কলকাতা: হাইকোর্টের নির্দেশের পর ভোট পরবর্তী হিংসার তদন্ত শুরু করছে সিবিআই। আর এই মামলায় উল্লেখযোগ্য ঘটনা হল বিজেপি কর্মী অভিজিৎ সরকারের মৃত্যু। ভোটের ফলপ্রকাশের দিনই মৃত্যু হয় অভিজিতের। রাজনৈতিক হিংসার জেরে তাঁকে খুন করা হয় বলে অভিযোগ তোলে পরিবার। তদন্তের স্বার্থ দাহও করা হয়নি অভিজিতের দেহ। গত চার মাস ধরেই মর্গে পড়ে রয়েছে সেই বিজেপি কর্মীর দেহ। এ বার সেই ঘটনার তদন্তে সরাসরি জেলে গিয়ে জেরা করতে চায় সিবিআই। আজ, বৃহস্পতিবারই তদন্তকারী আধিকারিকরা যাচ্ছেন প্রেসিডেন্সি জেলে। ওই ঘটনায় অভিযুক্ত পাঁচজনকে জেরা করবেন তাঁরা।
গত কয়েকদিনে একাধিকবার সিবিআই আধিকারিকদের মুখোমুখি হয়েছেন অভিজিতের দাদা বিশ্বজিৎ। তাঁর কাছ থেকে আধিকারিকেরা ঘটনার বর্ণনা শুনেছেন বলে সূত্রের খবর। ঘটনার দিন কারা উপস্থিত ছিলেন, কী ভাবে পুরো ঘটনা ঘটল, সেই বিষয়ে সব তথ্য সংগ্রহ করেছে সিবিআই। পাশাপাশি, ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ থেকে অভিযুক্ত পাঁচজনকে চিহ্নিত করেছেন অফিসারেরা। এরপরই তাদের জন্য প্রশ্নের তালিকা তৈরি করে জেলে যাচ্ছেন আধিকারিকেরা। পাঁচজন আধিকারিকের একটি দল এ দিন প্রেসিডেন্সি জেলে যাচ্ছেন বলে সূত্রের খবর। রীতিমতো হোমওয়ার্ক করেই জিজ্ঞাসাবাদ করবেন তাঁরা।
জানা গিয়েছে, সিবিআই ওই পাঁচ অভিযুক্তের বয়ান রেকর্ড করবে। তাদের সঙ্গে কোনও প্রভাবশালীর যোগ আছে কি না, তা জানার চেষ্টা করবে। আদালতের অনুমতি নিয়েই এ দিন জেরা করতে যাচ্ছেন তাঁরা। প্রয়োজনে ওই পাঁচজনকে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদনও জানাতে পারে সিবিআই।
অভিজিৎ সরকারের মৃত্যুর মেডিকেল রিপোর্ট সংক্রান্ত নথি চেয়ে গত মঙ্গলবারই হাইকোর্টে আবেদন জানিয়েছে সিবিআই। রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে আবেদন জানিয়েছেন সিবিআইয়ের আধিকারিকরা। এখনও অভিজিৎ সরকারের দেহের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাইকোর্টে রয়েছে। সেই রিপোর্ট দেখতে চায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী এই সংস্থা। মঙ্গলবার সেই আর্জি নিয়ে হাইকোর্টে যায় তারা।
এর আগে গত সোমবারই অভিজিতের দাদাকে ডেকে পাঠানো হয় নিজাম প্যালেসে। সূত্রের খবর, ওই দিন অভিজিৎ সরকারের মোবাইল ফোনে থাকা বেশ কিছু ভিডিয়ো নিয়ে তদন্তকারীদের সঙ্গে কথা বলেন বিশ্বজিৎ। তাঁর বক্তব্য, অভিজিৎ সম্ভবত আগেই বুঝতে পেরেছিলেন, তিনি খুন হতে পারেন। সেই জন্যই নিজের মোবাইল ফোন লুকিয়ে রেখেছিলেন বলে মনে করছেন বিশ্বজিৎ। সূত্রের খবর, মোবাইল ফোনে অভিজিতের মৃত্যুর আগের মুহূর্তের বেশ কিছু ভিডিয়ো রয়েছে।
গত কয়েক মাস ধরে অভিজিতের দেহ কমান্ডো হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। পচে-গলে সেই দেহ আর চেনার কোনও উপায় নেই। পরিবারের প্রশ্ন, ওই দেহ আদৌ অভিজিতের? তাঁদের অভিযোগ, প্রমাণ লোপাটের চেষ্টায় দেহ সরিয়ে দেওয়া হয়ে থাকতে পারে। তাই মর্গে আদতে কার দেহ রয়েছে, তা এখনও জানে না পরিবার। ইতিমধ্যেই ডিএনএ পরীক্ষা হয়েছে ওই দেহের। আপাতত সেই ডিএনএ রিপোর্ট আছে সিবিআই-এর হাতে। আরও পড়ুন: ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় রাজ্যের তদন্তকারী অফিসারকে তলব সিবিআই-এর