কলকাতা: ‘আমাকে ইস্তফা দিতে বলা হয়েছে।’ মন্ত্রিত্ব ছাড়ার দিন সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রথমে এমনই এক পোস্ট করেছিলেন বাবুল সুপ্রিয়। পরে আবার ‘শুধরে’ নিয়ে বাবুল লেখেন, ‘ইস্তফা দিতে বলা হয়েছিল কথাটা হয়ত এভাবে ব্যবহার করা ঠিক নয়।’ মন্তব্যের পুনরায় ব্যাখ্যা করলেও প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর পোস্টে যে কিছুটা অভিমান মেশানো ছিল, তা ওই দিন স্পষ্ট হয়ে যায়। মাঝে বেশ কয়েকদিন কেটে গিয়েছে। এ বার সরাসরি দিলীপ ঘোষের নাম করে ফেসবুকে পোস্ট করলেন তিনি। না, সরাসরি আক্রমণের সুর নেই, তবে হালকা শ্লেষ মেশানো।
বাবুলের মন্ত্রিত্ব না পাওয়া নিয়ে মন্তব্য করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। আর গতকাল, শুক্রবার দিলীপ ঘোষ বলেন, বাবুল নাকি হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছেন। মুখ্যমন্ত্রী বিভিন্ন সময় যে ভাবে বাবুলকে আক্রমণ করেছেন, সেই রেশ টেনে দিলীপ ঘোষের বক্তব্য ছিল, ‘বাবুল সক্রিয় মন্ত্রী ছিলেন। কিন্তু মন্ত্রী থাকাকালীন তো মুখ্যমন্ত্রী কম গালমন্দ করেননি। এখন হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন বাবুল।’ বিজেপি রাজ্য সভাপতির এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতেই বাবুলের দাবি, ‘দিলীপ দা কি আনন্দ পেয়েছেন!’ দিলীপের বক্তব্য যে বুঝেও তিনি না বুঝতে চাইছেন, সে কথাও উল্লেখ করেছেন বাবুল। বাবুলের বক্তব্য, দিলীপবাবুর এই উক্তি তিনি ‘স্বজ্ঞানে বুঝেও বুঝছেন না।’ সব শেষে লিখেছেন, ‘উনি রাজ্য সভাপতি। সবার শ্রদ্ধার পাত্র।’ রাজনৈতিক মহলের প্রশ্ন, তবে কি বিজেপির অন্তর্দ্বন্দ্ব আরও প্রকট হচ্ছে?
এর আগে মন্ত্রিত্ব চলে যাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ না করলেও কিছুটা কৌশলী হয়ে বাবুল লিখেছিলেন, ‘দুর্নীতির দাগ না নিয়েই মন্ত্রিত্ব ছাড়ছি।’ অর্থাৎ দুর্নীতির দাগ ছাড়াই যে মন্ত্রিসভার বাইরে যেতে হচ্ছে, সেটা বুঝিয়ে দেন বাবুল। শুধু বাবুল নয়, বিজেপির আর এক সাংসদ সৌমিত্র খাঁও মন্ত্রিত্ব না পাওয়ায় ফেসবুকে সরব হন। তাঁর বক্তব্যে একেবারে স্পষ্ট হয়ে যায় রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে তাঁর দ্বন্দ্ব। আর এ বার বাবুল।
আরও পড়ুন: টিকাকরণের দৌড়ে লক্ষ্যমাত্রার ধারেকাছেও নেই বাংলা, সবথেকে এগিয়ে ও পিছিয়ে কোন রাজ্যগুলি জানেন?
দিলীপ ঘোষ অবশ্য এই ধরনের সোশ্যাল মিডিয়ার পোস্টকে একেবারেই আমল দিতে রাজি নন। বিজেপি তে যে এই ধরনের পোস্টকে গুরুত্ব দেওয়া হয় না, সে কথা আগেই জানিয়েছিলেন তিনি। আজ সকালে বাবুলের পোস্ট নিয়ে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘আমি দলের পক্ষ থেকে সব পরিষ্কার করে বলে দিয়েছি। যাদের বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে, সমস্যা হচ্ছে, তাদের কিছু গন্ডগোল আছে।’ অন্যদিকে বিজেপি সূত্রে খবর, প্রকাশ্যে এ ভাবে রাজ্য সভাপতিকে ব্যঙ্গ করায় শোকজও করা হতে পারে বাবুল সুপ্রিয়কে।