কলকাতা: উপাচার্য নিয়োগ (Vice Chancellor Appointment) ঘিরে রাজ্য – রাজ্যপালের সংঘাতের সুর কি এবার আরও চওড়া হচ্ছে? এমন প্রশ্ন ইতিমধ্যেই উঠতে শুরু করেছে বিভিন্ন মহলে। কারণ, উপাচার্য নিয়োগের পর আরও একধাপ এগিয়েছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস (CV Ananda Bose)। পড়ুয়াদের স্বার্থে নব নিযুক্ত উপাচার্যদের সঙ্গে নিয়ে ‘কলকাতা কমিটমেন্ট’ (Kolkata Commitment) পাঠ করিয়েছেন রাজ্যপাল। গতকাল, ১০ জন নবনিযুক্ত উপাচার্য গতকাল রাজভবনে একটি কনক্লেভে বসেন। আচার্য তথা রাজ্যপালকে তাঁরা পশ্চিমবঙ্গের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির শিক্ষা ব্যবস্থাকে ভারতের মধ্যে সেরা হিসেবে তুলে ধরার জন্য় তাঁদের সংকল্পের কথা জানান। সেই ক্যালকাটা কমিটমেন্ট বা কলকাতা প্রতিশ্রুতিতে ১৫ দফা কর্মসূচির কথা প্রস্তাবিত হয়েছে। কী কী কর্মসূচির কথা উল্লেখ করা হয়েছে সেখানে?
রাজভবনের তরফে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির শিক্ষাকে ভারতের মধ্যে সেরা স্তরে নিয়ে আসার ভাবনার কথা বলা হয়েছে ওই প্রস্তাবে। এর পাশাপাশি এই সংকল্প বাস্তবিক ক্ষেত্রে যাতে পরিপূর্ণতা পায়, সেই কথাও বলা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উদ্বেগ, দ্বিতীয় উদ্বেগ এবং তৃতীয় উদ্বেগ… পুরোটাই যে পড়ুয়াকেন্দ্রিক সেই বিষয়টিও স্পষ্ট করা হয়েছে সেখানে। একইসঙ্গে দলগত ও সাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক কার্যকলাপ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে দূরে রাখার প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীদের জন্য যাতে একটি অনুকূল ইকো সিস্টেম তৈরি করা যায়, সেই বিষয়টির উপর আরও নজর দিতে বলা হয়েছে।
জোর দেওয়া হয়েছে পড়ুয়াদের জন্য বিভিন্ন সামাজিক আউটরিচ প্রোগ্রামের উপরে। রাজ্য সরকার যে নতুন শিক্ষানীতি গ্রহণ করছে, সেটি কার্যকর করা এবং সেই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির পরিকাঠামোগত উন্নয়নে আরও জোর দিতে বলা হয়েছে। পড়ুয়াদের মধ্যে লুকিয়ে থাকা পাঠ্যক্রম বহির্ভূত বিভিন্ন প্রতিভাগুলিকেও চিহ্নিত করে সেগুলিকে আরও যত্নে লালিত-পালিত করার সুযোগ করে দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে ওই প্রস্তাবে। ডিজিটাল লার্নিং, গবেষণামূলক পড়াশোনার উপর আরও নজর দিতে বলা হয়েছে। এর পাশাপাশি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়গুলি থেকে মেধাবী পড়ুয়াদের চিহ্নিত করে তাঁদের রাজ্যপালের গোল্ডেন গ্রুপের তালিকাভুক্ত করার কথাও বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, রাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়গুলির জন্য কার্যকরী উপাচার্য নিয়োগের যে সিদ্ধান্ত রাজ্যপাল নিয়েছেন, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজভবনের সঙ্গে রাজ্যের সংঘাতের বাতাবরণ তৈরি হয়েছে। রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, এই সিদ্ধান্ত রাজ্য মানছে না এবং এর জন্য প্রয়োজনীয় আইনি পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন ব্রাত্য বসু। আর এরই মধ্য়ে রাজ্যপাল তথা আচার্য সিভি আনন্দ বোস নবনিযুক্ত উপাচার্যদের নিয়ে বৈঠক করলেন। শুধু তাই নয়, ওই বৈঠকে ‘কলকাতা কমিটমেন্ট’ অঙ্গীকারও পাঠ করানো হয়। আর এই নিয়েই রাজ্য – রাজ্যপালের সংঘাতের বাতাবরণ আরও বাড়ল বলেই মনে করছেন শিক্ষাবিদদের একাংশ।