কলকাতা : নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মস্থান হিসেবে ওডিশা রাজ্যের কটকের নাম সবার জানা। কিন্তু সোনারপুরে গিয়ে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী মন্তব্য করেন, নেতাজির জন্ম সোনারপুরে। তা নিয়ে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। এই মন্তব্য ভুল বলে দাবি করে ক্ষমা চাইতে বলছে তৃণমূল। নেতাজি বিশেষজ্ঞের দাবি, জন্ম কটকে হলেও সোনারপুরের কোদালিয়ার সঙ্গে নাড়ির টান ছিল নেতাজির।
রবিবার সোনারপুরে এক সভায় উপস্থিত হয়ে শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, ‘সোনারপুর হল নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মস্থান। তাঁকে যদি আমরা সশরীরে পেতাম, তাহলে তিনি হতেন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী। তাহলে দেশে সবার মুখে হাসি থাকত, সবার পেটে ভাত থাকত। কিন্তু কংগ্রেস তা হতে দেয়নি। একটা পরিবার নেতাজিকে সামনে আসতে দেয়নি। আর তাই আজ আমি এসেছি নেতাজির পুণ্যভূমিতে।’
শুভেন্দুর এই বক্তব্যে ভুল তথ্য আছে বলে দাবি করে সরব হয়েছে তৃণমূল। শাসক দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘সবাই জানে সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মস্থান কটক। ভুল মন্তব্যের জন্য প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়া উচিত। নেতাজি নিয়ে বিকৃত তথ্য দেওয়ার জন্য ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ক্ষমা চাওয়া উচিত।’
নেতাজি গবেষক জয়ন্ত চৌধুরী বলেন, ‘জন্মস্থান কটক হলেও সোনারপুরের কোদালিয়ার সঙ্গে নেতাজির নাড়ির টান ছিল। তাঁর আত্মজীবনীতে এই গ্রামের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তাঁর বাবা জানকীনাথ বসু কর্মসূত্রে চলে গিয়েছিলেন কটকে। সেখানেই নেতাজির জন্ম। তবে পিতৃপুরুষের গ্রাম কোদালিয়ায় তাঁদের যাতায়াত ছিল।’ বিভিন্ন সূত্রে সেই প্রমাণ মেলে বলেই জানিয়েছেন জয়ন্ত চৌধুরী। তিনি আরও উল্লেখ করেছেন, প্রতি বছর নেতাজির বাবা-মা কটক থেকে কোদালিয়ায় যেতেন। দুর্গা পুজোর সময় নেতাজির যাওয়ার প্রমাণও মেলে। যে বছর যেতে পারতেন না, সে বছর নেতাজি চিঠি লিখতেন, এমনটাও জানা যায়।
কোদালিয়ায় বসু পরিবার তৈরি করেছিল দাতব্য হাসপাতাল। আজও সেখানে পুজোর ঘর, নেতাজির ব্যবহৃত জিনিসপত্র রাখা আছে। বসু পরিবারের অনেক আত্মীয় ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসবাস করেন কোদালিয়াতেই। হেরিটেজ কমিশন ও রাজ্যের পূর্ত দফতর মিলে নেতাজির পরিবারের বাসভবনের সংস্কার করেছে। বসু পরিবারের সম্মতির ভিত্তিতে জানকীনাথ বসু বাড়িটিকে যেভাবে তৈরি করেছিলেন, সেই আদল বজায় রেখে সংস্কারের কাজ করা হয়েছে।