কলকাতা : রাজ্যে মিনিবাস ও বেসরকারি বাসে (Bus and Minibus Fare) অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া হচ্ছে কি না তা নিয়ে হলফনামা চাইল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। মঙ্গলবার হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ এই নির্দেশ দিয়েছে। আদালতের থেকে বলা হয়েছে, পরিবহণ দফতরের সচিবকে হলফনামা দিয়ে জানাতে হবে বাসে ভাড়া নেওয়ার ক্ষেত্রে কী নিয়ম রয়েছে। নির্দিষ্ট কোনও তালিকা মেনে কি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে? নাকি ইচ্ছা মতো ভাড়া নেওয়া হচ্ছে? তা-ও জানাতে বলেছে আদালত। কোভিডের পর থেকে রাজ্যের বেসরকারি বাসগুলির জন্য কার্যত কোনও ভাড়া নীতি নেই। অনেক ক্ষেত্রে কোনও কোনও রুটে দ্বিগুণ ভাড়া নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। ২০১৮ সালের পরিবহণ আইন মানা হচ্ছে না বলেও অভিযোগ।
এমন ধরনের একাধিক অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা করেন আইনজীবী প্রতুষ পাটোয়ারি। আদালতে তাঁর আবেদন, ভাড়া নিয়ে নিজেদের পরিকল্পনা জানাক রাজ্যের পরিবহণ দফতর। হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, পরিবহণ সচিবের কী ক্ষমতা রয়েছে? ভাড়া নিয়ে কোনও নিয়ম রয়েছে কি না? তা চার সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট দিয়ে জানাতে হবে পরিবহণ দফতরকে।
উল্লেখ্য, রাজ্যে করোনা পরিস্থিতি এবং তার জেরে দেশব্যাপী লকডাউনের কারণে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ ছিল বাস মিনিবাস সহ সমস্ত গণ পরিবহন ব্যবস্থা। তারপর লকডাউন পর্ব মিটলেও করোনার একের পর এক ঢেউয়ে কার্যত মুখ থুবড়ে পড়েছে বাস মালিকদের সংগঠনগুলি। মুনাফা সেভাবে প্রায় ছিল না বললেই চলে। তার উপর মাঝে পেট্রো পণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি। সব মিলিয়ে তার জের গিয়ে পড়েছে বাস ও মিনিবাসের ভাড়ায়। কোনও নির্দিষ্ট ভাড়া কাঠামোর দেখা নেই। বিভিন্ন রুটের বাসগুলি নিজেদের খেয়ালখুশি মতো বাস ভাড়া নির্ধারণ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। কোথাও কোথাও তো আগের তুলনায় দ্বিগুণ বেড়েছে বাসভাড়া। আর তার জেরে বার বার হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে বাসযাত্রীদের। এই সবের মধ্যেই এবার বাস ও মিনিবাসগুলির ভাড়া প্রসঙ্গে রাজ্যের পরিবহন দফতরের হলফনামা চায় রাজ্য সরকার।
তবে রাজ্য সরকার অবশ্য এই মামলাটি খারিজ করার জন্য আবেদন জানিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টে। রাজ্যের বক্তব্য, কোনও রুটের বাসের সময়সূচি কিংবা কী ভাড়া হবে – গোটা বিষয়টাই দেখভাল করে পরিবহনেরর আঞ্চলিক কর্তৃপক্ষ। এ ক্ষেত্রে রাজ্য পরিবহন দফতর এই বিষয়গুলিতে হস্তক্ষেপ করে না। এই যুক্তি দেখিয়ে রাজ্য সরকারের তরফে আবেদন করা হয় মামলাটি খারিজ করা হয়।
আরও পড়ুন : AMTA Student Death: পুলিশ, ক্ষমতা আর রিজওয়ান- ১৫ বছর আগের স্মৃতি উস্কে দিচ্ছে আনিস মৃত্যু রহস্য