TV9 EXCLUSIVE: ‘রাজনৈতিক যুদ্ধের জন্য কি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকাণ্ড থেমে যাবে?’, প্রশ্ন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্যের

সুমন মহাপাত্র | Edited By: Soumya Saha

Jun 03, 2023 | 11:40 AM

University of Calcutta: নবনিযুক্ত অন্তর্বর্তী উপাচার্যদের রাজ্য সরকার 'স্বীকৃতি' না দেওয়ার ফলে নতুন করে জটিলতা তৈরি হয়েছে বলেই মনে করছেন শিক্ষক মহলের একাংশ। আর এরই মধ্যে টিভি নাইন বাংলায় একান্ত ফোনালাপে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্য সান্তা দত্ত। গোটা বিষয়টি কীভাবে দেখছেন তিনি?

TV9 EXCLUSIVE: রাজনৈতিক যুদ্ধের জন্য কি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকাণ্ড থেমে যাবে?, প্রশ্ন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্যের
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্য

Follow Us

কলকাতা: রাজ্যের ১০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে কার্যকরী উপাচার্য নিয়োগের যে সিদ্ধান্ত রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস (CV Ananda Bose) নিয়েছেন, তা নিয়ে জোর বিতর্ক শুরু হয়েছে রাজ্যের রাজনৈতিক ও শিক্ষা মহলে। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু (Bratya Basu) সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়ে দিয়েছেন, রাজ্যপালের এই সিদ্ধান্ত রাজ্য মানছে না। এর জন্য আইনি পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। নবনিযুক্ত অন্তর্বর্তী উপাচার্যদের রাজ্য সরকার ‘স্বীকৃতি’ না দেওয়ার ফলে নতুন করে জটিলতা তৈরি হয়েছে বলেই মনে করছেন শিক্ষক মহলের একাংশ। আর এরই মধ্যে টিভি নাইন বাংলায় একান্ত ফোনালাপে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্য সান্তা দত্ত। গোটা বিষয়টি কীভাবে দেখছেন তিনি?

সান্তা দত্ত জানাচ্ছেন, তিনি কোনও রাজনৈতিক দলের সান্নিধ্যে নেই। শুধুমাত্র পড়ুয়াদের কথাই সর্বক্ষণ ভাবেন। নিজেকে ‘আদ্যান্ত শিক্ষাবিদ’ হিসেবে দেখতেই বেশি পছন্দ করেন তিনি। টিভি নাইন বাংলাকে জানালেন, ‘সম্ভবত কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র মোস্ট প্রফেসর আমি। এর আগে ডিন অব ফ্যাকাল্টি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি।’ একদিন হঠাৎ করেই রাজ্যপালের দফতর থেকে তাঁর কাছে ফোন যায়। ডেকে পাঠানো হয় তাঁকে। তখনও তিনি এসব কিছুই জানতেন না। রাজ্যপালের অফিস থেকে ফোন পাওয়ার পর কেন তিনি সেখানে গেলেন, সেই কথাও জানালেন। বললেন, ‘যে কেউ ডাকলে তো চলে যাব না নিশ্চয়ই। রাজ্যপাল ডেকেছেন মানে আচার্য ডেকেছেন। আমাদের যা কিছু নিয়োগ হয়, সব আচার্যই করেন। এমন অবস্থায় রাজ্যপাল ডেকেছেন। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়েও একটি বিরাট ভ্যাকুউম তৈরি হয়েছিল। পড়ুয়াদের ক্ষতি হচ্ছিল। কাজের ক্ষতি হচ্ছিল। সেই কারণে যখন তিনি ডাকেন, আমি চলে যাই।’

রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা হওয়ার পর শিক্ষাগত বিভিন্ন দিক নিয়ে সান্তা দত্তের কথা হয়। সান্তা দত্তের বিষয়ে আগে থেকেই খোঁজখবর নিয়েছিলেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তবর্তী উপাচার্য জানালেন রাজ্যপাল তাঁকে বলেছেন, ‘যে কোনও রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় থাকা কাউকে বসানো হলে, তার প্রভাব বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর পড়ে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের গরিমা নষ্ট হয়। কাজের ক্ষেত্রে মানুষকে রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠতে হয়।’ সান্তা দত্ত জানালেন, রাজ্যপাল তাঁর বায়ো ডেটা দেখে সন্তুষ্ট হন এবং তাঁর কাছে জানতে চান তিনি সুযোগ পেলে এই দায়িত্ব নিতে চান কি না। পরবর্তী সময়ে সান্তা দত্তের ইমেলে অন্তর্বর্তী উপাচার্য হিসেবে নিযুক্ত হওয়ার কথা জানানো হয়।

সান্তা দত্তর স্পষ্ট কথা, এটা তো অন্তবর্তী উপাচার্যের পদ। এটা যদি স্থায়ী কোনও পদ হত, তাহলে না হয় সার্চ কমিটি দিয়ে করা যেত। এরপর নিশ্চয়ই হবে সেগুলি। কিন্তু অন্তর্বর্তী পদে থেকে এই অচলাবস্থাকে সচল করাই আমার উদ্দেশ্য।’ জানালেন, তিনি যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের ঘরে গিয়ে বসেন, তখন গ্রহণযোগ্যতাও পেয়েছেন তিনি। কিন্তু শিক্ষামন্ত্রী যে বলছেন, এই অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগ রাজ্য মানছে না? সান্তা দত্ত জানাচ্ছেন, ‘উনি বলছেন মানেন না, তো আমি আর কী করতে পারি? কোনও কাজ করার আগে, কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে অবশ্যই আমাকে নিয়ম মেনে চলতে হবে। কিন্তু আচার্য আমাকে অন্তর্বর্তী উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ করছেন, সেটা উনি বলছেন মানবেন না, এতে আমার কিছু বলার নেই। এটা ওনার ব্যাপার। আমার জানা নেই, উনি এরকম বলতে পারেন কি না। অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে এতটা কেন সমস্যা হচ্ছে ওনাদের, তা বুঝতে পারছি না।’

তাঁর বক্তব্য, এই পরিস্থিতি নতুন নয়। এর শিকড় অনেকদিনের পুরনো। বলছেন, ‘এটা বাম জমানা থেকে শুরু হয়েছিল। যেন সব নিয়োগ রাজনৈতিক হতে হবে। এর থেকেই শুরু হয়েছে এই বিষয়টি। একটু ছাত্র-ছাত্রীদের কথা ভাবলে… একজন মাত্র রেজিস্ট্রার, এতদিন কোনও উপাচার্য ছিলেন না। এত বড় একটা বিশ্ববিদ্যালয়, সেই কর্মকাণ্ড থেমে যাবে রাজনৈতিক যুদ্ধের জন্য? এর বীজ আজকের নয়, বহুদিনের। রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে কখনও কোন কাজ হলে, তা কখনও ছাত্রছাত্রীদের জন্য হয় না।’

 

Next Article