২ মার্চ উপনির্বাচনে জয়ী হন কংগ্রেস তথা জোটের প্রার্থী বাইরন বিশ্বাস। সাধারণ উপনির্বাচন বলে মনে হলেও ওই ঘটনার তাৎপর্য ছিল অনেক। মোড় ঘোরানো একটা ফলাফল বলে মনে করেছিলেন রাজনীতির কারবারিরা। শাসকের আত্মবিশ্বাসে কিছুটা হলেও চিড় ধরেছিল বলেও দাবি করেছিলেন কেউ কেউ। সেই ঘটনার তিন মাস পূর্ণ হতে আর মাত্র চার দিন বাকি। তার মধ্যেই প্রতীক বদলে ফেললেন বাইরন। গায়ে উঠল মা-মাটি-মানুষের উত্তরীয়। জয়ের পর যাঁর শপথ নিয়ে এত টালবাহানা, যাঁর বিরুদ্ধে মুখ খুলতে পিছপা হননি খোদ অভিষেক। আজ তাঁর জন্য দলের দরজা খুললেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক।
ফিরে যাওয়া যাক মার্চ মাসে। শপথ নিয়ে অনেক জলঘোলা হয়। বিধায়ক পদে শপথ নিতে ২০ দিন লেগে গিয়েছিল বাইরনের। ২০ দিন পর শপথ নিয়ে বাইরন বলেছিলেন, শাসক দলের বিধায়ক হলে নাকি এত সমস্যাই হত না।
বিধানসভায় খাতা খুলতে মরিয়া ছিল কংগ্রেস। রাজ্য বিধানসভায় যাঁদের সংখ্যা ছিল শূন্য, সেই কংগ্রেস নেতৃত্ব বাইরনের শপথের জন্য উদ্যোগী হয়েছিল। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী রাজ্যপালের দ্বারস্থও হয়েছিলেন। অবশেষে ২২ মার্চ শপথ গ্রহণ করেন বাইরন।
শপথের আগেও বিতর্কে জড়িয়েছেন বাইরন। মুর্শিদাবাদের তৃণমূল নেতা সঞ্জয় জৈনকে গালিগালাজ করার অভিযোগ ওঠে বায়রনের বিরুদ্ধে। সদ্য নির্বাচিত প্রতিনিধির বিরুদ্ধে এফআইআরও হয়। তাঁকে অবিলম্বে গ্রেফতার করা উচিত বলে সরব হয়েছিল ঘাসফুল শিবির। তবে নিজের অবস্থানে অনড় ছিলেন বাইরন। তিনি বলেছিলেন, তাঁকে ফাঁসানো হচ্ছে।
শপথের আগেই শুধু নয়, বাইরনের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল সাগরদিঘি উপনির্বাচনের আগেও। চাকরি দেওয়ার নাম করে যৌন হেনস্থার মতো গুরুতর অভিযোগ উঠেছিল বাইরনের বিরুদ্ধে। ব্ল্যাকমেল করা হচ্ছে বলে লিখিত অভিযোগও দায়ের করেছিলেন তিনি। তবে কংগ্রেসের দাবি ছিল, ভোটের আগে কালিমালিপ্ত করতেই এমন অভিযোগ আনা হচ্ছে।
মে মাসের গোড়ার দিকে ফিরে তাকানো যাক। সাগরদিঘিতে দাঁড়িয়ে উন্নয়নের পক্ষে সওয়াল করেন অভিষেক। কাজে সমস্যা হলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শও দিয়েছিলেন তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কমান্ড। বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর দরজা খোলা। আর জবাব দিতে গিয়ে বাইরন বলেছিলেন, ‘অবশ্যই যাব’। ২৯ মে দুপুরে যা ঘটল, তাতে প্রশ্ন উঠছে, অভিষেককে দেওয়া সেই কথাই কি রাখলেন বাইরন?