কলকাতা: পেট্রোল, ডিজেলের দাম কমানোর দাবি নিয়ে রাজ্য সরকারকে নিশানা করে আন্দোলনে নেমেছে বিজেপি (BJP)। কেন্দ্র পেট্রোপণ্য়ের মূল্য হ্রাসে উদ্যোগ নেওয়ার পর রাজ্য কেন তাদের তরফে ট্যাক্স কমাচ্ছে না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শুভেন্দু অধিকারী, দিলীপ ঘোষ, সুকান্ত মজুমদাররা। আর সোমবার বিশ্ববাংলা শারদ সম্মান পুরস্কার বিতরণীর সভা থেকে এ নিয়ে পাল্টা নিশানা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তাঁর দাবি, ‘এক টাকা করে দিই প্রতি লিটারে কনসেশন।’ আর তার পর কেন্দ্রকে নিশানা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, বাংলার মতো জনমুখী প্রকল্পের সুবিধা আর কোথাও নেই।
এদিন পুরস্কার বিতরণী সভার শুরুতে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আগের বার নবান্নে ডেকেছিলাম নবান্ন দেখাীর জন্য। এবার এখানে ডাকা হয়েছে আপনাদের এই ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড কনভেনশন সেন্টার দেখানোর জন্য। আমাদের সরকার করেছে।” কনভেনশন সেন্টার ঘুরে দেখার অনুরোধ জানান মুখ্যমন্ত্রী। জানান পাশেই রয়েছে ওয়াক্স মিউজিয়াম। তাঁর কথায়, “এটা একটা দর্শনীয় স্থান হয়ে উঠেছে। ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড তৈরি হয়েছে। ইন্ডাস্ট্রিয়াল কনফারেন্স হয় এখানে।”
এর পর মুখ্যমন্ত্রী পুজো উদ্যোক্তাদের জানান, “আগামী বছর মা ব্রিজের পাশে এই পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান হবে। যেটা আগে মিলন মেলা ছিল, সেখানে ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ডের গ্রাউন্ড হচ্ছে। আগামী বছর ওটা আপনাদের দেখাব। আশা করি মার্চের মধ্যে হয়ে যাবে। সুতরাং, প্রতি বছর এক একটা জায়গায় আপনারা শারদ সম্মানে সম্মানীত হবেন।” এবারের কোভিড পরিস্থিতিতে শান্তির সঙ্গে দুর্গাপুজো শেষ করার জন্য উদ্যোক্তাদের অভিনন্দন জানান মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, এত কিছু সত্ত্বেও অনেকে ভয় পাচ্ছিলেন এবার হয়ত পুজোই হবে না।
এর পর পেট্রোল ডিজেলের দাম নিয়ে কেন্দ্রকে নিশানা করতে শোনা যায় মুখ্যমন্ত্রীকে। বাংলার শিল্প পরিস্থিতি নিয়ে মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, “১০০ একর জমি হিডকো দিয়েছে সেটা ভর্তি হয়ে গিয়েছে। আরও ১০০ একর জমি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে এত পেট্রোল ডিজেলের দাম বেড়ে যাচ্ছে… কৃষকরা চাষ করবে কীভাবে! ডিজেলে তো চাষ হয়!” তিনি আরও যোগ করেন, “সমস্যা হচ্ছে এত পেট্রোল-ডিজেলের দাম বেড়ে যাচ্ছে। চার লক্ষ কোটি টাকা কেন্দ্র সরকার তুলেছে পেট্রোল, ডিজেল, গ্যাসে। আমাদের হাজার হাজার কোটি টাকা দিচ্ছে অন্য রাজ্যে। আমাদের তো দেয়ই না। টিকাই দেয়না তো টাকা দেবে…”
তার পর মুখ্যমন্ত্রীর সংযুক্তি, “বড় বড় ফট্ ফট্ ফট্ ফট্ করে। আমরাও এক টাকা করে দিই প্রতি লিটারে কনসেশন। স্টেট গর্ভমেন্ট থেকে। কোথায় পাব? তা সত্ত্বেও করি। আমাদের যত স্কিম আছে সারা পৃথিবীতে কোথাও আছে দেখাতে পারবেন? এক নম্বর সামাজিক সংস্কারে। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর চিন্তা করেছিলেন, রাজা রামমোহন রায় চিন্তা করেছিলেন। রবীন্দ্র নজরুল থেকে শুরু করে অনেকেই চিন্তা করেছিলেন। কিন্তু সেগুলোকে পুরো কার্যকর করেছে , ইমপ্লিমেনটেশন আমাদের সরকার করেছে। এর জন্য আমরা গর্বিত।” তিনি যোগ করেন, ‘যেখানে সংস্কার নেই, সমাজ থাকবে কী করে!’
আরও পড়ুন: School Reopening: ‘কোনও পরিকল্পনা ছাড়াই’ স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত, হাইকোর্টে দায়ের জনস্বার্থ মামলা