কলকাতা: কম সুদে ঋণ দেওয়া হবে, ডকুমেন্ট জমা দিন! এই ধরনের ফোন প্রতিনিয়ত অনেকের কাছেই আসে। আর সেই ফাঁদে পা দিয়ে বিপদে পড়েন অনেকেই। টাকা, নথি সব গেলেও ঋণ পাওয়া যায় না অনেক সময়। এই ধরনের অভিযোগের ভিত্তিতেই এ বার হাতেনাতে এমন একটি প্রতারণা চক্র ফাঁস করল সিআইডি। নিউ টাউনে অফিস ভাড়া করে রীতিমতো রমরমিয়ে চলছিল সেই প্রতারণা চক্র। নামী সংস্থার নাম করে ঋণ দেওয়ার কথা বলতেন কর্মীরা। ওই ভুয়ো সংস্থায় কাজ করতেন ১০০-র বেশি কর্মী, মোটা টাকা বেতনও পেতেন তাঁরা।
এই ধরনের প্রতারণা চক্রের খবর গোপন সূত্রে পায় সিআইডি। তদন্তে নামে সিআইডি-র সাইবার থানা। তদন্তে নেমে আধিকারিকরা জানতে পারেন নিউ টাউনের একটি ঝাঁ চকচকে বিল্ডিং-এ অফিস ভাড়া করে ওই ভুয়ো সংস্থা। সেই সূত্র ধরেই সিআইডি ওই চক্রের সঙ্গে যুক্ত ১২ জনকে গ্রেফতার করেছে। ওই চক্রের পিছনে মূল পাণ্ডা কারা? তা জানার চেষ্টা করছে সিআইডি।
জানা গিয়েছে, এক নামী সংস্থার নাম করে গ্রাহকদের ফোন করতেন এই ভুয়ো সংস্থার কর্মীরা। কম সুদে ঋণ দেওয়ার কথা বলা হত। কেউ ঋণ নিতে রাজি হলে তাঁকে নথিপত্র জমা দিতে বলা হত। এরপরও ঋণ না পেয়ে ফের ফোন করতেন গ্রাহকরা। তখন বলা হত, প্রসেসিং ফি না দিলে ঋণ পাওয়া যাবে না। কারও কারও ক্ষেত্রে সেই প্রসেসিং ফি লক্ষাধিক টাকা। সেই টাকা জমা দিলেই গায়েব হয়ে যেত ফোন নম্বর। ওই নম্বরে ফোন করে আর কাউকে পাওয়া যেত না।
আরও পড়ুন: ‘আমার হাঁফ ছেড়ে বাঁচাতে দিলীপ দা আনন্দ পেয়েছেন’, বাবুলের পোস্টে কিসের খোঁচা?
শতাধিক কর্মী কাজ করতেন এই কল সেন্টারে। ফোনগুলো তাঁদের দিয়েই করানো হত। বীমা বিক্রির নামে অফিস ভাড়া নেওয়া হয়েছিল নিউ টাউনের একটি অফিস কমপ্লেক্সে। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, এক নামী সংস্থা থেকে গ্রাহকদের ডেটাবেস কিনে এই চক্র চালানো হত। voip কলের মাধ্যমে নম্বর বদলে ফোন করা হত। বিভিন্ন ভাষায় কথা বলতে পারতেন কর্মীরা। কথা শুনে কোনোভাবেই সন্দেহ হত না যে এরা ভুয়ো সংস্থার কর্মী। কয়েক’শ মোবাইল ব্যবহার করা হত অফিসে, সিআইডি সেগুলি বাজেয়াপ্ত করেছে। করোনা পরিস্থিতিতে অফিস বন্ধ থাকায় ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’-এ কাজ করছিলেন কর্মীরা। গোয়েন্দাদের অনুমান, শুধু রাজ্যে নয়, ভিনরাজ্যেও ফোন করে প্রতারণার জাল বিছিয়েছিল এই ভুয়ো সংস্থা।