কলকাতা: উপনির্বাচনের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করল তৃণমূল। একই সঙ্গে ঘোষণা করা হল পূর্ণাঙ্গ ভোটের প্রার্থীদের নামও। ভবানীপুরে ঘাসফুলের প্রতীকে লড়ছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আনুষ্ঠানিক ভাবে দলের তরফে ঘোষণা করা হল রবিবার। অন্যদিকে জঙ্গিপুরের তৃণমূল প্রার্থী প্রাক্তন মন্ত্রী তথা বিদায়ী বিধায়ক জাকির হোসেন। সামশেরগঞ্জে তৃণমূলের মুখ আমিরুল ইসলাম।
শনিবারই নির্বাচন কমিশন উপনির্বাচন নিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। কেবল মাত্র ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রেই উপনির্বাচনের দিন ঘোষণা করা হয়েছে। বাকি চারটি কেন্দ্রের উপনির্বাচন আপাতত স্থগিতই থাকছে। অন্যদিকে সাধারণ নির্বাচন বাকি রাজ্যের দুই কেন্দ্রে। দু’টিই মুর্শিদাবাদ জেলার। একটি জঙ্গিপুর, অন্যটি সামশেরগঞ্জ। শনিবার এই দুই কেন্দ্রেও ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা করা হয়। ৩০ সেপ্টেম্বর নির্বাচন। ভোটের গণনা ৩ অক্টোবর।
সাংবিধানিক সংকট তৈরি হতে পারে বলেই আগে ভবানীপুরে উপনির্বাচনের দিন ধার্য করা হয়েছে বলে নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে। এই কেন্দ্র থেকেই লড়ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিয়ম অনুযায়ী ৬ মাসের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রীকে জয়ী হতে হবে কোনও বিধানসভা কেন্দ্র থেকে। তাই দ্রুত নির্বাচন করার জন্য বারবার আর্জি জানিয়েছিল তৃণমূল। শনিবার সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে কমিশন শুধুমাত্র ভবানীপুর কেন্দ্রে উপনির্বাচনের দিন জানায়।
ভবানীপুর কেন্দ্রটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ উপনির্বাচনের জন্য। এই কেন্দ্রের সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সির ভবিষ্যৎও। কারণ, ভোটে হেরেও গত ৫ মে মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিয়ম অনুযায়ী, মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে তাঁকে পদে থাকতে গেলে ছ’ মাসের মধ্যে রাজ্যের কোনও বিধানসভা কেন্দ্র থেকে উপনির্বাচনে জিতে আসতে হবে। হিসাব মতো ৪ নভেম্বরের মধ্যে উপনির্বাচন হওয়া দরকার।
সেই দিকটি মাথায় রেখেই ভোটের ফল প্রকাশের পর মাস ঘুরতে না ঘুরতেই উপনির্বাচন নিয়ে সরব হয় তৃণমূল। রাজ্য নির্বাচন কমিশন থেকে দিল্লির জাতীয় নির্বাচন কমিশনের দফতর, সর্বত্রই আর্জি জানান তৃণমূলের প্রতিনিধিরা। যদিও বিজেপি কোনও ভাবেই উপনির্বাচনের জন্য রাজি ছিল না। তাদের বক্তব্য, যে রাজ্যে সংক্রমণের জন্য ট্রেন চলছে না, স্কুল বন্ধ, সেখানে কী ভাবে ভোট হতে পারে! এ নিয়ে তারাও কমিশনকে জানায়। বিজেপির সেই আর্জিতে আংশিক সাড়া দিয়েছে কমিশন। ভবানীপুরে উপনির্বাচনের দিন ঘোষণা করা হলেও বাকি চার কেন্দ্র অর্থাৎ শান্তিপুর, দিনহাটা, খড়দহ ও গোসাবায় এখনই উপনির্বাচন হচ্ছে না।
আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর ভোট হবে রাজ্যের তিন কেন্দ্রে। ৬ সেপ্টেম্বর থেকে আদর্শ আচরণ বিধি কার্যকর হয়ে যাবে ভবানীপুর, সামশেরগঞ্জ ও জঙ্গিপুর বিধানসভা এলাকায়। ১৩ সেপ্টেম্বর মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার দিন। ১৬ সেপ্টেম্বর প্রার্থীপদ প্রত্যাহারের শেষদিন। ৩ অক্টোবর ভোটের গণনা। একুশের বিধানসভা ভোটের আগেও প্রথম প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছিল তৃণমূল। এবারও সেই ট্রেন্ড বজায় রইল। বিজেপি কবে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে এখন নজর সেদিকেই। আরও পড়ুন: রাজ্যে ক্যানসার প্রকল্প নিয়ে বিতর্ক, স্টিয়ারিং কমিটিতে এক মাত্র নাম এনআরএসের চিকিৎসকের