কলকাতা: নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে তোলপাড় গোটা রাজ্য। দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে দুই মন্ত্রীকে। আর সম্প্রতি আরও এক মামলায় বেনিয়মের অভিযোগে থেকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে সিদ্দিক গাজী নামে এক ব্যক্তিকে। প্যানেলে নীচের দিকে নাম থাকা সত্ত্বেও সিদ্দিক গাজী কী ভাবে চাকরি পেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সেই মামলা সংক্রান্ত নথি সিবিআই-কে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি রাজ্যের নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে এবার প্রশ্ন তুললেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন বিচারপতি।
যাঁরা চাকরি পাননি, অসন্তুষ্ট হয়েছেন তাঁদের জন্য সুপার নিউমারিক পোষ্ট তৈরি করা হচ্ছে, আগেই এমনটা জানানো হয়েছিল রাজ্য সরকারের তরফে। এর আগে নিয়োগ সংক্রান্ত একটি মামলায় বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায় ওই নিয়োগ নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন। এবার সেই একই প্রশ্ন তুললেন বিচারপতি মান্থা।
এ দিন বিচারপতি বলেন, ‘এটা আসলে একটা অসুখকে ঢাকতে আর একটা অসুখকে ডেকে আনা হচ্ছে।’ বিচারপতি প্রশ্ন তোলেন, ‘এই সব নিয়োগ করার সময় নতুন কোনও দুর্নীতি হবে না, সেই প্রতিশ্রুতি কে দেবেন?’
বুধবার শুনানিতে রাজ্যের আইনজীবী সম্রাট সেন দাবি করেন, প্রার্থীদের দাবি ন্যায্য হলে তাঁদের চাকরি দেওয়ার জন্য সুপার নিউমারিক পোষ্ট তৈরি করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। সেই নতুন পদে যাঁরা যোগ্য তাঁরা চাকরি পাবেন। যে প্রশ্ন বারবার উঠছিল, কী ভাবে প্যানেল শেষ হওয়ার পর নতুন নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হচ্ছে, সেটাই আরেকবার স্পষ্ট করা হল রাজ্যের পক্ষ থেকে।
অনুপ গুপ্তের করা মামলায় সিদ্দিক গাজির নিয়োগ বাতিল করা হয়েছে। সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি। নবম-দশম শ্রেণির নিয়োগ সংক্রান্ত মামলার তদন্ত আগে থেকেই শুরু করেছে সিবিআই। তাই সিদ্দিক গাজির মামলার যাবতীয় নথি সিবিআইকে পাঠিয়ে তদন্তে সহযোগিতার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি।
অভিযোগ ওঠে, প্যানেলে ২০০ নম্বরে নাম থাকা সত্ত্বেও চাকরি পাননি এক চাকরি প্রার্থী। অথচ ২৭৫ নম্বরে নাম থাকার পরও চাকরি পেয়েছেন সিদ্দিক গাজী নামে ওই ব্যক্তি। নবম-দশম শ্রেণির গণিতের শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে এই বেনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। সেই মামলার শুনানির পর সোমবার মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে চাকরি বাতিল করার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি মান্থা।