কলকাতা: মইদুল ইসলামের দায়ের করা মামলার শুনানিতে অ্যাডভোকেট জেনারেল জানালেন, গ্রেফতারি নয় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গিয়েছিল পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতে শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক মইদুল ইসলামের বাড়িতে পুলিশের যে বিরাট বাহিনী হাজির হয়েছিল, তা শুধুমাত্র জিজ্ঞাসাবাদের জন্যই। শুক্রবার এমনটাই আদালতে (Calcutta High Court) জানালেন অ্যাডভোকেট জেনারেল (AG) কিশোর দত্ত।
শুক্রবার মইদুল ইসলামের (SSK Teacher Moidul Islam) আইনজীবী বিচারপতি রাজশেখর মান্থার সামনে জানতে চান, যে ভাবে বৃহস্পতিবার রাতে কেবল মাত্র জিজ্ঞাসাবাদ করতে পুলিশ তাঁর মক্কেলের বাড়িতে গিয়েছিল, তা কি কোনও গণতান্ত্রিক দেশে করা যায়? সেখানে রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হয়, শুধুমাত্র একটি এফআইআর-এর ভিত্তিতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্যই পুলিশ গিয়েছিল। তাঁকে না পেয়ে শেষ পর্যন্ত একটি জেনারেল ডায়েরি বা জিডি করা হয়েছে। মইদুলকে গ্রেফতার করা হয়নি।
এজি কিশোর দত্তের এই আশ্বাস পেয়েই বিচারপতি জানান, আপাতত এ বিষয়ে কোনও আলোকপাত করছেন না। ভবিষ্যতে যদি মইদুলকে এই মামলার জন্য গ্রেফতার করা হয় তা হলে সেই সময় মইদুল আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণের সুযোগ পাবেন। মামলাটির নিষ্পত্তি বিচারপতি করেননি। অর্থাৎ গোটা ঘটনা পর্যবেক্ষণে থাকছে আদালতের। এদিন আলাদা করে কোনও রক্ষা কবচ মইদুলকে দেয়নি আদালত। তবে পরবর্তী কালে প্রয়োজন পড়লে পুলিশের বিরুদ্ধে মইদুলের তোলা অতি সক্রিয়তার অভিযোগ খতিয়ে দেখবে আদালত।
যদিও এদিন মইদুল ইসলাম বলেন, “আদালতের যে পর্যবেক্ষণ তাতে আমি খুবই খুশি। আদালতে মাননীয় অ্যাডভোকেট জেনারেল মহাশয় রাজ্যের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। উনি জানিয়েছেন, পুলিশ গ্রেফতার করতে আসেনি। অথচ বাংলার মানুষ দেখেছেন ২০০ পুলিশ নিয়ে কী ভাবে রাত ১১টা থেকে প্রায় চোদ্দ ঘণ্টা পুলিশ দুর্গের মতো কী ভাবে আমার বাড়ি ঘিরে রেখেছে। কী ভাবে লাথি মারছে, দরজা ভাঙার উপক্রম করছে, আমার শ্বশুরকে আমাকে হুমকি দিচ্ছে। অথচ অ্যাডভোকেট জেনারেল বলছেন, নোটিস দিতে গিয়েছে।”
মইদুলের প্রশ্ন, “রাত ১২টার সময় ২০০ পুলিশকে নিয়ে কোন শিক্ষকের বাড়িতে নোটিস সার্ভ করতে যায় কেউ? এমনকী শুক্রবার দুপুর গড়িয়েও আমার বাড়ির সামনে পুলিশ রয়েছে। জানি না আদালতে এ কথা কী করে বলা হল। রাজ্যের আদালতে এক রকম অবস্থান, বাইরে এক রকম অবস্থান। তবু অ্যাডভোকেট জেনারেলের মতো একটা পদ আশ্বস্ত করেছেন যে জিডি করে নোটিস দিতে এসেছিল পুলিশ। আগামিদিনে গ্রেফতার করলে তা আদালতকে জানানোর কথাও উনি বলেছেন। আমার আইনজীবী এটা রেকর্ড করিয়েছেন, এর পর কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে তা দেখা হবে।”
একই সঙ্গে শিক্ষক সংগঠনের এই নেতা জানান, গ্রেফতারির সম্ভাবনা তিনি উড়িয়ে দিচ্ছেন না। মইদুল ইসলামের সংযোজন, “এই সরকারের দ্বারা হবে না এমন কিছু নেই। বিরোধিতা করলেই, সমালোচনা করলেই এরা তাঁদের বিরোধী ভাবতে শুরু করে। প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে ওঠে। আমরা তার শিকার হচ্ছি, অনেকেই হচ্ছেন। বাংলার মানুষ তো দেখল কী হল বৃহস্পতিবার। এটা শুধু একটা নোটিস দিতে আসা?”
সারদা-নারদ কাণ্ডে অভিযুক্তদেরও বাড়ির দেওয়ালে সিবিআই-ইডি নোটিস সাঁটিয়ে দিয়ে আসে, অথচ একজন শিক্ষককে নোটিস ই-মেল করেও দেওয়া গেল না? ২০০ পুলিশ নিয়ে মাঝরাতে হুজ্জুতি করার সত্যি কি দরকার ছিল? প্রশ্ন তুলেছেন মইদুল ইসলাম।
আরও পড়ুন: Exclusive Rudranil Ghosh: কেন প্রিয়াঙ্কা? কেন হারলেন? ভবানীপুরে প্রার্থীর নাম শুনে ব্যাখ্যা রুদ্রর