কলকাতা: বিধানসভা ভোটের ফলপ্রকাশের পর চার মাস কেটে গেল। কিন্তু এখনও পর্যন্ত নিয়ম মেনে উপনির্বাচন ঘোষণা করেনি নির্বাচন কমিশন। যা নিয়ে এবার কলকাতা হাইকোর্টে মামলার জল গড়াতে চলেছে বলে খবর। মাসের পর মাস পেরিয়ে গেলেও রাজ্যের ৫ আসনে উপনির্বাচন ও ২ আসনে নির্বাচন ঘোষণা না হওয়ায় কমিশনের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করতে চলেছেন এই আইনজীবী। শীঘ্রই ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির এজলাসে মামলাটির শুনানি হতে পারে বলেও জানা যাচ্ছে।
৬ মাসের মধ্যে উপনির্বাচন না হলে মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ার ছাড়তে হবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। ফলে হাতে আর দু-মাস সময় রয়েছে। এই অবস্থায় পুজোর আগেই ভোট চেয়ে কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছে তৃণমূল। কমিশনও আস্তে আস্তে সক্রিয়তা দেখাতে শুরু করেছে। কিন্তু ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা হওয়ার সম্ভাবনা এখনও দেখা যায়নি। এই বিষয়টি নিয়েই মামলা দায়ের করেছেন কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী রমাপ্রসাদ সরকার।
সূত্রের খবর, আগামী সপ্তাহেই ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দাল ও রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চে মামলাটি শুনানির জন্য উঠতে পারে। দ্রুত শুনানির জন্য আবেদনও করা হবে বলে জানা যাচ্ছে। নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে মামলাকারীর প্রশ্ন, কেন এখনও পর্যন্ত তারা ভোট ঘোষণা করতে পারল না? এই মর্মেই কমিশনের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের হতে চলেছে বলে খবর।
সূত্রের খবর, নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে হওয়া মামলায় শুধু নির্বাচন কমিশন নয়, এই মামলায় ‘পক্ষ’ হিসেবে যুক্ত করা হতে পারে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক, রাজ্যের মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, এমনকী, রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিককেও।
কমিশন যদিও একেবারেই হাত গুটিয়ে বসে নেই। গতকালই ৭টি রাজ্য-সহ এ রাজ্যের ডেপুটি সিওদের সঙ্গে বৈঠক করে কমিশন। সূত্রের খবর, সেই বৈঠকেই আগামী সময় পুজোর ছুটির কথা উল্লেখ করে এখনই নির্বাচনের পক্ষে সায় দেন কমিশন কর্তারা।
সূত্র মারফৎ জানা গিয়েছে, বুধবারের বৈঠকে মূল তিনটি বিষয় জানতে চাওয়া হয় কমিশনের পক্ষ থেকে। প্রথমত, রাজ্যে কোভিড পরিস্থিতি কেমন? দ্বিতীয়ত, পুজোর ছুটি কবে থেকে কতদিন পর্যন্ত? তৃতীয়ত, রাজ্যে বন্যার পরিস্থিতি এখন কেমন?যারা ভোটের কাজে যুক্ত, সবাইকে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে কি না সে প্রসঙ্গও উঠে আসে বৈঠকে। রাজ্যের কমিশন কর্তারা জানিয়েছেন, তাঁরা ভোট করতে প্রস্তুত। এই মুহুর্তে ভোট হলে সমস্যা নেই। কারণ অক্টোবরে ১০ থেকে ২৪ তারিখ পর্যন্ত ছুটি থাকছে দফতরে। ফলে এখনই ভোটের দিন ঘোষণা হলে ২৪ দিনের মাথায় ভোট করতে সমস্যা হবে না।
বৈঠকে অন্যান্য রাজ্যের পক্ষ থেকে দশেরা, দীপাবলি প্রভৃতি উৎসবের কথাও উঠে আসে। উঠে আসে আইন শৃঙ্খলার প্রসঙ্গও। অসমের বন্যার জেরে তারা আপতত ভোট করতে রাজি নয় বলেও জানানো হয়। আরও পড়ুন: কয়লাকাণ্ডে চূড়ান্ত তৎপর ইডি, এবার দিল্লিতে ডাক পড়ল আইনমন্ত্রী মলয় ঘটকের