কলকাতা: আরও বিপাকে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার। সাসপেন্ড হওয়ার নির্দেশে আপাতত কোনও স্থগিতাদেশ নয়। মঙ্গলবার এই মামলার শুনানি ছিল প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চে। সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশের উপর হস্তক্ষেপ করল না প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। রবীন্দ্রভারতীর রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ ছিল। তাঁকে সাসপেন্ড করার নির্দেশ দিয়েছিল সিঙ্গল বেঞ্চে। তার ভিত্তিতে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হন রেজিস্ট্রার। কিন্তু ডিভিশন বেঞ্চেও ধাক্কা খেলেন তিনি।
প্রসঙ্গত, বিশ্ববিদ্যালয়ের বাদ্যযন্ত্রী শিক্ষকদের অবসরের বয়স ৬৫ করা নিয়ে একাধিক নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি। অভিযোগ, তা পালন করেননি রেজিস্ট্রার। মামলার আবেদনকারী পার্থ ঘোষ নামে এক বাদ্যযন্ত্রী শিক্ষক। তাঁর বক্তব্য, ১৯৮৫ সালের বিধি অনুযায়ী শিক্ষক সমতুল্য পদের অধিকারী এবং বাদ্যযন্ত্রী-শিক্ষকদের নিয়ে এর আগেও হাই কোর্টের নানা নির্দেশ আছে। তা সত্ত্বেও ৬০ বছরে অবসরের চিঠি ধরানো হচ্ছে তাঁকে।
বিচারপতি কৌশিক চন্দের বেঞ্চে মামলাটি ওঠে। সবটা শোনার পর বিচারপতি নির্দেশ দিয়েছিলেন, অবসরের বয়স ৬৫, বকেয়া বেতন মেটানো এবং বাকি সব সুযোগ সুবিধা দিতে হবে মামলাকারীকে। কিন্তু তারপরও সেই নির্দেশ মানেননি রেজিস্ট্রার। তারপর তাঁর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ ওঠে।
আদালত শিক্ষা দফতরের বিশেষ সচিব এবং রবীন্দ্রভারতীর রেজিস্ট্রারকে কোর্টে তলব করা হয়েছিল। রেজিস্ট্রার জানিয়েছিলেন, তিনি সেই নির্দেশ মানতে পারবেন না। বিচারপতি চন্দের পর্যবেক্ষণ ছিল, রেজিস্ট্রার অহংকারী। সিঙ্গল বেঞ্চে তাঁকে সাসপেন্ড করার নির্দেশ দেন। বিচারপতির নির্দেশ অনুযায়ী, রেজিস্ট্রাকে গত সোমবার সাসপেনশন নির্দেশিকা জারি করেন রবীন্দ্রভারতীর উপাচার্য।
সিঙ্গেল বেঞ্চের আদালত অবমাননা সংক্রান্ত নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে যান রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার। সেই মামলায় এদিন আদালতের প্রশ্ন ছিল, “বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কার্যকলাপ রেজিস্ট্রারের মাধ্যমেই হয়। রাজ্য বা বিশ্ববিদ্যালয় ডিভিশন বেঞ্চে কেন আবেদন করলেন না! আপনি করলেন কেন?”
রেজিস্ট্রারের আইনজীবীর বক্তব্য, “উপাচার্য অর্ডার ইস্যু করে দিয়েছে। রেজিস্ট্রার অসুস্থ। তাও সিঙ্গল বেঞ্চ সাসপেন্ড করেছেন।” প্রধান বিচারপতি বলেন, “আপনারা সিঙ্গল বেঞ্চে যান। সেখানে বলুন ওঁ (রেজিস্ট্রার) অ্যারোগেন্ট নয়। ওঁর পরিস্থিতির জন্য এই জাতীয় ব্যবহার করেছেন।”