Cattle Smuggling Case: গরু পাচারকাণ্ডে সতীশ কুমারের গ্রেফতারির পর কড়া বিএসএফ, দেড় বছরে ৩৩ জনকে কোর্ট মার্শাল

TV9 Bangla Digital | Edited By: সায়নী জোয়ারদার

Jan 28, 2022 | 12:58 PM

BSF: বিএসএফ সূত্রে খবর, ২০১৭-২০১৮ সালে গরু পাচারের বিষয়টি নজরে আসে। তথ্য নিয়ে সন্দেহ হতেই অভ্যন্তরীণ তদন্ত শুরু হয়েছিল।

Cattle Smuggling Case: গরু পাচারকাণ্ডে সতীশ কুমারের গ্রেফতারির পর কড়া বিএসএফ, দেড় বছরে ৩৩ জনকে কোর্ট মার্শাল
কঠোর বিএসএফও। ছবি PTI

Follow Us

কলকাতা: গরু পাচারকাণ্ড (Cattle Smuggling Case) নিয়ে ইতিমধ্যেই বিএসএফের অন্দরে অস্বস্তি বেড়েছে। এই ঘটনায় সতীশ কুমারের মতো বিএসএফ কমান্ড্যান্টের সক্রিয়ভাবে যুক্ত থাকার অভিযোগ নিয়ে খুশি নয় তারা। সীমান্ত রক্ষা করা যাদের দায়িত্ব, সেই ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কমান্ড্যান্ট গরু পাচারকাণ্ডে গ্রেফতার হওয়ায় বিএসএফ আরও তৎপর হয়ে ওঠে। এরপরই নিজেদের ইন্টেলিজেন্স উইং ব্যবহার করে বিএসএফ কর্তারা তদন্তও শুরু করে। মূলত এই গরু পাচার বা অন্য কোনও দুর্নীতিতে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে কতজন যুক্ত রয়েছেন তা খতিয়ে দেখাই এই তদন্তের লক্ষ্য ছিল। গত এক দেড় বছর ধরে সেই তদন্ত চালানোর পর অবশেষে বিএসএফ কর্তারা জানিয়ে দিলেন, শুধু গরু পাচার নয়, অন্যান্য অসামাজিক কার্যকলাপে জওয়ানদের একাংশের বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। যে কারণে একাধিক পদাধিকারী এবং জওয়ানকে কোর্ট মার্শাল করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর পূর্বাঞ্চলের সদর দফতর লর্ড সিনহা রোডে এক সাংবাদিক বৈঠক হয়। ছিলেন বিশেষ ডাইরেক্টর জেনারেল যোগেশ বাহাদুর খুরানিয়া। খুরানিয়া বলেন, “আমরা একাধিক জওয়ান এবং এবং কর্তাকে কোর্ট মার্শাল করেছি। একাধিক জনের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে। তাতে প্রমাণিত হলেই ওই জওয়ানদেরও কোর্ট মার্শাল করা হবে।” বিএসএফ একটি তথ্য দিয়ে জানিয়েছে, গত দেড় বছরে শুধুমাত্র পূর্বাঞ্চলের কমান্ডের অন্তর্গত ছ’টি ফ্রন্টিয়ারে ৩৩ জনকে কোর্ট মার্শাল করা হয়েছে। যার মধ্যে শুধু সীমান্তে গরুপাচার কাণ্ডে যুক্ত থাকার অভিযোগে ৪০ শতাংশকে কোর্ট মার্শাল করা হয়েছে।

