কলকাতা: ফের একবার অর্থলগ্নিকারী সংস্থা আইকোর সংক্রান্ত মামলার তদন্তে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে তলব করল সিবিআই। তৃতীয়বার তাঁকে হাজিরার নোটিস দিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে কলকাতায় সিজিও কমপ্লেক্সে হাজিরা দিতে হবে। এর আগেও পরপর দু’বার তাঁকে হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বিধানসভা নির্বাচনের আগে ব্যস্ত থাকার কারণ দেখিয়ে সেই হাজিরা এড়িয়ে যান তিনি। ভোট মিটে গেলে হাজিরা দেবেন বলে জানিয়েছিলেন পার্থ। তাই ফের একবার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁকে তলব করা হয়েছে।
ভুঁইফোড় অর্থলগ্নিকারী সংস্থা আইকোর-এর একটি অনুষ্ঠানে তাঁকে উপস্থিত থাকতে দেখা গিয়েছিল। শুধু তাই নয়, ওই সংস্থার কর্তাদের ভূয়ষী প্রশংসাও করতে শোনা গিয়েছিল তাঁকে। কেন রাজ্যের একজন বিধায়ক তথা প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে এরকম একটি অনুষ্ঠানে হাজির হলেন তিনি, তা নিয়েই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় সিবিআই। তাই চলতি সপ্তাহেই তাঁকে নোটিস দেওয়া হল। এই নিয়ে তৃতীয়বারের জন্য সিবিআই নোটিস পেলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এবার তিনি হাজিরা দেবেন কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
তবে এবারও সামনে রয়েছে ভোট। ইতিমধ্যেই ভবানীপুর কেন্দ্রের উপনির্বাচনের দিন ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। আর সেই নির্বাচনে বিশেষ দায়িত্ব রয়েছে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। পর্যবেক্ষক হিসেবে দায়িত্ব সামলাবেন তিনি। তাই এই পরিস্থিতিতে তিনি কি হাজিরা দিতে চাইবেন, তা নিয়েই উঠেছে প্রশ্ন।
কী দাবি সিবিআই-এর?
সিবিআই-এর দাবি, আইকোরের ওই অনুষ্ঠানে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে সরকারি সাহায্যের কথা বলতে শোনা গিয়েছিল। একটি বেসরকারি চিটফান্ড সংস্থাকে কী ভাবে অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে একজন মন্ত্রী সাহায্যের কথা বলতে পারেন? আইকোর সংস্থার সঙ্গে তাঁর কী সম্পর্ক? তাঁর সঙ্গে ওই সংস্থার কোনও ধরনের আর্থিক লেনদেন হয়েছিল কি? এই সংক্রান্ত প্রশ্নের মুখোমুখি হতে পারেন তিনি। সূত্রের খবর, তাঁর বয়ান রেকর্ড করবে সিবিআই।
আইকোর সংস্থার কর্ণধার অনুকূল মাইতিকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে। এই অনুকূল মাইতির প্রশংসাও শোনা গিয়েছিল পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গলায়। তাঁর সঙ্গে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কোনও রকম যোগাযোগ রয়েছে কি না সেটার জানার চেষ্টা সিবিআই করবে বলে জানা গিয়েছে।
পরপর দু’বার নোটিস দেওয়া হয়েছিল:
রাজ্যের বিধানসভার নির্বাচনের ঠিক আগে ১২ মার্চ প্রথম আইকোর-মামলায় তাঁকে তলব করে সিবিআই। সেই হাজিরা এড়িয়ে যান তিনি। পর তলব করে আরও একটি চিঠি দেওয়া হয়। কিন্তু দুবারই হাজিরা দেবেন না বলে জানিয়ে দেন পার্থ।
কেন হাজিরা দেননি এতদিন?
পার্থ’র দাবি ছিল, নির্বাচনের ভরা মরসুম। নির্বাচনী প্রচারের কাজে ব্যস্ত তিনি। তাই তাঁর পক্ষে হাজিরা দেওয়া সম্ভব নয়। চিঠি দিয়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, একবার নির্বাচনী প্রচার প্রক্রিয়া শেষ হলে তবেই তিনি হাজিরা দিতে পারবেন। আরও পড়ুন: দেড় ফুট দূরত্বে সিআইএসএফ প্রহরা! সাংসদ অর্জুন সিংয়ের বাড়ির গেটে সাতসকালে পড়ল বোমা