কলকাতা: মামলা থেকে সরে দাঁড়াতে চাইলেন এসএসসির আইনজীবী। হাইকোর্টের এজলাসেই সরে দাঁড়ানোর ইচ্ছা প্রকাশ করলেন শুক্রবার। হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চ বারবার স্কুল সার্ভিস কমিশনের কাছে বেশ কিছু তথ্য় চেয়েছিল। প্রায় দু’সপ্তাহ পার হয়ে যাওয়ার পর আজ আদালতে যখন সেই তথ্য চায়, এসএসসির আইনজীবী বলেন, জায়গাটা ছোট। সবটা ভাল করে লিখতে পারছেন না। বেশ কিছু সমস্যা হচ্ছে ডেটা পেতে। পরবর্তী সময়ে তিনি বলেন, বারবার চাওয়ার পরও এসএসসির অফিসারদের কাছ থেকে তিনি কোনও সহায়তা পাচ্ছেন না। এরপরই বিচারপতি বলেন, আর দেরি করা যাবে না। তখনই এসএসসির আইনজীবী সুতনু পাত্র মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হোক।
এদিকে এরপরই এসএসসির চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদারকে ডেকে পাঠানো হয় আদালতে। আদালতের প্রশ্নের মুখে পড়েন তিনি। আগামী সোমবার ফের মামলার শুনানি। সেদিন যাবতীয় তথ্য নিয়ে আসতে বলা হয়েছে বিশেষ বেঞ্চের পক্ষ থেকে।
এই মামলায় স্কুল সার্ভিস কমিশনের বোর্ডের সমস্ত সদস্যদের তলব করে আদালত। এদিনই উপস্থিত থাকার নির্দেশ দেয় বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চ। দুপুর সাড়ে ১২টার মধ্যে হাজিরার নির্দেশ দেন বিচারপতি। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে এজলাসে উপস্থিত হন স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার সহ আরও দুই সদস্য।
স্কুল সার্ভিস কমিশনের আইনজীবীকে বিচারপতি প্রশ্ন করেন, আপনারা কী লুকোতে চাইছেন এবং কেন লুকাতে চাইছেন? তাতে এসএসসির আইনজীবী সতনু পাত্র বলেন, তিনি এই মামলা থেকে সরে দাঁড়াতে চান। তা শুনে বিচারপতি বলেন, সেটা কমিশনের বোর্ড মেম্বারদের উপস্থিতিতে ঠিক করবেন।
এদিন ওএমআর স্ক্যান ও মূল্যায়ণকারী সংস্থা নাইসা (NYSA) সংক্রান্ত কিছু প্রশ্ন করেন বিচারপতি দেবাংশু বসাক। যা শুনে স্কুল সার্ভিস কমিশনের আইনজীবী জানান, এ জবাব আজ দেওয়া সম্ভব নয়। কমিশনের কাছ থেকে নির্দিষ্ট করে উত্তর নিয়ে তারপর জানাতে হবে। আদালত জানতে চায়, কোনও প্রশ্ন করে উত্তর দেওয়ার সময় চাইলে মামলা এগোবে কী করে?
এরপরই কমিশনের আইনজীবী বলেন, ‘এই এজলাসে কীভাবে শুনানি হয় আপনি দেখছেন। ঠিক করে দাঁড়াবার মত জায়গা থাকে না। শেষ চার পাঁচ দিন বসার মতো চেয়ার পাওয়া যায়নি। বাকিরা কী বক্তব্য রাখছেন বা আদালত কী প্রশ্ন করছে ঠিক করে লিখব কী করে?‘
এ কথা শুনে বিচারপতি মন্তব্য করেন, ‘কী করা যাবে বলুন। আমরা জানি এই এজলাস ছোট। এসএসসির মত বড় বড় অনেক বাড়ি আমাদের নেই যে একটা বাড়ি থেকে সুপারিশ পত্র দেওয়া হবে, একটি বাড়ি থেকে এসএমএস পাঠানো হবে।’ এদিন স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদারকে বিচারপতি প্রশ্ন করেন,
আদালতে সিবিআই একটি সংস্থার নাম উল্লেখ করে। দাবি করে, ওএমআর মূল্যায়ণ ও স্ক্যান করার ক্ষেত্রে এই সংস্থার ভূমিকা আছে। এরপরই স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদারকে বিচারপতি প্রশ্ন করেন, সিবিআইয়ের হলফনামা পড়েছেন কি না। কমিশন চেয়ারম্যান জানান, এমন সংস্থার নাম তিনি প্রথম শুনলেন। বিচারপতি প্রশ্ন করেন, ‘ফেব্রুয়ারি মাসে এই হলফনামা দাখিল হয়েছে। সেটা পড়ে দেখার সময় পাননি ? কত মানুষের জীবন জড়িত আছে এর সঙ্গে।’ কমিশন সোমবার অবধি সময় চায়। সোমবার পরবর্তী শুনানি।