কলকাতা: পঞ্চম শ্রেণির পড়ুয়া এক নাবালিকাকে গণধর্ষণের অভিযোগ পূর্ব মেদিনীপুরে। নির্যাতিতা নাবালিকা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। ওই নাবালিকার যত দ্রুত সম্ভব গর্ভপাত করানোর নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যর বেঞ্চ এই নির্দেশ দিয়েছে। নাবালিকার শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের দিকেও নজর দিতে বলা হয়েছে। সেই কারণে তমলুক হাসপাতালে পরিকাঠামো না থাকায় এসএসকেএম হাসপাতালে ওই নাবালিকাকে নিয়ে আসতে বলেছে হাইকোর্টে। বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য এদিন জানিয়েছেন, যত দ্রুত সম্ভব নাবালিকার গর্ভপাতের ব্যবস্থা করতে হবে এসএসকেএম হাসপাতালে।
প্রসঙ্গত, ওই নির্যাতিতা নাবালিকা ২৬ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা। পরিবারের লোকেরা যখন বিষয়টি জানতে পারেন, তখন ওই নাবালিকা ২৩ সপ্তাহ ৬ দিনের গর্ভবতী। বিষয়টি জানার পরেই পুলিশের কাছে অভিযোগ জানান তাঁরা। জানা যাচ্ছে, পাড়ায় খেলতে গিয়ে গণধর্ষণের শিকার হয় বছর এগারোর ওই কিশোরী। ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অভিযুক্ত তিনজনও নাবালক। এদিকে আইন অনুযায়ী, এসব ক্ষেত্রে গর্ভাবস্থার ২০ সপ্তাহ পর্যন্ত গর্ভপাতের ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন চিকিৎসকরা। তারপর গর্ভপাত করাতে হলে আদালতের অনুমতির প্রয়োজন হয়। সেই মতো আদালতের দ্বারস্থ হন পূর্ব মেদিনীপুরের কোলাঘাটের ওই নাবালিকার বাবা-মা।
নাবালিকার গর্ভপাত করাতে হলে সাধারণত আদালত মেডিকেল বোর্ড গঠনের নির্দেশ দিয়ে থাকে। মেডিকেল বোর্ড গর্ভবতী মায়ের শারীরিক অবস্থা খতিয়ে দেখে আদালতে নিজেদের রিপোর্ট দেয়। মূলত, গর্ভপাত করানো হলে কী হতে পারে, বা গর্ভপাত না করা হলে কী হতে পারে, সেই সব দিক খতিয়ে দেখে মেডিক্যাল বোর্ড। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে আদালত প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়ে থাকে। এক্ষেত্রে তমলুক হাসপাতালের তরফে হাইকোর্টে জমা দেওয়া রিপোর্টে গর্ভপাতের পক্ষে মত দেয়। তমলুক হাসপাতালের তরফে জানানো হয়, নাবালিকার শারীরিক ও মানসিক অবস্থা বিবেচনা করে দেখা গিয়েছে গর্ভপাতের প্রয়োজন রয়েছে।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি গুজরাট হাইকোর্টের গর্ভপাত সংক্রান্ত মামলায় এক পদক্ষেপের সমালোচনা করেছে সুপ্রিম কোর্ট। নির্যাতিতা মহিলার গর্ভপাতের আবেদনের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিয়ে গুজরাট হাইকোর্ট অযথা দেরি করছে বলে মন্তব্য করেছিল শীর্ষ আদালত।