কলকাতা: মেধা তালিকায় নাম থাকলেও নিয়োগ করা হয়নি। পাবলিক সার্ভিস কমিশনে (PSC) নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ করে স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইবুনালের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court) দায়ের হয় মামলা। মঙ্গলবার স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনালের (SAT) নির্দেশ খারিজ করে কড়া নির্দেশ দিল বিচারপতি সৌমেন সেন ও বিচারপতি হিরন্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ।
২০১৬ সালে জুনিয়র সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পদে মোট ১৩৭৮টি শূন্য পদের জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করে পাবলিক সার্ভিস কমিশন (PSC)। এর পর ২০১৭ সালে জানুয়ারি মাসে মেধা তালিকা প্রকাশ করে তারা। কিন্তু পাবলিক সার্ভিস কমিশনের তরফে মোট ১০৮২ জনকে নিয়োগ করা হলেও মেধাতালিকায় নাম থাকা সত্ত্বেও ২৭৬ জনকে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। যদিও পরে আরও ১০২ টি নতুন করে শূন্যপদ সৃষ্টি হয়। অন্যদিকে ১০৮২ জনের মধ্যে থাকলেও চাকরি নেননি বেশ কয়েকজন।
চাকুরপ্রার্থী জনৈক কৌশিক চ্যাটার্জি-সহ মোট ৫৮ জন নিয়োগের জন্য আবেদন জানান পাবলিক সার্ভিস কমিশনে (PSC)। এদিকে পাবলিক সার্ভিস কমিশনের তরফে এই আবেদনকারীদের জানানো হয় নিয়োগের সময়সীমা পেরিয়ে গিয়েছে। অথচ, জানুয়ারি ২০১৯ সালে নতুন করে ৫৫ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। এরপরেই পিএসসি-র বিরুদ্ধে নালিশ জানিয়ে গত ২০১৯ সালে স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের হয়।
কিন্তু সেই মামলায় কোনও কারণ না দর্শিয়েই মামলাটি খারিজ করে দেয় স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইবুনাল। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করেই কলকাতা হাইকোর্টে দ্বারস্থ হন মামলাকারীরা।
মঙ্গলবার সংশ্লিষ্ট মামলার শুনানিতে কৌশিক চ্যাটার্জী সহ ৫৮ জন মামলাকারীরা পক্ষের আইনজীবী আশিস কুমার চৌধুরী জানান, স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনাল শূন্যপদ থাকা সত্ত্বেও আবেদনকারীদের নিয়োগ করেনি। কেন এই নিয়োগ দেওয়া হলো না, তার যথার্থ ব্যাখ্যা কিন্তু পাবলিক সার্ভিস কমিশন দিতে পারেনি। এদিকে তা সত্ত্বেও SAT মামলাকারীদের আবেদন খারিজ করে দেয়। যা সম্পূর্ণ অবৈধ বলে দাবি করেন মামলাকারীদের আইনজীবী।
অন্যদিকে পাবলিক সার্ভিস কমিশনের পক্ষের আইনজীবী প্রদীপ কুমার রায় সওয়াল করন, যোগ্য প্রার্থী না থাকাতেই এই নিয়োগ করা সম্ভব হয়নি। রাজ্য সরকারের পক্ষের আইনজীবী জানান বিষয়টি পিএসসি-র বিষয়। তাই পিএসসি-কেই এর ব্যাখ্যা দিতে হবে।
উভয় পক্ষের সওয়াল শোনার পর বিচারপতি সৌমেন্দ্র বিচারপতি হিরণময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনালের রায়ে খারিজ করে দেন। পাশাপাশি পাবলিক সার্ভিস কমিশন হলফনামা দিয়ে কারণ দর্শাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে কেন আবেদনকারীরদের মেধাতালিকায় নাম থাকা সত্ত্বেও তাঁদের নিয়োগ দেওয়া হল।
অবিলম্বে এর কারণ দর্শানোর পাশাপাশি স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনালকেও আগামী ৬ মাসের মধ্যে এই মামলা নিষ্পত্তি করতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ। যদি এর মধ্যে পাবলিক সার্ভিস কমিশন কোনও নিয়োগ করে তাহলে সেই নিয়োগপত্রে লিখে দিতে হবে যে মামলা বিচারাধীন। মামলার চূড়ান্ত রায়ের উপরেই চাকরিজীবীদের ভবিষ্যৎ নির্ভর করবে বলে সাফ জানায় কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। আরও পড়ুন: প্রায় ৩ বছর পর খুলল বাগরি মার্কেট, উদ্বোধনে ফিরহাদ-সুজিত বসু