কলকাতা: গার্ডেনরিচ-কাণ্ডের পর নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। ইঞ্জিনিয়ার ও অফিসারদের ধমকও দিয়েছেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। কিন্তু অফিসারদের পক্ষে কি আদৌ কিছু করা সম্ভব? সেই প্রশ্ন তুললেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম। তাঁর মতে, দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের পক্ষেও কিছু করা সম্ভব নয়। কার্যত বেআইনি নির্মাণ নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন তিনি। প্রধান বিচারপতি উল্লেখ করেছেন, অনুমতি নিয়ে নির্মাণ করতে গেলেও কীভাবে সমস্যার মুখে পড়তে হয়। গার্ডেনরিচের ঘটনায় যাঁরা আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁদের পুনর্বাসনের জন্য কী পদক্ষেপ করেছে রাজ্য, সেটাও এদিন জানতে চায় হাইকোর্ট।
গত রবিবার মধ্যরাতে পাঁচতলা একটি বাড়ির একাংশ ভেঙে পড়ে ঝুপড়ির ওপর। গার্ডেনরিচের সেই ঘটনায় ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। বুধবারই সেই ইস্যুতে মামলা হয় হাইকোর্টে। প্রধান বিচারপতি এদিন নির্দেশ দেন, উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ ও আশ্রয়ের ব্যবস্থা করতে হবে রাজ্যকে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, সেটাও রিপোর্ট দিয়ে জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রাজ্যকে।
প্রধান বিচারপতি এদিন বলেন, “দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ কী করবে? এদের অবস্থা গুলি ছাড়া সৈনিকদের রাইফেল নিয়ে বর্ডারে দাঁড় করিয়ে দেওয়ার মতো। তারা টু হুইলারে করে যাবে এলাকায়, তারপর লোকের হাতে মার খাবে।” তিনি মনে করেন প্রতিটি পঞ্চায়েত সহ সব জায়গায় মনিটরিং সেল থাকা দরকার। যেখানে বাড়িটি তৈরি হচ্ছিল, সেখানে জলাভূমি ছিল বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রধান বিচারপতি বলেন, চার-পাঁচটি বিল্ডিং তৈরি রয়েছে। এটা কারও অগোচরে হতে পারে না।
পরিস্থিতি ঠিক কেমন, সেই প্রসঙ্গে বিচারপতি বলেন, “মনে করুন আপনি প্রয়োজনীয় অনুমতি নিয়ে হাফ লরি বালি, এক লরি ইট নির্মাণস্থলের সামনে রাখলেন। সঙ্গে সঙ্গে গুপ্তচর চলে আসবে, যাতে এলাকার কাউন্সিলর জানতে পারেন। কিন্তু যদি আমি কোনও অনুমতি না নিয়ে তিন লরি বালি আর দু লরি ইট নির্মাণস্থলে নিয়ে যাই, তাহলে কেউ আসবে না।” তিনি আরও বলেন, “সবথেকে খারাপ ব্যাপার হল, এরা জঘন্যভাবে এই সব নির্মাণ করে, তারপর বেচে দিয়ে চলে যায়।” প্রধান বিচারপতি আরও উল্লেখ করেন, জলাশয়ের ওপর নির্মাণ করতে অনেক গভীরে ভিত তৈরি করতে হয়, তার খরচও হয় অনেক বেশি।