Adeno Virus: কোভিডের মতো উদ্বেগ বাড়াচ্ছে অ্যাডিনো ভাইরাস, কলকাতার হাসপাতালগুলিতে উপচে পড়ছে শিশু রোগী

"কোভিডে যা হয়নি, তাই ঘটছে অ্যাডিনো ভাইরাসে", শিশুদের নিয়ে উদ্বিগ্ন চিকিৎসকেরা। অ্যাডিনো ভাইরাসের উপসর্গ ও বাঁচার উপায় জানালেন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ।

Adeno Virus: কোভিডের মতো উদ্বেগ বাড়াচ্ছে অ্যাডিনো ভাইরাস, কলকাতার হাসপাতালগুলিতে উপচে পড়ছে শিশু রোগী
প্রতীকি ছবি।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Feb 19, 2023 | 5:16 PM

কলকাতা: কোভিডের পর এবার উদ্বেগ বাড়াচ্ছে অ্যাডিনো ভাইরাস। বলা যায়, অ্যাডিনো ভাইরাসে কাবু দক্ষিণবঙ্গ। মূলত দু’বছরের নীচে শিশুদের মধ্যেই এই ভাইরাসের প্রকোপ বেশি দেখা যাচ্ছে। গত কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, সরকারি থেকে বেসরকারি সমস্ত হাসপাতালেই শিশু রোগী ভর্তির সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। এমনকি হাসপাতালে বেডের অভাবও দেখা দিয়েছে। যা নিয়ে উদ্বিগ্ন সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকেরাও। শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ দিব্যেন্দু রায়চৌধুরীর কথায়, “কোভিডে যা হয়নি, তাই ঘটছে অ্যাডিনো ভাইরাসে।” পরিস্থিতি সামাল দিতে কোভিডের মতো ফের স্বাস্থ্যবিধি জারি করার প্রস্তাব দিয়েছেন বি.সি রায় হাসপাতালের অধ্যক্ষ দিলীপ রায়। তিনি বলেন, “উত্তরবঙ্গে সেরকমভাবে অ্যাডিনো ভাইরাসের প্রকোপ নেই। দক্ষিণবঙ্গে প্রকোপ বেশি।” স্কুলগুলির কাছেও বিশেষ সতর্কতা মেনে চলার আবেদন জানিয়েছেন তিনি।

জানা গিয়েছে, অ্যাডিনো ভাইরাসের প্রকোপ সবচেয়ে বেশি দেখা দিয়েছে কলকাতা, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি এবং নদিয়ায়। বি.সি রায় হাসপাতালের অধ্যক্ষ দিলীপ রায় বলেন, “অনেক ক্ষেত্রে শিশুরা জোড়া ভাইরাসের আক্রমণের শিকার হচ্ছে। যেমন- অ্যাডিনো ভাইরাসের সঙ্গে রাইনো ভাইরাস অথবা অ্যাডিনো ভাইরাসের সঙ্গে মেটা নিমো ভাইরাস বা ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। আবার অনেকসময় একটি ভাইরাসের আক্রমণ থেকে সেরে উঠতে না উঠতে আরেকটি ভাইরাসের শিকার হচ্ছে শিশুরা। যার ফলে শিশুদের শারীরিক অবস্থা গুরুতর হয়ে উঠছে। ফলে হাসপাতালগুলিতে ক্রমশ শিশু রোগীর ভিড় বাড়ছে।” তবে অ্যাডিনো ভাইরাসের প্রকোপ সবচেয়ে বেশি বলে জানান তিনি।

কলকাতার সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে শিশু ওয়ার্ডে ইতিমধ্যে বেডের অভাব দেখা দিয়েছে। যেমন, বি.সি রায় শিশু হাসপাতালের ৪৫টি পিকু ও এইচডিইউ বেড‌ই ভর্তি। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মাদার অ্যান্ড চাইল্ড হাবের ২০টি বেডের মধ্যে ১০টি ভর্তি। একইভাবে বেসরকারি আমরি, সিএমআরআই হাসপাতালেও শিশু ওয়ার্ডে বেডের সংখ্যা অপ্রতুল। পরিস্থিতি সামাল দিতে ইতিমধ্যে সরকারি হাসপাতালের শিশু চিকিৎসকদের সঙ্গে জরুরি ভিত্তিতে বৈঠকে বসেছেন স্বাস্থ্য ভবনের আধিকারিকেরা। কোভিডের মতোই অ্যাডিনো ভাইরাস সংক্রামক। তাই অসুস্থ হলে শিশুদের স্কুলে পাঠানো নয় এবং স্কুলে দূরত্ববিধি মেনে চলা, মাস্ক পরা ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহারের উপর জোর দেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন শিশু চিকিৎসকেরা। এব্যাপারে নির্দেশিকা জারি করার ব্যাপারেও স্বাস্থ্যকর্তাদের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে। শিশুদের মধ্যে অ্যাডিনো ভাইরাসের উপসর্গ দেখা দিলেই অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত বলে জানিয়েছেন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ দিব্যেন্দু রায়চৌধুরী।

অ্যাডিনো ভাইরাসে আক্রান্ত হলে কী উপসর্গ দেখা যাবে?

শিশু বিশেষজ্ঞ দিব্যেন্দু রায়চৌধুরী জানান, সাধারণ ইনফ্লুয়েঞ্জার মতোই জ্বর, মাথাব্যথা, সর্দি-কাশি হয়। তবে অ্যাডিনো ভাইরাসে আক্রান্ত হলে সহজে জ্বর, সর্দি-কাশি কমে না। বরং বাড়তে থাকে এবং শ্বাসকষ্টও শুরু হতে পারে।

অ্যাডিনো ভাইরাসে আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসা কী?

প্রাথমিকভাবে জ্বরের জন্য ক্যালপল বা প্যারাসিটামল ওষুধ দেওয়া হয়। তবে শ্বাসকষ্ট বা অন্য কোনও সমস্যা দেখা দিলে বিশেষ পর্যবেক্ষণে রেখে চিকিৎসা চালাতে হবে।

অ্যাডিনো ভাইরাস থেকে বাঁচার উপায় কী?

শিশু বিশেষজ্ঞ দিব্যেন্দু রায়চৌধুরী জানান, কোভিডের মতো অ্যাডিনো ভাইরাসও সংক্রামক। ফলে স্কুলে একটি শিশু আক্রান্ত হলে তার সংস্পর্শে এলে অন্য শিশুরা আক্রান্ত হতে পারে। তাই কোভিডের মতো মাস্ক পরা, দূরত্ববিধি মেনে চলা এবং স্যানিটাইজার ব্যবহারে জোর দিতে হবে। কোনও শিশু অ্যাডিনো ভাইরাসে আক্রান্ত হলে তার স্কুলের যাওয়ার ব্যাপারেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা উচিত বলে জানিয়েছেন তিনি। সবমিলিয়ে, অ্যাডিনো ভাইরাসের বিষয়টি হালকাভাবে নেওয়ার নয় বলেই দাবি শিশু বিশেষজ্ঞদের।