কলকাতা : ৩৬ হাজার প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকার চাকরি বাতিল করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। নিয়োগে ব্যাপক বেনিয়মের অভিযোগ ওঠায় এই নির্দেশ দিয়েছে আদালত। যাঁদের নাম সেই তালিকায় থাকবে, তাঁরা আগামী ৪ মাস প্যারা টিচারের বেতন নিয়ে কাজ করতে পারবেন বলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চের তরফে। একই সঙ্গে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, আগামী তিন মাসের মধ্যে নিয়োগ করতে হবে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে। সেই নিয়োগে অংশ নিতে পারবেন ২০১৪-র টেট উত্তীর্ণরা। সেই সংখ্যাটা ছিল, ১ লক্ষ ২৫ হাজার। তাঁরাই আবেদন করতে পারবেন বলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, বর্তমানে প্রাথমিক শিক্ষক অর্থাৎ যাঁদের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তাঁদের বেতন ৩৩ হাজার টাকা। আর প্যারাটিচারদের বেতন ১০ হাজার ৬০৯ টাকা। অর্থাৎ আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, আগামী চার মাস এই ১০ হাজার টাকাতেই কাজ করতে হবে ৩৬ হাজার শিক্ষককে।
যাঁদের চাকরি চলে যাচ্ছে, তাঁদের মধ্যে যাঁরা ইতিমধ্যে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন, তাঁরাও নতুন নিয়োগে অংশ নিতে পারবেন। স্বচ্ছ নিয়োগের বার্তা দিতেই এই সিদ্ধান্ত আদালতের। আদালতের পর্যবেক্ষণ, যেভাবে ইন্টারভিউ হয়েছে, তাতে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। তাই নতুনভাবে নিয়োগ করার কথা বলেছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্য়ায়। তবে যাঁদের চাকরি চলে যাচ্ছে, তাঁদের একটা সুযোগ দেওয়া হয়েছে আদালতের তরফে।
একটা নিয়োগ প্রক্রিয়া এখনও চলছে। ২০২২ সালে যে টেট পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে, তাতেও ২০১৪-র টেট উত্তীর্ণরা অংশ নিয়েছেন। এখনও তাঁদের ইন্টারভিউ-এর প্রক্রিয়া চলছে। এরই মধ্যে আরও একটি নিয়োগ প্রক্রিয়া চালাতে পর্ষদকে জটিলতায় পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।
২০১৪-র টেট অনুযায়ী, ২০১৬ সালে যে নিয়োগ হয়, তাতে প্রাথমিকে ৪২ হাজার ৫০০ জন শিক্ষকের নিয়োগ হয়েছিল। তার মধ্যে ৩৬ হাজার অপ্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের চাকরি খারিজের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। এরপরই প্রশ্ন ওঠে, যাঁরা এতদিন ধরে বিভিন্ন স্কুলগুলিতে চাকরি করছিলেন, সেই স্কুলগুলির কী হবে? সেই পরিস্থিতি সামাল দিতেই প্যারাটিচারের বেতনে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আদালতের তরফে।