কলকাতা: রাজ্য ও রাজভবনের সংঘাত ক্রমেই জোরাল হচ্ছে। বিভিন্ন ইস্যু নিয়েই রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে তরজায় জড়াচ্ছে রাজ্য। হাওড়া পুর বিল নিয়ে ধোঁয়াশা এখনও কাটেনি। এরই মধ্যে লোকায়ুক্ত, মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান নিয়েও একটা জটের পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। সোমবার বিধানসভা ভবনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফের একবার রাজ্যপালকে তাঁর সাংবিধানিক এক্তিয়ারের কথা মনে করিয়ে দেন।
এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “যা বলার অধ্যক্ষ বলে দিয়েছেন। আমি মনে করি প্রত্যেকের নিজস্ব কাজের সাংবিধানিক এক্তিয়ার আছে। একটা সীমা আছে। আমার যা কাজ আমি করব, ওনার যা কাজ উনি করবেন।”
হাওড়ার বিলে সই করা নিয়ে একটা বিতর্ক চলছিলই। সোমবার নতুন বিতর্ক শুরু হয় লোকায়ুক্ত ও মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান মনোনয়ন ঘিরে। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেন, মুখ্যমন্ত্রী ও অধ্যক্ষ নিজেদের মতো করে নাম প্রস্তাব করেছেন। তিনিও আলাদা করে নাম পাঠাবেন রাজ্যপালের কাছে। শুভেন্দুর যুক্তি, লোকায়ুক্ত বা মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কে হবেন তা চূড়ান্ত করার অধিকার রাজ্যপালেরই আছে।
অন্যদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই মনোনয়ন প্রসঙ্গে বলেন, “জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের যে নিয়ম সেটাই আমরা মেনে চলি। দিনের পর দিন সই বা করে প্রস্তাব ফেলে রাখেন। সবকিছুর একটা নিয়ম আছে। রাজ্য সরকারের যে বডি রয়েছে, তা কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের গাইডলাইন মেনে, ভারত সরকারের গাইডলাইন মেনে তৈরি হয়। সাতদিন আগে চিঠি দিয়েছি আমরা।”
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “দিনের পর দিন সই বা করে প্রস্তাব ফেলে রাখেন। সবকিছুর একটা নিয়ম আছে। রাজ্য সরকারের যে বডি রয়েছে, তা কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের গাইডলাইন মেনে, ভারত সরকারের গাইডলাইন মেনে তৈরি হয়। সাতদিন আগে চিঠি দিয়েছি আমরা।”
হাওড়ার বিল নিয়ে এদিন অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, রাজ্যপাল কেন এই বিলে সম্মতি দিচ্ছেন না তা একমাত্র তিনিই জানেন। এই বিলে সম্মতি দিয়ে দেওয়া উচিৎ ছিল বলেই দাবি অধ্যক্ষের। অন্যদিকে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যপালের বাধ্যবাধকতা মনে করিয়ে দেন। এ প্রসঙ্গেই লোকায়ুক্ত ও মানবাধিকার কমিশনের প্রসঙ্গও উঠে আসে।
সোমবার বিধানসভার বৈঠক যেহেতু লোকায়ুক্ত ও মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান নিয়োগ নিয়ে ছিল ফলে সেই বিষয়ের সূত্র ধরেই এদিন হাওড়া বিলের প্রসঙ্গ উঠে আসে। বেশ কিছুদিন ধরেই রাজ্যপালের সঙ্গে রাজ্যের যে সংঘাত চলছে, এদিন তা আরও কিছুটা বাড়ল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। কারণ, মুখ্যমন্ত্রী ফের স্মরণ করিয়ে দিলেন রাজ্যপালের সাংবিধানিক এক্তিয়ার কতটা, বাধ্যবাধকতা কী।
এদিন বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, লোকায়ুক্ত নিয়োগ ও মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বা সদস্য নিয়োগ নিয়ে আলাদা কোনও মনোনয়ন রাজ্যপাল করতে পারেন না। প্রোটেকশন অব হিউম্যান রাইটস ১৯৯৩তে খুব স্পষ্ট করে সমস্ত বিষয় বলা আছে। মানবাধিকার কমিশনার কিংবা লোকায়ুক্ত নিয়োগ নিয়ে আইন খুব স্পষ্ট বলে দাবি তাঁর। আইন অনুযায়ী ছাড়পত্র দেবেন রাজ্যপাল।
আরও পড়ুন: Lokayukta: লোকায়ুক্ত নিয়োগ নিয়ে জোর তরজা, রাজ্যপালকে আলাদা নাম পাঠাচ্ছেন শুভেন্দু