কলকাতা : বর্ষাকালে যেন শহর কলকাতার বুকে পদে পদে বিপদ। হরিদেবপুরের ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই ফের রাজাবাজারে একই কাণ্ড। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হল আরও এক কিশোরের। শনিবার রাতে রাজাবাজারের ঘটনার পর পরিস্থিতি নিয়ে আরও সজাগ প্রশাসন। এবার কলকাতা পুরনিগম, কলকাতা পুলিশ, সিইএসসি এবং রাজ্য বিদ্যুৎ দফতর যৌথভাবে তদন্ত করার সিদ্ধান্ত নিল। রবিবার এই বিশেষ যৌথ টিম রাজাবাজারের ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে। রবিবার সকালে সিইএসসি এবং কলকাতা পুরনিগমের আধিকারিকরা রাজাবাজারে পৌঁছাতেই সেখানে উত্তেজনার পরিস্থিতি তৈরি হয়।
সিইএসসি এবং কলকাতা পুরনিগমের আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে পৌঁছতেই এলাকাবাসীরা ঘিরে ধরেন তাঁদের। স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। ঘটনাস্থলে মিটার রিডিং-এর নমুনা সংগ্রহ করেন সিইএসসি-র আধিকারিকরা। এখানে লাইট পোস্টগুলি থেকে হুকিং করা হত বলেও অভিযোগ। গতকালের ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এলাকায় হুকিং এবং চুরি করে জল নেওয়ার অভিযোগে কলকাতা পুরনিগমের তরফে থানায় অভিযোগ দায়ের করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রবিবার কলকাতা পুরনিগমের বৈঠকে এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে আলো বিভাগ সূত্রের খবর।
একের পর এক ঘটনায় প্রশ্ন উঠছে সিইএসসি এবং পুরনিগমের ভূমিকা নিয়ে। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, সেখানে একটি জলের পাইপ ছিল। সেখান থেকে টুলু পাম্প বসিয়ে জল চুরি করা হত বলে অভিযোগ উঠেছে। হুকিং করে সেই পাম্প ব্যবহার করে স্থানীয় বাসিন্দাদের কেউ কেউ জল তুলত বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে সেই কারণেই বাতিস্তম্ভ কোনওভাবে শর্ট-সার্কিট হয়ে থাকতে পারে।
রাজাবাজারের দুর্ঘটনায় মৃত কিশোর ফারজান অষ্টম শ্রেণিতে পড়ত। শনিবার বিকেলে বাবার সঙ্গে বাজারের দিকে যাচ্ছিল ফারজান। মৃতের বাবার দাবি, তিনি ছেলের পিছনেই ছিলেন। হঠাৎ দেখেন, জমা জলের মধ্যে ছেলে পা হড়কে গিয়ে রাস্তার ধারে একটি বাতিস্তম্ভ ছুঁয়ে ফেলে। তখনই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে যায় ফারজান। বিষয়টি দেখামাত্র আশপাশের লোকেরা বাঁশ দিয়ে ফারজানকে বাতিস্তম্ভ থেকে সরানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু তাঁরা ব্যর্থ হন।