কলকাতা: ইস্টার্ন কোলফিল্ডের অধীনস্থ স্কুলে ঠিকঠাক বেতন না দেওয়ার অভিযোগ। কোনও শিক্ষকের দশ মাস, আবার কোনও শিক্ষকের সাত বছর ধরে বেতন আটকে পড়ে রয়েছে বলে অভিযোগ। আর এই নিয়েই কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন ইস্টার্ন কোলফিল্ডের অধীনস্থ স্কুলের শিক্ষকদের একাংশ। মামলাটি ওঠে হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে। সেই মামলায় সোমবার কড়া নির্দেশ দিল বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের একক বেঞ্চ। ইস্টার্ন কোলফিল্ডকে চার লাখ টাকা জরিমানা করল আদালত। হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে ওই টাকা জমা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
শিক্ষকরা ঠিকঠাক বেতন না পাওয়ার অভিযোগে এর আগেও কলকাতা হাইকোর্টে মামলা হয়েছিল। তারপর আবার এই বেতন সমস্যা নিয়ে মামলা হওয়ায় বেশ বিরক্ত বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। শিক্ষকদের ঠিকঠাক বেতন দিতে না পারায় হাইকোর্টের রোষের মুখে ইস্টার্ন কোলফিল্ড। যে শিক্ষকদের বেতন আটকে রয়েছে বলে অভিযোগ, তাঁদের মাসিক বেতন মাত্র পাঁচ হাজার টাকা। কিন্তু সেই টাকাও ইস্টার্ন কোলফিল্ড আটকে রেখেছে বলে অভিযোগ। সেই মামলায় ইস্টার্ন কোলফিল্ডকে ভর্ৎসনা করে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘এটা কি কোনও সভ্য নাগরিক সহ্য করবে? ন্যায়ালয় কি সহ্য করবে?’
এরপর বিচারপতি ইস্টার্ন কোলফিল্ডকে চার লাখ টাকা জরিমানার নির্দেশ দেওয়ায় তাতে আপত্তি জানান ইস্টার্ন কোলফিল্ডের আইনজীবী। তাঁর বক্তব্য, এই শিক্ষকরা ইস্টার্ন কোলফিল্ডের কর্মী নন। কোলফিল্ডের আইনজীবী বোঝাতে চান, তারা স্কুলগুলিতে কেবল অনুদান দিত। সেখানকার শিক্ষকরা কোলফিল্ডের স্থায়ী কর্মী নন। সেক্ষেত্রে হাইকোর্টের নির্দেশের ফলে ইস্টার্ন কোলফিল্ডের সমস্যা হবে বলেও জানান তিনি। তাতে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের মন্তব্য, ‘সমস্যা হলে, সমস্যা হবে। আপনারা খুব কেয়ারলেস। শুধু শিক্ষকদের বেতন না দেওয়ার ব্যাপারে আপনারা খুব সিরিয়াস।’ বিষয়টি নিয়ে স্পেশাল অফিসারের রিপোর্টের কথাও উল্লেখ করেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। সেই রিপোর্টেও যে টাকা আটকে রাখার বিষয়টি উল্লেখ রয়েছে, তাও এদিন শুনানির সময়ে বলেন বিচারপতি। ইস্টার্ন কোলফিল্ডের আইনজীবীকে প্রশ্ন করেন, তিনি কি সেই রিপোর্ট অস্বীকার করতে পারেন?
ইস্টার্ন কোলফিল্ডকে তীব্র ভর্ৎসনা করে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় প্রশ্ন করেন, ‘ওরা কি ভিখারি নাকি? সিবিআইকে বলতে পারি ওই মামলায় তদন্ত করার জন্য। আমি সেই সব শিক্ষকের জন্য নির্দেশ দেব, যারা মাত্র পাঁচ হাজার টাকার জন্য আদালত পর্যন্ত ছুটে এসেছেন।’