কলকাতা: মৃত্যদণ্ড নয়। আমৃত্যু কারাদণ্ড। আরজি কর কাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত সঞ্জয় রাইয়ের এই সাজায় সন্তুষ্ট নয় সিবিআই। সূত্রের খবর, শিয়ালদহ আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হতে চলেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। হাইকোর্টের সঞ্জয়ের ফাঁসির সাজার আবেদন জানাবে।
আরজি কর কাণ্ডে ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রাইকে গত শনিবার ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৬৪, ৬৬ এবং ১০৩(১) ধারায় দোষী সাব্যস্ত করেন শিয়ালদহ আদালতের বিচারক অনির্বাণ দাস। সেদিন সঞ্জয়কে বিচারক বলেছিলেন, “আপনি যেভাবে মেরেছেন, তার জন্য সর্বোচ্চ মৃত্যুদণ্ড হতে পারে। সর্বনিম্ন ১০ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।”
সোমবার বিচারক সাজা ঘোষণার আগে সিবিআইয়ের আইনজীবী সঞ্জয়কে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার জন্য সওয়াল করেন। কিন্তু, বিচারক সঞ্জয়কে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেন। এমনকি, তিলোত্তমাকাণ্ড বিরলের মধ্যে বিরলতম নয় বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
তিলোত্তমাকাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত সঞ্জয়ের মৃত্যুদণ্ড না হওয়ায় বিভিন্ন মহল প্রশ্ন তোলে। এমনকী, মুখ্যমন্ত্রীও অসন্তোষ প্রকাশ করেন। সোমবারই তিনি জানান, শিয়ালদহ আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে রাজ্য কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন করবে। সেইমতো রাজ্য সঞ্জয়ের ফাঁসি চেয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে।
সঞ্জয়ের মৃত্যুদণ্ড না হওয়ায় সন্তুষ্ট নয় সিবিআই-ও। সূত্রের খবর, আগামী দু’দিনের মধ্যে নিম্ন আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতার হাইকোর্টে পিটিশন ফাইল করতে চলেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সঞ্জয়ের ফাঁসির সাজার আবেদন জানাবে তারা।
প্রসঙ্গত, আরজি কর মামলায় সিবিআই যেভাবে তদন্ত করেছে, তাতে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন তিলোত্তমার বাবা-মা। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে আরজি কর কাণ্ডের তদন্তভার নিয়েছে সিবিআই। কিন্তু, সঞ্জয়কে ধরেছে কলকাতা পুলিশ। তারপর এই মামলায় তথ্যপ্রমাণ লোপাটের অভিযোগ সিবিআই আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ ও টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডলকে গ্রেফতার করে। কিন্তু, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তাঁদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিতে না পারায় জামিন পেয়ে যান তাঁরা। এই নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিলোত্তমার বাবা-মা ও আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তাররা। এবার সঞ্জয়েরও মৃত্যুদণ্ড না হওয়ায় সিবিআইয়ের তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। এই পরিস্থিতিতে শিয়ালদহ আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হতে চলেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।