এ ছাড়াও ১৪ জনের বিরুদ্ধে এখনও তদন্ত চলছে। কমান্ড্যান্ট সতীশ কুমারের সঙ্গে যে ক’জন পদাধিকারী এবং জওয়ান যুক্ত ছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে, তাঁদের প্রত্যেককে কোর্ট মার্শাল করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিএসএফ কর্তারা। বিএসএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, জেনারেল সিকিউরিটি ফোর্স কোর্ট এবং পেটি সিকিউরিটি ফোর্স কোর্টে এই ৩৩ জনের কোর্ট মার্শাল করা হয়েছে। বিশেষ ডাইরেক্টর জেনারেলের কথায়, “দেড় বছর আগে গরু পাচারকাণ্ডে যেভাবে কমান্ড্যান্ট এর নাম উঠে আসে এবং অন্যান্য জনের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ উঠে আসে, তাতে আমরা আমাদের নিজস্ব ইন্টেলিজেন্স উইংকে আরও তৎপর করে তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছিলাম। কোনরকম অবৈধ কার্যকলাপ বাহিনীতে আমরা মান্যতা দেব না। যে কারণে গত দেড় দু’ বছরের বহু জওয়ান এবং পদাধিকারী কর্তাদের কোর্ট মার্শাল করা হয়েছে। বিএসএফ নিজস্ব অভ্যন্তরীণ আইনকে কড়াভাবে বলবৎ করেছে। বাকি যে ক’জনের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে, তাদের বিরুদ্ধে রায় কিছুদিনের মধ্যেই চলে আসবে। দোষী প্রমাণিত হলে তাদেরকেও কোর্ট মার্শাল করা হবে।”

বিএসএফ সূত্রে খবর, ২০১৭-২০১৮ সালে গরু পাচারের বিষয়টি নজরে আসে। তথ্য নিয়ে সন্দেহ হতেই অভ্যন্তরীণ তদন্ত শুরু হয়েছিল। সেই সময় ওই কমান্ড্যান্টকে অন্যত্র বদলি করা হয়। গরু পাচারকাণ্ডে গ্রেফতার হওয়ার পর ২০২০ সালে জামিন পেয়ে ছাড়া পান বিএসএফের ওই কমান্ড্যান্ট। গরু পাচারকাণ্ডের তদন্তে নেমে গত ২০২০ সালের ১৮ নভেম্বর সতীশকে গ্রেফতার করেছিল কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। সীমান্ত দিয়ে গরু পাচারে সক্রিয় ভূমিকা ছিল তাঁর বলেই অভিযোগ ওঠে। সতীশের গরুকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত এনামুল হকের সঙ্গেও যোগাযোগ ছিল বলে অভিযোগ ওঠে। এমনও অভিযোগ ওঠে, সতীশ যে টাকা পেতেন তা তিনি তাঁর নিচুতলার কর্মীদের একাংশের মধ্যেও ভাগ করে দিতেন।

সিবিআইয়ের কর্তারা তদন্তের পর জানিয়ে ছিলেন, ২০১৫ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০১৭ সালের এপ্রিল পর্যন্ত বাংলায় বিএসএফের ৩৬ নম্বর ব্যাটালিয়নের কমান্ড্যান্ট ছিলেন সতীশ কুমার। ওই ১৬ মাসে তাঁর বাহিনী মালদহ ও মুর্শিদাবাদ জেলায় বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে প্রায় ২০ হাজার গরু বাজেয়াপ্ত করেছিল। কিন্তু সেই বাজেয়াপ্ত গরুকেই সরকারি খাতায় বাছুর হিসাবে দেখানো হচ্ছিল।

গোরুর যা দাম, তার চেয়ে কম দামে সেগুলি স্থানীয় বাজারে নিলাম করা হোত। সেখান থেকে বাছুরের দামে গরু কিনে নিত পাচারকারীরা। এই পাচারচক্রের মাথায় ছিলেন এনামুল হক বলেই অভিযোগ। তদন্তে উঠে আসে, তাঁর তত্ত্বাবধানে নিলামে কেনা ওই গরু আবার বাংলাদেশে পাচার হয়ে যেত। গরুকে বাছুর বানিয়ে দেওয়া বিএসএফ এবং কাস্টমস আধিকারিকদের একাংশের সঙ্গে সংযোগ ছিল এনামুলের। মোটা টাকার বিনিময়ে গোটা প্রক্রিয়া চলত বলেই সিবিআই জানতে পেরেছে।

আরও পড়ুন: কাঁকুরগাছির অভিজিৎ ‘খুনে’ অভিযুক্তদের ধরে দিতে পারলেই মোটা টাকার পুরস্কার সিবিআই-এর

Next Article