গেও আলোচনা হচ্ছে।
আগামী বছর থেকে দুরবস্থা কেটে পাকাপোক্ত সমাধান পাওয়া যাবে বলে জানাচ্ছেন পরিবহণ মন্ত্রী।
ফিরহাদ হাকিমের কথায়,”অলটারনেটিভ ফুয়েল, এই রুটটা আমাকে বের করতেই হবে। সেটার জন্য আজকেও আমি বাস মালিকদের হাত ধরে বললাম, বাবু, তোমাদের অসুবিধা হচ্ছে, কিন্তু একটু বেয়ার করো। কারণ, এখনও কোভিড পরিস্থিতি, নোটবন্দির জন্য সাধারণ মানুষের হাতে টাকা নেই। নাভিশ্বাস উঠছে তাঁদের। তাই ভাড়া বাড়ানোর কথা ভেবো না। আমি অন্যভাবে তোমাদের পুষিয়ে দেব। ওরা আমার সঙ্গে সহমত হয়েছে।”
এদিকে এর মধ্যে যাতে উপরি ভাড়া না নেওয়া হয় এর জন্য নজরদারি চালানো হবে বলে খবর। কলকাতা তথা রাজ্যে বাসভাড়া বেশি নেওয়া হচ্ছে কিনা তা দেখার জন্য দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে সংশ্লিষ্ট সরকারি আধিকারিকদের ওপর।
এদিকে এদিন সরকারি নির্দেশের প্রেক্ষিতে এক নিত্যযাত্রীকে প্রশ্ন করায় প্রতিক্রিয়া, “সরকার সরকারের কথা বলে যায়। এক রুটে আজকে ১৫ টাকা দিই। পরের দিন ১৮ টাকা নেওয়া হয়। এভাবেই চলতে হবে।” আরেক যাত্রীর কথায়, “সাত থেকে যে ১০ টাকা ভাড়া হয়েছে তা কি কেউ আমরা জানি? সরকার বলছে, কিন্তু কে শুনছে।”
সিএসবিএস-এর সাধারণ সম্পাদক রত্নাক্ষ সাহার কথায়, “সরকার বাস বাড়াতে চায় না একথা ঠিক। কিন্তু ১০২ টাকায় এক লিটার ডিজেল মিলছে। তাই কীভাবে বাস রাস্তায় থাকবে সেই পথ-ও বাতলাতে হবে। ন্যূনতম পরিবহণ ভাড়ায় কীভাবে সচল থাকবে বাস চলাচল সেটাও দেখা দরকার।”