কলকাতা: আবার ববিতা সরকার মামলার ছায়া হাইকোর্টে। রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারী কম নম্বর পেয়েও চাকরি পেয়েছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছিল। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে অঙ্কিতার নিয়োগ খারিজ করে ববিতাকে ওই পদে চাকরি দেওয়া হয়েছিল। এবার আরও এক চাকরিপ্রার্থী প্রিয়াঙ্কা সাউয়ের ক্ষেত্রেও একই ধরনের ঘটনা। প্রিয়ঙ্কার থেকে কম নম্বর পাওয়া এক ব্যক্তিকে এসএসসি চাকরি দিয়েছিল বলে অভিযোগ। প্রিয়ঙ্কা সাউয়ের মামলাটি উঠেছে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চে। আদালতের মন্তব্য, “পুজোর আগেই চাকরি দিন। এঁরা বহুদিন বসে আছে। ” বিচারপতি কমিশনের আইনজীবীকে বলেন, আজই আবেদনকারী ও তাঁর আইনজীবীকে নিয়ে বৈঠক করে আদালতকে পরবর্তী সপ্তাহে একটি রিপোর্ট দিতে।
আজ বিকেলে এই অর্ডার সমেত এসএসসিতে যাবেন মামলাকারী। আজই বিকেল ৫ টায় কমিশনের অফিসে প্রিয়াঙ্কা সাউ ও তাঁর আইনজীবীর সঙ্গে বৈঠক করতে হবে। এই বৈঠকের সিদ্ধান্ত বুধবারের মধ্যে আবেদনকারীকে জানাতে হবে চেয়ারম্যানকে। মামলার পরবর্তী শুনানি বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২ টোয়।
জানা গিয়েছে, ২০১৭ সালের মেধাতালিকা অনুযায়ী মূলত মহিলা ক্যাটেগরিতে ইন্টারভিউ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাঁর নম্বরের থেকে অন্যদের নম্বর বেশি থাকায় তাঁকে নম্বর দেওয়া সম্ভব হয়নি। তাই তাঁর নাম ছিল ওয়েটিং লিস্টে। এদিকে পরবর্তী সময়ে দেখা যায়, প্রিয়ঙ্কা সাউয়ের নাম ওয়েটিং লিস্টে থাকলেও, অন্যদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের মন্তব্য, “আদালত মনে করছে এই নিয়োগের যৌক্তিকতা আছে।” তাই বিচারপতি কমিশনের আইনজীবীকে বলেন, আজই আবেদনকারী ও তাঁর আইনজীবীকে নিয়ে বৈঠক করে আদালতকে পরবর্তী সপ্তাহে রিপোর্ট দিতে।
বিচারপতির প্রস্তাবে কমিশন সময় চাইলে বিচারপতির মন্তব্য, “পুজোর আগে চাকরি দিন। এঁরা অনেকদিন ধরে অপেক্ষা করছে।” সঙ্গে তাঁর আরও মন্তব্য, তিনি সমস্ত নথি খতিয়ে দেখছেন। কমিশন যাই রিপোর্ট দিক, পরবর্তী শুনানির দিন প্রিয়াঙ্কা সাউ-এর চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনা উজ্জ্বল।
বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করা হয়েছিল মামলাকারী চাকরিপ্রার্থী প্রিয়ঙ্কা সাউয়ের সঙ্গে। তিনি বলেন, “আমি একাদশ-দ্বাদশ ইংরেজি শিক্ষক পদপ্রার্থী। আমি যে নম্বর পেয়েছি, তার থেকে কম নম্বর পাওয়া সত্ত্বেও একজনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আমাকে কাউন্সেলিং-এ ডাকা হয়নি, কিছু জানানোও হয়নি। সেই কারণে আমি আদালতের দ্বারস্থ হই। আদালত নির্দেশ দিয়েছে, আমার আইনজীবী এবং কমিশনের আইনজীবীকে চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলতে। বিষয়টি নিয়ে কথা বলার জন্য নির্দেশ দিয়েছে কোর্ট।”
এই মামলা প্রসঙ্গে ববিতা সরকার বলেন, “যদি মেধার ভিত্তিতে কোনও কারচুপি হয়ে থাকে, তাহলে মেধার ভিত্তিতে তিনিও যোগ্য প্রার্থী। তাঁরও অবিলম্বে নিয়োগের প্রয়োজন আছে। সেটি বিবেচনা করে দেখা হবে। আশা করি, যদি তিনি সত্যিই মেধার ভিত্তিতে এগিয়ে থাকেন, তাহলে তিনিও চাকরি পেয়ে যাবেন।”